Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন ও নামফলক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪৩ মিনিটে বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলটি উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর দোয়া করেন তিনি। উদ্বোধন শেষে গাড়ি বহর নিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে টানেল উদ্বোধন করতে সকাল ১১টার দিকে চট্টগ্রামে পৌঁছান সরকারপ্রধান।

এরপর টানেল দিয়ে কর্ণফুলী উপজেলার কেইপিজেড মাঠে গিয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী।

দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম সুড়ঙ্গপথ এই টানেল। এটি চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় কেইপিজেড মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এখন স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন।

টানেল উদ্বোধন শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা জনসভায় যোগ দিতে টানেলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন। জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন সরকারপ্রধান। দুপুর ২টায় জনসভা শেষ করে আবার টানেল হয়ে পতেঙ্গার নেভাল একাডেমি এসে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

টানেল উদ্বোধন ঘিরে কর্ণফুলী নদীর দুই পারে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে আনোয়ারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার মাঠ কানায় কানায় ভরে গেছে। জনসভায় আনোয়ারা, কর্ণফুলী, পটিয়া, বাঁশখালীসহ উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগরের বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন।

বিশাল এই জনসভায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ যোগ দেবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। তিনি বলেন, টানেল উদ্বোধন হলে যোগাযোগের সুবিধা পাবেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ও কক্সবাজার জেলার মানুষ। তাই তাদের মধ্যে বেশি উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর দুই তীর সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেলটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং টানেল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন।

নির্মাণের আগে করা সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, টানেল চালুর পর এর ভেতর দিয়ে বছরে ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করতে পারবে। সে হিসাবে দিনে চলতে পারবে ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি। ২০২৫ সাল নাগাদ টানেল দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলাচল করবে। যার মধ্যে অর্ধেক থাকবে পণ্যবাহী পরিবহন। ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সাল নাগাদ এক লাখ ৬২ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে।

টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ হারে ২০ বছর মেয়াদি এ ঋণ দিয়েছে। চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) টানেল নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল হাসান চৌধুরীসহ আরও অনেকে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১২:১৬:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন ও নামফলক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪৩ মিনিটে বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলটি উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর দোয়া করেন তিনি। উদ্বোধন শেষে গাড়ি বহর নিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে টানেল উদ্বোধন করতে সকাল ১১টার দিকে চট্টগ্রামে পৌঁছান সরকারপ্রধান।

এরপর টানেল দিয়ে কর্ণফুলী উপজেলার কেইপিজেড মাঠে গিয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী।

দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম সুড়ঙ্গপথ এই টানেল। এটি চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় কেইপিজেড মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এখন স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন।

টানেল উদ্বোধন শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা জনসভায় যোগ দিতে টানেলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন। জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন সরকারপ্রধান। দুপুর ২টায় জনসভা শেষ করে আবার টানেল হয়ে পতেঙ্গার নেভাল একাডেমি এসে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

টানেল উদ্বোধন ঘিরে কর্ণফুলী নদীর দুই পারে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে আনোয়ারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার মাঠ কানায় কানায় ভরে গেছে। জনসভায় আনোয়ারা, কর্ণফুলী, পটিয়া, বাঁশখালীসহ উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগরের বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন।

বিশাল এই জনসভায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ যোগ দেবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। তিনি বলেন, টানেল উদ্বোধন হলে যোগাযোগের সুবিধা পাবেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ও কক্সবাজার জেলার মানুষ। তাই তাদের মধ্যে বেশি উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর দুই তীর সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেলটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং টানেল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন।

নির্মাণের আগে করা সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, টানেল চালুর পর এর ভেতর দিয়ে বছরে ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করতে পারবে। সে হিসাবে দিনে চলতে পারবে ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি। ২০২৫ সাল নাগাদ টানেল দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলাচল করবে। যার মধ্যে অর্ধেক থাকবে পণ্যবাহী পরিবহন। ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সাল নাগাদ এক লাখ ৬২ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে।

টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ হারে ২০ বছর মেয়াদি এ ঋণ দিয়েছে। চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) টানেল নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল হাসান চৌধুরীসহ আরও অনেকে।