ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কুশীলবদের চিহ্নিত করা হবে। তাদেরকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। কমিশন গঠন করা হবে। আমরা সেই আইন ড্রাফট করে ফেলেছি। আপনারা হয়তো বলবেন অনেকেই তো মারা গেছেন। তাহলে এখন কেন এটা করা হবে। আমি বলতে চাই, কোনো প্রতিহিংসার কারণে নয়, জাতিকে সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্য এটা আমরা করবো।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রেলওয়ে স্টেশনের সামনে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় পধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুইজন খুনির মধ্যে একজন যুক্তরাষ্ট্রে আর আরেকজন কানাডায় অবস্থান করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে যিনি আছেন, তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে জোর আলোচনা চলছে। তবে কানাডার আইনে আছে- সে দেশে অবস্থানকারী কোনো আসামির অন্য দেশে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ থাকলে তাকে দেশটি থেকে ফেরত পাঠানো হয় না। যতক্ষণ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বাকি খুনিদের দেশে ফেরত এনে বিচারের রায় পরিপূর্ণ কার্যকর না করা যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের ফেরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাব। যতক্ষণ আমরা আছি ততক্ষণ তাদের এ পৃথিবীতে থাকতে দেব না।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা পেলে আইনটি পাস করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা কোনো প্রতিহিংসার জন্য নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করব না, বাঙালি ও নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্যই এ কমিশন গঠন করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। ঘাতকেরা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে ষড়যন্ত্র করার জন্য আজকের দিনটিকে বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।
তিনি বলেন, এ দিনে শুধু বঙ্গবন্ধুকে নয়, তার পরিবারের ১৭ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে হত্যা করা। খুনিরা জানতেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে বাংলাদেশকে হত্যা করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, যারা বাংলাদেশকে চাননি, একাত্তরের সেই পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেন। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বিদেশে না থাকলে তাদের আমরা আজ জীবিত পেতাম না।
আনিসুল হক বলেন, যড়যন্ত্রকারিরা কিন্তু বসে নেই। বিএনপি-জামায়াতেই তারা রয়েছেন। তারা মিথ্যা বলেন। সত্যের কাছ দিয়ে হাঁটেন না। বিএনপি নিজেরা খুন করে অন্যের ওপর দায় চাপায়। তাই ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের।
সোনার বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী। মন্ত্রী রেলপথে ঢাকা থেকে আখাউড়ায় আসেন। পরে সড়কে পথে তিনি কসবায় যান। মন্ত্রী পরে আরও একাধিক আলোচনা সভায় অংশ নেন।