Dhaka বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেরারি আসামিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না : ইসি সানাউল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আদালত কর্তৃক ঘোষিত ফেরারি আসামিরা কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, ইসির প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয় ভোটিং করে পরে তা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হবে। উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হলে এরপর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইনে সংশোধনী যুক্ত হবে।

ফেরারি আসামিদের নির্বাচনে অযোগ্য করার বিধান সংযোজনের সুপারিশ করেছিল নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। তবে তখন এই প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছিল ইসি। তারা বলেছিল, এমন বিধান অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে, এটি নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, আগে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত ছিল। মাঝখানে এটা সংশোধন করে বিধান করা হয়েছিল যে ভোট শুরুর আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি দেখবেন, তারা রিপোর্ট দিলে ভোট শুরু করতেন। আমরা এটাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে গেছি। এতে কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার হবেন সর্বেসর্বা।

ইসি সানাউল্লাহ বলেন, মিডিয়াকর্মীসহ অন্যরা কতক্ষণ ভোটকক্ষের ভেতরে থাকবেন তা নির্ধারণের ক্ষমতা আমরা প্রিজাইডিং অফিসারকে দিয়েছি।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রার্থী ভোটার প্রতি সর্বোচ্চ ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। অথবা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার মধ্যে যেটা সবচেয়ে বেশি হবে, সেটা ব্যয় করতে পারবেন।

তিনি বলেন, যেকোনো ফৌজদারি মামলার ফেরারি আসামি ভোটে অংশ নিতে পারবেন না। যদি এটি নিয়ে কোনো ধরনের মিস ইউজ হয় তবে পুনরায় ভেবে দেখা হবে। কিন্তু অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে না।

‘প্রার্থী বা তার প্রস্তাবকারী/সমর্থনকারীকে সশরীরে রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে’- যোগ করেন এ নির্বাচন কমিশনার।

এমন বিধান যুক্ত করাসহ একগুচ্ছ সংশোধনী এনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ চূড়ান্ত করতে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠিয়েছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‎গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তালিকায় সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রিসাইডিং অফিসারকে সব ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, কেন্দ্র বন্ধ বা চালু রাখার। এছাড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ভোটকেন্দ্র স্থাপন করবেন। আর এবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধান আরপিও থেকে বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচনের প্রতীক বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তাদের প্রতীকও স্থগিত থাকবে। তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্র দাঁড়াতে পারবে কিনা সেটা সময় বলে দেবে। অন্যদিকে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলেও, নিজ নিজ দলের প্রার্থীরা তাদের দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন।

মিথ্যা তথ্য দিলে নির্বাচিত হয়েও সংসদ সদস্য পদ হারাতে হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, হলফনামায় তথ্য গোপন বা মিথ্যা তথ্য দিলে ইসি পরে ব্যবস্থা নিতে পারবে, দোষ প্রমাণ হলে সেই ব্যক্তি সংসদ সদস্য পদও হারাবেন।

নির্বাচনে অংশ নেয়ার যোগ্যতা বিষয়ে তিনি আরো বলেন, আদালত কর্তৃক যারা ফেরারি ঘোষিত হবেন তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এছাড়া লাভজনক পদ যারা আছেন, যারা সরকারি ৫০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার আছে এমন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তারাও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

ইভিএম এবং ভোটের জামানত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ বলেন, এবার ইভিএম সংক্রান্ত সকল বিধান বাতিল করা হয়েছে। পোস্টাল ব্যালট হবে প্রতীকের ব্যালট। আর জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে সেই আসনের ব্যালটে ‘না’ ভোট থাকবে বলেও জানান তিনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করেন হাসিনা ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীদের অভিযোগ

ফেরারি আসামিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না : ইসি সানাউল্লাহ

প্রকাশের সময় : ০৪:১৬:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আদালত কর্তৃক ঘোষিত ফেরারি আসামিরা কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, ইসির প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয় ভোটিং করে পরে তা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হবে। উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হলে এরপর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইনে সংশোধনী যুক্ত হবে।

ফেরারি আসামিদের নির্বাচনে অযোগ্য করার বিধান সংযোজনের সুপারিশ করেছিল নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। তবে তখন এই প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছিল ইসি। তারা বলেছিল, এমন বিধান অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে, এটি নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, আগে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত ছিল। মাঝখানে এটা সংশোধন করে বিধান করা হয়েছিল যে ভোট শুরুর আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি দেখবেন, তারা রিপোর্ট দিলে ভোট শুরু করতেন। আমরা এটাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে গেছি। এতে কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার হবেন সর্বেসর্বা।

ইসি সানাউল্লাহ বলেন, মিডিয়াকর্মীসহ অন্যরা কতক্ষণ ভোটকক্ষের ভেতরে থাকবেন তা নির্ধারণের ক্ষমতা আমরা প্রিজাইডিং অফিসারকে দিয়েছি।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রার্থী ভোটার প্রতি সর্বোচ্চ ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। অথবা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার মধ্যে যেটা সবচেয়ে বেশি হবে, সেটা ব্যয় করতে পারবেন।

তিনি বলেন, যেকোনো ফৌজদারি মামলার ফেরারি আসামি ভোটে অংশ নিতে পারবেন না। যদি এটি নিয়ে কোনো ধরনের মিস ইউজ হয় তবে পুনরায় ভেবে দেখা হবে। কিন্তু অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে না।

‘প্রার্থী বা তার প্রস্তাবকারী/সমর্থনকারীকে সশরীরে রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে’- যোগ করেন এ নির্বাচন কমিশনার।

এমন বিধান যুক্ত করাসহ একগুচ্ছ সংশোধনী এনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ চূড়ান্ত করতে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠিয়েছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‎গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তালিকায় সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রিসাইডিং অফিসারকে সব ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, কেন্দ্র বন্ধ বা চালু রাখার। এছাড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ভোটকেন্দ্র স্থাপন করবেন। আর এবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধান আরপিও থেকে বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচনের প্রতীক বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তাদের প্রতীকও স্থগিত থাকবে। তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্র দাঁড়াতে পারবে কিনা সেটা সময় বলে দেবে। অন্যদিকে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলেও, নিজ নিজ দলের প্রার্থীরা তাদের দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন।

মিথ্যা তথ্য দিলে নির্বাচিত হয়েও সংসদ সদস্য পদ হারাতে হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, হলফনামায় তথ্য গোপন বা মিথ্যা তথ্য দিলে ইসি পরে ব্যবস্থা নিতে পারবে, দোষ প্রমাণ হলে সেই ব্যক্তি সংসদ সদস্য পদও হারাবেন।

নির্বাচনে অংশ নেয়ার যোগ্যতা বিষয়ে তিনি আরো বলেন, আদালত কর্তৃক যারা ফেরারি ঘোষিত হবেন তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এছাড়া লাভজনক পদ যারা আছেন, যারা সরকারি ৫০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার আছে এমন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তারাও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

ইভিএম এবং ভোটের জামানত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ বলেন, এবার ইভিএম সংক্রান্ত সকল বিধান বাতিল করা হয়েছে। পোস্টাল ব্যালট হবে প্রতীকের ব্যালট। আর জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে সেই আসনের ব্যালটে ‘না’ ভোট থাকবে বলেও জানান তিনি।