Dhaka বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়েকে নিয়োগ দিলেন ম্যাক্রোঁ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ফ্রান্সের রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে আগাম নির্বাচন শেষ হওয়ার প্রায় দুই মাস পর প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিলেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বর্ষীয়ান রাজনীতিক মিশেল বার্নিয়েকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এই নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে। ৭৩ বছর বয়সী বার্নিয়ের ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সাবেক ব্রেক্সিট আলোচক। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় তিনি নেতৃত্ব দেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ডানপন্থি রিপাবলিকান পার্টির (এলআর) প্রবীণ রাজনীতিবিদ বার্নিয়ের ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তাকে একটি সরকার গঠন করতে হবে, যা তিনটি বড় রাজনৈতিক জোটে বিভক্ত জাতীয় পরিষদে টিকে থাকতে হবে, যেখানে কোনও দলই স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি।

তিন বছর আগে বার্নিয়ের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে ফরাসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, বিশেষ করে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। তবে তার দল তাকে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করতে ব্যর্থ হয়। ‘মঁস্যু ব্রেক্সিট’ হিসেবে পরিচিত বার্নিয়ের এখন ফ্রান্সের পঞ্চম প্রজাতন্ত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রবীণ প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।

বার্নিয়েরের পূর্বসূরি গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল ছিলেন ফ্রান্সের সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। তাকে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল এবং জুলাই থেকে তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

ম্যাক্রোঁ তার নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ে ৬০ দিন সময় নিয়েছেন, প্যারিস অলিম্পিকের সময় একটি ‘রাজনৈতিক বিরতি’ ঘোষণা করে। গত কয়েক দিনে তিনি সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেন, তবে প্রথম ভোটেই জাতীয় পরিষদে আস্থা হারানোর ঝুঁকি রয়েছে এমন প্রার্থী এড়িয়ে চলার বিষয়টি তাকে জটিল করে তোলে।

এলিসি প্রাসাদ জানিয়েছে, বার্নিয়েরের নিয়োগ একটি নজিরবিহীন পরামর্শ প্রক্রিয়ার পর এসেছে। ম্যাক্রোঁ নিশ্চিত করেছেন, প্রধানমন্ত্রী ও ভবিষ্যৎ সরকার দেশের স্থিতিশীলতা ও বৃহত্তর ঐক্য বজায় রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

যদিও ম্যাক্রোঁর এই সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে বামপন্থি নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি) জোটের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। এনএফপি জুলাইয়ের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও তাদের মনোনীত প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ম্যাক্রোঁর সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন র‌্যাডিকাল বামপন্থি দল ফ্রান্স ইনসুমিজের (এলএফআই) নেতা জ্যঁ-লুক মেলেংশো। তিনি অভিযোগ করেছেন, ফরাসি জনগণের কাছ থেকে নির্বাচন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে, জাতীয় র‌্যালি (আরএন) দলের প্রধান জর্ডান বারডেলা প্রতিক্রিয়ায় বরং সংযত ছিলেন। তিনি বলেছেন, বার্নিয়েরকে তার কাজ ও সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হবে, বিশেষ করে আসন্ন বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে, যা ১ অক্টোবরের মধ্যে জাতীয় পরিষদে পেশ করতে হবে।

বারডেলা উল্লেখ করেছেন, জীবনযাত্রার ব্যয়, নিরাপত্তা ও অভিবাসন ফরাসি জনগণের প্রধান উদ্বেগ। আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়েকে নিয়োগ দিলেন ম্যাক্রোঁ

প্রকাশের সময় : ১০:৩৮:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ফ্রান্সের রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে আগাম নির্বাচন শেষ হওয়ার প্রায় দুই মাস পর প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিলেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বর্ষীয়ান রাজনীতিক মিশেল বার্নিয়েকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এই নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে। ৭৩ বছর বয়সী বার্নিয়ের ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সাবেক ব্রেক্সিট আলোচক। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় তিনি নেতৃত্ব দেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ডানপন্থি রিপাবলিকান পার্টির (এলআর) প্রবীণ রাজনীতিবিদ বার্নিয়ের ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তাকে একটি সরকার গঠন করতে হবে, যা তিনটি বড় রাজনৈতিক জোটে বিভক্ত জাতীয় পরিষদে টিকে থাকতে হবে, যেখানে কোনও দলই স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি।

তিন বছর আগে বার্নিয়ের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে ফরাসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, বিশেষ করে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। তবে তার দল তাকে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করতে ব্যর্থ হয়। ‘মঁস্যু ব্রেক্সিট’ হিসেবে পরিচিত বার্নিয়ের এখন ফ্রান্সের পঞ্চম প্রজাতন্ত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রবীণ প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।

বার্নিয়েরের পূর্বসূরি গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল ছিলেন ফ্রান্সের সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। তাকে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল এবং জুলাই থেকে তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

ম্যাক্রোঁ তার নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ে ৬০ দিন সময় নিয়েছেন, প্যারিস অলিম্পিকের সময় একটি ‘রাজনৈতিক বিরতি’ ঘোষণা করে। গত কয়েক দিনে তিনি সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেন, তবে প্রথম ভোটেই জাতীয় পরিষদে আস্থা হারানোর ঝুঁকি রয়েছে এমন প্রার্থী এড়িয়ে চলার বিষয়টি তাকে জটিল করে তোলে।

এলিসি প্রাসাদ জানিয়েছে, বার্নিয়েরের নিয়োগ একটি নজিরবিহীন পরামর্শ প্রক্রিয়ার পর এসেছে। ম্যাক্রোঁ নিশ্চিত করেছেন, প্রধানমন্ত্রী ও ভবিষ্যৎ সরকার দেশের স্থিতিশীলতা ও বৃহত্তর ঐক্য বজায় রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

যদিও ম্যাক্রোঁর এই সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে বামপন্থি নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি) জোটের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। এনএফপি জুলাইয়ের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও তাদের মনোনীত প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ম্যাক্রোঁর সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন র‌্যাডিকাল বামপন্থি দল ফ্রান্স ইনসুমিজের (এলএফআই) নেতা জ্যঁ-লুক মেলেংশো। তিনি অভিযোগ করেছেন, ফরাসি জনগণের কাছ থেকে নির্বাচন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে, জাতীয় র‌্যালি (আরএন) দলের প্রধান জর্ডান বারডেলা প্রতিক্রিয়ায় বরং সংযত ছিলেন। তিনি বলেছেন, বার্নিয়েরকে তার কাজ ও সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হবে, বিশেষ করে আসন্ন বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে, যা ১ অক্টোবরের মধ্যে জাতীয় পরিষদে পেশ করতে হবে।

বারডেলা উল্লেখ করেছেন, জীবনযাত্রার ব্যয়, নিরাপত্তা ও অভিবাসন ফরাসি জনগণের প্রধান উদ্বেগ। আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।