Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর ৯৪% কাজ শেষ, উদ্বোধন ডিসেম্বরে

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি : 

টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন দেশের দীর্ঘতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৬ শতাংশ কাজ শেষ হলেই ডিসেম্বরে উদ্বোধন করা হবে রেলসেতুটি। চালু হওয়ার পর রেলসেতু দিয়ে বিরতিহীনভাবে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে সেতু পারাপার হতে পারবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন এই সেতুর সবকটি স্প্যান বসানো হয়েছে। সেতুটির টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর অংশের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে এবং সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তেও পুরোপুরি কাজ শেষের দিকে। এছাড়া সেতুপূর্ব ও পশ্চিম স্টেশন আধুনিকায়নের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, প্রায় ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে সেতুর পশ্চিমপাড়ের স্টেশন ও প্ল্যাটফর্মের কিছু কাজ রয়েছে, সেগুলো কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া সেতুর ওপরে পশ্চিমপাড়ের অংশে কিছু লেভেলিং অ্যালাইমিং ও ট্র্যাক বসানোর কাজ রয়েছে। কাজগুলো শেষে টেস্টিং করার পর কমিশনিংসহ ট্রেন চালুর কিছু নিয়ম শেষ করে ডিসেম্বরের দিকে সেতু উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, নির্মাণাধীন সেতু দিয়ে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেনও চলাচলের উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের ১ বছর) সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নেওয়া প্রকল্প চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নসহ রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেশের বৃহত্তর এ রেল সেতু নির্মাণে ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। প্রথম দফা ডিপিপি সংশোধনের পর সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে দেশীয় অর্থায়ন ২৭.৬০ শতাংশ। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। যা প্রকল্পের ৭২.৪০ শতাংশ।

সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ও ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার রেলসেতুর দুই পাশে ০.০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পে রেলপথের পাশাপাশি গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।

১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাচুর্য়ালি সেতুটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেল সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর ৯৪% কাজ শেষ, উদ্বোধন ডিসেম্বরে

প্রকাশের সময় : ১০:০৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি : 

টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন দেশের দীর্ঘতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৬ শতাংশ কাজ শেষ হলেই ডিসেম্বরে উদ্বোধন করা হবে রেলসেতুটি। চালু হওয়ার পর রেলসেতু দিয়ে বিরতিহীনভাবে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে সেতু পারাপার হতে পারবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন এই সেতুর সবকটি স্প্যান বসানো হয়েছে। সেতুটির টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর অংশের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে এবং সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তেও পুরোপুরি কাজ শেষের দিকে। এছাড়া সেতুপূর্ব ও পশ্চিম স্টেশন আধুনিকায়নের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, প্রায় ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে সেতুর পশ্চিমপাড়ের স্টেশন ও প্ল্যাটফর্মের কিছু কাজ রয়েছে, সেগুলো কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া সেতুর ওপরে পশ্চিমপাড়ের অংশে কিছু লেভেলিং অ্যালাইমিং ও ট্র্যাক বসানোর কাজ রয়েছে। কাজগুলো শেষে টেস্টিং করার পর কমিশনিংসহ ট্রেন চালুর কিছু নিয়ম শেষ করে ডিসেম্বরের দিকে সেতু উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, নির্মাণাধীন সেতু দিয়ে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেনও চলাচলের উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের ১ বছর) সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নেওয়া প্রকল্প চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নসহ রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেশের বৃহত্তর এ রেল সেতু নির্মাণে ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। প্রথম দফা ডিপিপি সংশোধনের পর সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে দেশীয় অর্থায়ন ২৭.৬০ শতাংশ। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। যা প্রকল্পের ৭২.৪০ শতাংশ।

সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ও ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার রেলসেতুর দুই পাশে ০.০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পে রেলপথের পাশাপাশি গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।

১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাচুর্য়ালি সেতুটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেল সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।