ফেনী জেলা প্রতিনিধি :
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ এক নম্বর হতে হবে। যাদের দিয়ে কাজটি করা সম্ভব, তাদেরই দেওয়া হবে। এটি কোনও ছোটোখাটো কাজ নয়, অনেক বড় প্রকল্প। সুতরাং এটির জন্য কারিগরি দক্ষতা থেকে শুরু করে আয়োজন-উদ্যোগ সবকিছুই এক নম্বর হতে হবে। কারণ বারবার এত বড় প্রকল্প নিয়ে কাজ করা যাবে না।
শনিবার (১২ জুলাই) সকালে ফেনীর ফুলগাজী আলী আজম উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, কেউ কেউ বলছেন ত্রাণ লাগবে না, শুধু টেকসই বেড়িবাঁধ করে দিন। আমি বলছি আমাদের দুটোই লাগবে। এখনই ত্রাণ দরকার জীবন বাঁচাতে এবং দীর্ঘমেয়াদে লাগবে টেকসই বেড়িবাঁধ। সেই সঙ্গে জীবিকার ব্যবস্থাও জরুরি।
তিনি বলেন, অতি দরিদ্র মানুষগুলো এখন সবচেয়ে ঝুঁকিতে। যাদের ঘরবাড়ি নেই, খাবার নেই, তাদের আগে বাঁচাতে হবে। তারপর ধাপে ধাপে অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়।
উপদেষ্টা বলেন, এ কাজটি ছোটখাটো কিছু নয়, এটি একটি বড় প্রকল্প। সুতরাং যারা প্রকৃতভাবে কাজটি করতে পারবে, তাদেরকেই দায়িত্ব দেওয়া হবে। কারিগরি দক্ষতা, আয়োজন, পরিকল্পনা—সবদিক দিয়েই এক নম্বর হতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান বাঁধ এ ধরনের বন্যা মোকাবিলার উপযুক্ত নয় এটি আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে প্রমাণিত হয়েছে। তাই নতুন করে আরও শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণ এবং সুপরিকল্পিত উদ্যোগ দরকার। আগে কখনও এমন বৃষ্টি হয়নি, এখন যে বৃষ্টি হচ্ছে এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এতে সরকারের কিছু করার নেই, কিন্তু দুর্যোগ পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলেই কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, বাঁধ নির্মাণ অনেক বড় প্রকল্প যার কারণে একটু সময় লাগবে। এরমধ্যে অস্থায়ী ভাবে বৃষ্টি ও বন্যা সহনশীল বাঁধ সংস্কার আমরা করে দিচ্ছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড টিউবব্যাগ দিয়ে কাজ করবে। এগুলো থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকার চেষ্টা করছে।
এর আগে বানভাসি মানুষের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা। ক্ষতিগ্রস্তরা পানিবন্দি অবস্থায় ত্রাণ না পাওয়াসহ স্থানীয় প্রশাসনের নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগ করেন। এসময় মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ১২২ কিলোমিটার বাঁধ টেকসইভাবে নির্মাণের জোর দাবি জানান তারা। পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা আজমিরি বেগম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র এবং দক্ষিণ শ্রীপুর পূর্বপাড়া এলাকার মুহুরী নদীর ভাঙনকবলিত স্থানও ঘুরে দেখেন।
এছাড়া গত শুক্রবার রাতে ফেনী সার্কিট হাউসে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় অংশ নেন তিনি। সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।