Dhaka শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি ক্ষমতার যাওয়ার জন্য অস্থির নয়। জনগণের মালিকানা তাদের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হলে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১২টি মৌলিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। বাকীগুলো ঐকমত্যের দিকে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, তা বাদ দিয়ে শুধু মৌলিক বিষয়গুলোই সংস্কার করা উচিত।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রে কাঁদা ছোড়াছুড়ি হলেও সেখানে সীমা থাকা উচিত। এমনটা না হলে ভবিষ্যতে তিক্ততা তৈরি হবে। এ সময় শহীদদের আত্মত্যাগের কথা মনে রেখে সবাইকে দেশ গঠনে ঐকবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব প্রশ্ন রেখে বলেন, রাষ্ট্র কী, রাষ্ট্র কার জন্য? একবছরেও হত্যাকারীদের খুঁজে বের করলেন না, একবছরে হতাহতদের তালিকা তৈরি করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পারলেন না কেনো?

মির্জা ফখরুল বলেন, এগুলো বললে সরকারের লোকেরা বলে আক্রমণ করছি তাদের। আক্রমণ তখনই করি যখন আপনারা ব্যর্থ হন।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ম্যাজিকাল দেশ তৈরি করতে চায় সরকার, কিন্তু তা জনগণের মধ্য থেকে আসুক। কিন্তু সরকারের মধ্যে তা দেখতে পাচ্ছি না। ৭ আগস্ট সমাবেশ থেকে তিনমাসের মধ্যে নির্বাচনে চেয়েছিলাম, তখন সমালোচনা করা হয়েছিলো বিএনপি ক্ষমতায় যেতে চায়। কিন্তু তা না এখন তা প্রমাণ হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তবে হতাশ হবেন না, নিরাশ হবেন না। জনগণের দেশ, গণতান্ত্রিক দেশ গড়া সম্ভব হবে আশাবাদ রাখি। রাজনীতিকদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার সময় এখন, তাহলে জনগণ সুফল পাবে।

তিনি বলেন, এতো সমস্যার মধ্যেও ১২টাতে ঐকমত্য হয়েছে। বাকিগুলোও আশাবাদী। মৌলিক সংস্কার করে লন্ডন বৈঠকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে দ্বিধা কেটে যাবে।
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া না হলে তিক্ততা তৈরি হবে৷ লিমিট থাকা উচিৎ সবার কথা বলার সময়।

অভ্যুত্থান নিয়ে তিনি বলেন, একজন শিশুর মাথার খুলি উড়ে গেছে গুলিতে। আর্টিফিশিয়ালভাবে খুলি লাগানো হয়েছে। এর চেয়ে বড় ত্যাগ কি হতে পারে? গণতন্ত্রের জন্যে যে মূল্য দিতে হয়েছে তা যদি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে না পারি তবে শিশুদের ও দেশের মানুষের সাথে একটা প্রতারণা করা হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের পর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার একটা নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমি মনেপ্রাণে গণতন্ত্র বিশ্বাস করি। বিপ্লব যারা করবেন তারা বিপ্লবী দল করবেন বিপ্লবী সংগঠন করবেন এবং বিপ্লব করে বিপ্লবী সরকার গঠন করে তারা দেশে বিপ্লবকে সফল করবেন বলেও মনে করি।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকারে যাবো। জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ কাজগুলো করার চেষ্টা করবো। তারপর আবার জনগণের কাছে ফিরে যাব, যদি তারা আমাকে গ্রহণ করেন আমি আসবো না হলে আসবো না। সবাইকে মতামতকে প্রকাশ করার সুযোগ দিতে হবে, সবাইকেই তার কথা বলার সুযোগ দিতে হবে, একজন সাধারণ মানুষ যেমন তার নায্যবিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে, সমাজে মর্যাদা নিয়ে তার প্রতিষ্ঠারও সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আজকে শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই লিবারেল ডেমোক্রেসি একটু একটু করে নিচে নেমে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনমানসিকতা সবকিছু বদলায়। সে বদলানোর ফলে দেখা যায় যে চলমান রাজনৈতিক কাঠামো পরিবর্তন ছাড়া রাজনীতিকে ধরে রাখা কঠিন। সম্প্রতি আমি বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে চীনে গিয়েছিলাম। যতবার চীনে যাই দেখি চীনের ভিন্ন চেহারা। চীন প্রতিদিন বদলাচ্ছে। আর তাদের সিস্টেমটা তো ভিন্ন। আমাদের সিস্টেম ভিন্ন। আবার দেখুন আমেরিকার রাজনৈতিক কাঠামো আর আমাদের কাঠামো কিন্তু এক নয়।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমরা প্রকৃতপক্ষে গোলামি থেকে মুক্তি পেয়েছি। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ গোলামি থেকে। তারপরে পাকিস্তানি গোলামি শুরু হয়েছে। তারপরে আবার বাংলাদেশে প্রভুদের গোলামি শুরু হয়েছে। এই গোলামিতেই আছি আমরা। গোলামদের কিন্তু একটা সংকীর্ণ মন তৈরি হয়। কিছুতেই খুব বেশি বড় করে দেখার সুযোগ হয় না। আমি মনে করি, আমাদের বড় করে দেখার চেষ্টা করা উচিত। আমরা একটা মুক্ত সমাজ চাই। আমরা একটা মুক্ত রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই।

এসময় গত এক বছরেও গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের তালিকা তৈরি করতে না পারায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছেন তারা এক বছরেও কি এদের খুঁজে পেলেন না? যারা এই দেশকে পরিবর্তনের জন্য প্রাণ দিল রক্ত দিল তাদের জন্য একটা তালিকা তৈরি করে সঠিকভাবে তাদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করতে পারলেন না!

তিনি দ্রুত একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটা নির্বাচিত সরকারের কাছে রাষ্ট্রের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান। গণঅভ্যুত্থানে আহত সাভারের এক শিশুর কৃত্রিম মাথা লাগানোর বিষয়টি উল্লেখ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কালকে ৭ বছরে একটি শিশু এসে হঠাৎ করে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। শিশুটি বলেছে আমার মাথায় খুলিটা নেই, খুলিটা প্লাস্টিকের। প্লাস্টিক দিয়ে আর্টিফিশিয়াল খুলি তৈরি করে লাগিয়ে দিয়েছে। এর চেয়ে বড় ত্যাগ আর কী হতে পারে? আমরা যদি সঠিকভাবে দাঁড়াতে না পারি তাহলে ওই শিশুদের সঙ্গে আমাদের বোন-মায়েদের সঙ্গে নিঃসন্দেহে একটা বড় প্রতারণা করবো।

বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও জুলাই গনঅভ্যুত্থানে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হওয়ায় মানবজমিন প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমান, সংগ্রাম এর সাবেক সম্পাদক আবুল আসাদকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

এদের মধ্যে মতিউর রহমান ও মাহমুদুর রহমানের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ ও সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়াসহ কমিটির সদস্যরা। বাকিরা বিদেশে এবং অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগান্তর সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদারসহ আরও অনেকে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দেশে যেন উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে না পারে : তারেক রহমান

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০২:৩১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি ক্ষমতার যাওয়ার জন্য অস্থির নয়। জনগণের মালিকানা তাদের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হলে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১২টি মৌলিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। বাকীগুলো ঐকমত্যের দিকে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, তা বাদ দিয়ে শুধু মৌলিক বিষয়গুলোই সংস্কার করা উচিত।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রে কাঁদা ছোড়াছুড়ি হলেও সেখানে সীমা থাকা উচিত। এমনটা না হলে ভবিষ্যতে তিক্ততা তৈরি হবে। এ সময় শহীদদের আত্মত্যাগের কথা মনে রেখে সবাইকে দেশ গঠনে ঐকবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব প্রশ্ন রেখে বলেন, রাষ্ট্র কী, রাষ্ট্র কার জন্য? একবছরেও হত্যাকারীদের খুঁজে বের করলেন না, একবছরে হতাহতদের তালিকা তৈরি করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পারলেন না কেনো?

মির্জা ফখরুল বলেন, এগুলো বললে সরকারের লোকেরা বলে আক্রমণ করছি তাদের। আক্রমণ তখনই করি যখন আপনারা ব্যর্থ হন।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ম্যাজিকাল দেশ তৈরি করতে চায় সরকার, কিন্তু তা জনগণের মধ্য থেকে আসুক। কিন্তু সরকারের মধ্যে তা দেখতে পাচ্ছি না। ৭ আগস্ট সমাবেশ থেকে তিনমাসের মধ্যে নির্বাচনে চেয়েছিলাম, তখন সমালোচনা করা হয়েছিলো বিএনপি ক্ষমতায় যেতে চায়। কিন্তু তা না এখন তা প্রমাণ হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তবে হতাশ হবেন না, নিরাশ হবেন না। জনগণের দেশ, গণতান্ত্রিক দেশ গড়া সম্ভব হবে আশাবাদ রাখি। রাজনীতিকদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার সময় এখন, তাহলে জনগণ সুফল পাবে।

তিনি বলেন, এতো সমস্যার মধ্যেও ১২টাতে ঐকমত্য হয়েছে। বাকিগুলোও আশাবাদী। মৌলিক সংস্কার করে লন্ডন বৈঠকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে দ্বিধা কেটে যাবে।
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া না হলে তিক্ততা তৈরি হবে৷ লিমিট থাকা উচিৎ সবার কথা বলার সময়।

অভ্যুত্থান নিয়ে তিনি বলেন, একজন শিশুর মাথার খুলি উড়ে গেছে গুলিতে। আর্টিফিশিয়ালভাবে খুলি লাগানো হয়েছে। এর চেয়ে বড় ত্যাগ কি হতে পারে? গণতন্ত্রের জন্যে যে মূল্য দিতে হয়েছে তা যদি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে না পারি তবে শিশুদের ও দেশের মানুষের সাথে একটা প্রতারণা করা হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের পর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার একটা নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমি মনেপ্রাণে গণতন্ত্র বিশ্বাস করি। বিপ্লব যারা করবেন তারা বিপ্লবী দল করবেন বিপ্লবী সংগঠন করবেন এবং বিপ্লব করে বিপ্লবী সরকার গঠন করে তারা দেশে বিপ্লবকে সফল করবেন বলেও মনে করি।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকারে যাবো। জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ কাজগুলো করার চেষ্টা করবো। তারপর আবার জনগণের কাছে ফিরে যাব, যদি তারা আমাকে গ্রহণ করেন আমি আসবো না হলে আসবো না। সবাইকে মতামতকে প্রকাশ করার সুযোগ দিতে হবে, সবাইকেই তার কথা বলার সুযোগ দিতে হবে, একজন সাধারণ মানুষ যেমন তার নায্যবিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে, সমাজে মর্যাদা নিয়ে তার প্রতিষ্ঠারও সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আজকে শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই লিবারেল ডেমোক্রেসি একটু একটু করে নিচে নেমে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনমানসিকতা সবকিছু বদলায়। সে বদলানোর ফলে দেখা যায় যে চলমান রাজনৈতিক কাঠামো পরিবর্তন ছাড়া রাজনীতিকে ধরে রাখা কঠিন। সম্প্রতি আমি বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে চীনে গিয়েছিলাম। যতবার চীনে যাই দেখি চীনের ভিন্ন চেহারা। চীন প্রতিদিন বদলাচ্ছে। আর তাদের সিস্টেমটা তো ভিন্ন। আমাদের সিস্টেম ভিন্ন। আবার দেখুন আমেরিকার রাজনৈতিক কাঠামো আর আমাদের কাঠামো কিন্তু এক নয়।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমরা প্রকৃতপক্ষে গোলামি থেকে মুক্তি পেয়েছি। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ গোলামি থেকে। তারপরে পাকিস্তানি গোলামি শুরু হয়েছে। তারপরে আবার বাংলাদেশে প্রভুদের গোলামি শুরু হয়েছে। এই গোলামিতেই আছি আমরা। গোলামদের কিন্তু একটা সংকীর্ণ মন তৈরি হয়। কিছুতেই খুব বেশি বড় করে দেখার সুযোগ হয় না। আমি মনে করি, আমাদের বড় করে দেখার চেষ্টা করা উচিত। আমরা একটা মুক্ত সমাজ চাই। আমরা একটা মুক্ত রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই।

এসময় গত এক বছরেও গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের তালিকা তৈরি করতে না পারায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছেন তারা এক বছরেও কি এদের খুঁজে পেলেন না? যারা এই দেশকে পরিবর্তনের জন্য প্রাণ দিল রক্ত দিল তাদের জন্য একটা তালিকা তৈরি করে সঠিকভাবে তাদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করতে পারলেন না!

তিনি দ্রুত একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটা নির্বাচিত সরকারের কাছে রাষ্ট্রের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান। গণঅভ্যুত্থানে আহত সাভারের এক শিশুর কৃত্রিম মাথা লাগানোর বিষয়টি উল্লেখ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কালকে ৭ বছরে একটি শিশু এসে হঠাৎ করে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। শিশুটি বলেছে আমার মাথায় খুলিটা নেই, খুলিটা প্লাস্টিকের। প্লাস্টিক দিয়ে আর্টিফিশিয়াল খুলি তৈরি করে লাগিয়ে দিয়েছে। এর চেয়ে বড় ত্যাগ আর কী হতে পারে? আমরা যদি সঠিকভাবে দাঁড়াতে না পারি তাহলে ওই শিশুদের সঙ্গে আমাদের বোন-মায়েদের সঙ্গে নিঃসন্দেহে একটা বড় প্রতারণা করবো।

বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও জুলাই গনঅভ্যুত্থানে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হওয়ায় মানবজমিন প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমান, সংগ্রাম এর সাবেক সম্পাদক আবুল আসাদকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

এদের মধ্যে মতিউর রহমান ও মাহমুদুর রহমানের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ ও সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়াসহ কমিটির সদস্যরা। বাকিরা বিদেশে এবং অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগান্তর সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদারসহ আরও অনেকে।