রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা আসবে বলে জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি ২০০ থানা কমিটি করেছে। জানুয়ারির মধ্যে চার শতাধিক থানা কমিটি হয়ে যাবে। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারা দেশে কাজ করছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে দল ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুরের কারমাইকেল কলেজে কাউনিয়া ও পীরগাছায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মধ্যমপন্থি রাজনৈতিক চর্চা থেকে এই দলের আবির্ভাব হবে। তবে এখনও রাজনীতিক দলের নাম ঠিক হয়নি। কিন্তু বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ১০০-এর বেশি নাম প্রস্তাব এসেছে। সে নামগুলো থেকে একটি চূড়ান্ত করে নতুন দলের নামকরণ করা হবে।
আগামী নির্বাচনে অনেকেই আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসার একটা পাঁয়তারা করছে উল্লেখ করে নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব বলেন, এটা স্পস্টত যে দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় এ ধরনের কথা বলা সম্ভব। দিল্লির মদতেই হয়তো এ ধরনের কথাগুলো বলা হচ্ছে যে আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসতে হবে। আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। যারাই আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়াবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক এই সমাজকল্যাণ সম্পাদক বলেন, দেশের মানুষ জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আন্দোলনে এসেছে। এর মাধ্যমে তাঁরা বাংলাদেশকে নতুন রূপে গড়তে চেয়েছে। মানুষ একটা নতুন সংবিধান প্রত্যাশা করে। সেই জায়গা থেকে সংবিধান তৈরির ম্যান্ডেন্ট গণপরিষদের থাকে। একটি গণপরিষদ নির্বাচন যাতে হয়, সেই কারণেই তাঁরা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, বাংলোদেশের সামনে যে নির্বাচন আসতেছে, সেটা একটা গণপরিষদ নির্বাচন হবে।
জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন অনেকগুলো কাজ করেছে। তারপরেও তারা সবার কাছে পৌঁছাতে পারেনি। সেখানে কিছু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে বললে আমরা শুনেছি। জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন যেন আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে বেরিয়ে এসে শহীদ পরিবার ও আহতদের কাছে তাদের ন্যায্য পাওনা পৌঁছে দেবে। জুলাই অভ্যুত্থানের পাঁচ মাস পরেও শহীদ পরিবার ও আহতদের এখন পর্যন্ত পুরোপুরি পুনর্বাসনের আওতায় আনতে পারেনি। এই ব্যর্থতার জায়গা থেকে সরকার যেন শহীদদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা করে। এ ছাড়া আহতদের ঘরে ঘরে গিয়ে চিকিৎসার খরচ পৌঁছে দেওয়া ও হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন আছে তাদের প্রয়োজনে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
আখতার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ছাড়া যে কোনো দল বিএনপি ও বাম দলগুলোর প্রতি রাজনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রেখেছে। কারো প্রতি কোনো জুলুম নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা লক্ষ্য করিনি। ছাত্রদের মধ্য থেকে সরকারের তিনজন প্রতিনিধি আছেন তারা তাদের কাজগুলো করছেন।
এর আগে দুপুরে আখতার হোসেন রংপুরের কাউনিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির রংপুরের সংগঠক আলমগীর নয়ন, এম আলমগীর কবির, শেখ রেজওয়ান, এম আই সুমন, খন্দকার ময়নুল হক, রিফাত হাসান প্রমুখ।