সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
বছরের পর বছর অপেক্ষা ও নানা জটিলতার পর অবশেষে গতি এসেছে বহুল প্রত্যাশিত বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েল গেজ রেলপথ প্রকল্পে। সরকারের পক্ষ থেকে ভূমি অধিগ্রহণে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকার বেশি। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রাজধানীর সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যাতায়াত সময় প্রায় চার ঘণ্টা কমে যাবে, আর দূরত্ব কমবে ১১২ কিলোমিটার। এর ফলে কৃষি ও শিল্পপণ্য পরিবহনসহ যাত্রী চলাচলে গতি আসবে, যা উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে।
ব্রিটিশ আমল থেকেই সিরাজগঞ্জের সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগ থাকলেও বগুড়ার সঙ্গে সরাসরি রেলসংযোগ ছিল না। ফলে যাত্রীদের ঈশ্বরদী-শান্তাহার হয়ে দীর্ঘ পথে যাতায়াত করতে হতো। ২০১৮ সালে অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্পের আওতায় ৮৫ কিলোমিটার নতুন রেলপথ, ৯টি আধুনিক স্টেশন, এবং বগুড়ার রাণীরহাট ও সিরাজগঞ্জ সদরে দুটি জংশন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, তবে সময় ও নির্মাণ খরচ বাড়ার কারণে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকায়। প্রকল্পের মেয়াদও বাড়িয়ে ২০২৬ সাল পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। বগুড়ায় ৫২ কিলোমিটারের জন্য ৫১০ একর এবং সিরাজগঞ্জে ৩২ কিলোমিটারের জন্য ৪২০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
তবে অর্থায়নে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি। ভারতের দ্বিতীয় লাইন অব ক্রেডিট থেকে অর্থ পাওয়ার কথা থাকলেও দেশটি অর্থ না দেওয়ায় এখন বিকল্প অর্থের উৎস খোঁজা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, সিরাজগঞ্জ অংশের জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। ৪২০ একর জমির দাম হিসেবে ১ হাজার ১২৭ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে খুব শিগগিরই ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হবে।
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলের প্রকল্প পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম ফিরোজী জানান, অর্থের সংস্থান নিশ্চিত হলেই দ্রুত দৃশ্যমান অগ্রগতি শুরু হবে।