নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, যেসব কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ আমলে বিগত নির্বাচনে রাষ্ট্রের দায়িত্বে ছিলেন তাদের আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে দায়িত্বে রাখা যাবে না।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা: অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনই আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স কাউন্সিলের (বিসিআরসি) উদ্যোগে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
ফারুক বলেন, যারা বিশ্বাস করতেন এই সরকার নির্বাচন দেবে না, গণভোট ও পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন হবে না, তাদের কথা ভুল প্রমাণ করে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন। অন্তর্বর্তী সরকার রমজানের আগে যেন সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে জনপ্রতিনিধির হাতে দেশের ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন সেই প্রত্যাশা করি।
তিনি বলেন, এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও নির্বাচন না হওয়ায় দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে। আওয়ামী লীগ আবার ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নিয়েছে। তাই আর বিলম্ব নয়, নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার আহ্বান জানাই।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বলেন, যদি আগামীতে ড. ইউনূস শাহাবুদ্দিনের আমলের চেয়েও ভালোভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারেন, তবে সেই ব্যর্থতা ড. ইউনূসের ওপরই আসবে।
নির্বাচনে অতীতের কলঙ্কিত কর্মকর্তাদের বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়ে জয়নুল আবেদিন ফারুক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার লটারির মাধ্যমে এসপি এবং ওসি বদলির প্রস্তাবের সমালোচনা করে বলেন, যারা ১৪, ১৮ এবং ২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ছিলেন, সেইসব পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম যেন লটারিতে না থাকে।
তিনি বলেন, যাদের কারণে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, কলঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, সেইসব অফিসাররা যেন আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো দায়িত্ব না পান।
বক্তব্যে ফারুক তার ব্যক্তিগত জীবনের এক স্মৃতি তুলে ধরেন বলেন, ২০০৮ সালে কারাগারে থাকাকালীন তার মা মারা যান, কিন্তু প্যারোলে মুক্তি না পাওয়ায় তিনি তার মায়ের মুখ শেষবারের মতো দেখতে পারেননি। তিনি তার প্রয়াত বন্ধু শাহজাহান সিরাজের একটি উক্তি স্মরণ করে বলেন, রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে অনেক কিছু হারাতে হয় এবং সবকিছু ভুলে যেতে হয়।
রাজনীতি ব্যক্তিগত সম্পদ নয়, জনগণের এমন মন্তব্য করে জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেন, বাংলাদেশের সৎ রাজনীতির প্রচলন করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া হচ্ছেন আপসহীন নেতৃত্ব।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যদি তিনি দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস না করতেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট না করতেন এবং বেগম জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা না দিতেন, তবে হয়তো আজ তাকে পালিয়ে যেতে হতো না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স কাউন্সিলের সভাপতি আলী আশরাফ আখন্দ এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব।