চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
উদ্বোধনের একদিন পরেই বঙ্গবন্ধু টানেলে বেপরোয়া গতিতে কার রেসিংয়ের ঘটনায় সাত গাড়িচালককে শনাক্ত করে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত প্রাইভেটকারের সাত চালককে খুঁজছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বন্দর জোনের পুলিশ উপ-কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা।
এর আগে বুধবার (১ নভেম্বর) রাতে সিএমপির কর্ণফুলী থানায় সাতটি কার চিহ্নিত করে মামলাটি দায়ের করেন বঙ্গবন্ধু টানেল কর্তৃপক্ষের সহকারী ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলম। মূলত গত ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দিন রাতেই বেপরোয়া গতিতে কার রেসিংয়ের ঘটনা ঘটে।
বন্দর জোনের ডিসি শাকিলা সোলতানা বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেলে বেপরোয়া গতিতে কার রেসিংয়ের ঘটনায় একটি অভিযোগ দিয়েছিল টানেল কর্তৃপক্ষ। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল রাতে মামলা দায়ের হয়েছে। গাড়িগুলোর নম্বর প্লেট দেখে সড়ক পরিবহন আইনে মামলাটি দায়ের হয়। সেই গাড়ির চালক কারা ছিলেন, সেটা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা সাত প্রাইভেটকারগুলো হচ্ছে, চট্টমেট্রো-গ-১২-৯০৪৩, চট্টমেট্রো-ঘ-১১-৫৭০২, ঢাকামেট্রো-খ-১১-৮৯৩৫, ঢাকামেট্রো-খ-১২-১৮১৪, চট্টমেট্রো-গ-১৩-৩৫৭৩, চট্টমেট্রো-গ-১৪-২২৫৪ ও ঢাকামেট্রো-ভ-১১-০২১৭। মামলায় আরও দুই থেকে তিনটি প্রাইভেট কারের চালকসহ তাদের সহযোগীদের আসামি করা হয়েছে। এ কারগুলোর নম্বর শনাক্ত করতে পারেনি সেতু কর্তৃপক্ষ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বঙ্গবন্ধু টানেলে মোটরযানের সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে সেতু কর্তৃপক্ষ। টানেলের প্রবেশ মুখ থেকে শুরু করে ভেতরসহ বিভিন্ন দৃশ্যমান স্থানে গতিসীমা সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়। কিন্তু ২৯ অক্টোবর রাত অনুমান ১১টায় টানেলের আনোয়ারা প্রান্তের ক্রসিং এলাকায় ৭ থেকে ১০টি প্রাইভেটকার নিয়ে অজ্ঞাতনামা চালক এবং তাদের সহযোগী পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন স্থানে টানেল কর্তৃপক্ষের সাঁটানো সাইনবোর্ডের সর্বোচ্চ গতিসীমা লঙ্ঘন করে।
টানেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টানেলে মোটরযানের গতিসীমা সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়। এ বিষয়ে টানেলের প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন অংশে ‘গতিসীমা সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার’ নির্দেশনাযুক্ত সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়। কিন্তু গত ২৯ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে টোল দিয়ে টানেলে প্রবেশের পর ১০ থেকে ১১টি গাড়ি সর্বোচ্চ গতিসীমা লঙ্ঘন করে এবং গাড়িগুলো বিপদজনকভাবে রেসিংয়ে মেতে ওঠে। পরে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ জহির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেলের মধ্যে কার রেসিং করে বিপজ্জনকভাবে গাড়ি চালনার অভিযোগে অজ্ঞাতনামা আসামিদের সড়ক পরিবহন আইনে মামলা করেছে টানেল কর্তৃপক্ষ। মামলায় সাতটি প্রাইভেটকারের নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে। এখন এসব কারের চালকদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি।