Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফসলি জমি ও কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন কঠোরভাবে রোধ করতে হবে : ভূমিমন্ত্রী

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

নদী, পুকুর ও জলাশয় সংরক্ষণে কঠোর বার্তা দিয়ে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ফসলি জমি ও কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন কঠোরভাবে রোধ করতে হবে। যেভাবে কৃষি জমি চলে যাচ্ছে, ৫০ থেকে ৭০ বছর পর আর কোনো কৃষি জমি থাকবে না। তাই আমাদের সজাগ হতে হবে। কোনোভাবেই যাতে মাটি ভরাট করে কৃষি ও ফসলি জমি নষ্ট করা না হয়। কেউ ভূমি ভরাট কিংবা শ্রেণি পরিবর্তন করার চেষ্টা করলে জেলা প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

বুধবার (১২ জুন) দুপুরে নগরীর এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামে সংলগ্ন জিমনেসিয়ামে ভূমিসেবা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: স্মার্ট ভূমিসেবা ও ভূমি ব্যবস্থাপন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভূমি সপ্তাহ উদযাপন করেই বসে থাকলে চলবে না। সব অফিসেই আমাদের সারাবছর ভূমি সংক্রান্ত ভূমিসেবা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। আমরা জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়েও ভূমি সংক্রান্ত সকল বিষয় হাতে-কলমে শেখাতে চাই। অনলাইনে ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজ করার ব্যবস্থা আমরা করেছি। একজন গ্রাহক ঘরে বসেই ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা নিতে পারবে। জমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না হলে আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারব না।

তিনি ভূমি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ভূমি অফিসে গেলে প্রত্যেক নাগরিককে সম্মান দিয়ে কথা বলবেন। প্রথমে তাকে বসতে দিবেন। এক অফিস থেকে অন্য অফিসে না ঘুরিয়ে জটিল সমস্যা সুন্দর করে বসে সমাধান করবেন। কোনভাবেই নাগরিকদের সঙ্গে অসদাচারণ করা যাবে না। সুন্দর করে বুঝিয়ে বলবেন। মনে রাখতে হবে আপনারা নাগরিকের সেবক। নাগরিকের টাকায় আপনাদের বেতনভাতা হয়।

এসময় তিনি চট্টগ্রামকে আরও সুন্দর করে সাজানোর কথা তুলে ধরেন। মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম আমাদের বাণিজ্যিক রাজধানী। এ সুন্দর চট্টগ্রামকে আরও সুন্দর করে সাজাতে চাই। আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেছেন, দেশে একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। তিনি তার কথা রেখেছেন, চট্টগ্রামকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করা হচ্ছে।

নদী, পুকুর ও জলাশয় সংরক্ষণের বিষয়ে কঠোর বার্তা ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, নদী সংরক্ষণ করতে হবে। কোনভাবেই নদী বা নদীর আশপাশ ভরাট করা যাবে না। আমরা এসব বিষয় অত্যন্ত তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখছি। আমাদের পুকুর ও জলাশয় সংরক্ষণ করতে হবে। কৃষি জমির শ্রেণী কোনভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না। ফসলি জমি ও কৃষি জমির শ্রেণী পরিবর্তন কঠোরভাবে রোধ করতে হবে। যেভাবে কৃষি জমি চলে যাচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ বছর পর আর কোন কৃষি জমি থাকবে না। তাই আমাদের সজাগ হতে হবে। কোনভাবেই যাতে মাটি ভরাট করে কৃষি ও ফসলি জমি নষ্ট না করা হয়।

জমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না হলে আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবো না। আমরা সবাই সমালোচনা করি। একে অন্যের সমালোচনা করি। কিন্তু নিজের সমালোচনা কেউ করি না। নিজের সমালোচনা নিজে যদি করি তাহলে অনেক কিছুর পরিবর্তন আসবে। বহুতল বিশিষ্ট ভবনে বসবাসে শান্তি নিহীত নয়। সবাই মিলে সুষ্ঠু পরিবেশে বসবাস করাই শান্তি। আমরা চাই পরিচ্ছন্ন একটি সমাজ ব্যবস্থা। সেখানে সবাই শান্তিতে বসবাস করবে।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ভূমি সংক্রান্ত যে জটিলতা সেগুলো আমরা নিরসন করছি। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। আমরা যারা শিক্ষিত তারাও ভূমির অনেক বিষয়ে জানি না। তাই নবম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ে ভূমি সংক্রান্ত বেশকিছু বিষয় রাখা হয়েছে। যাতে অন্তত নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়লেও ভূমি সংক্রান্ত একটি ধারণা পাওয়া যায়।

সিভিল মামলায় গেলে সে পরিবার একেবারেই শেষ। তার বাবা ছেলেকে, ছেলে তার ছেলেকে এ মামলা দিয়ে যায়। এতে কোন সামাধান হয় না। উল্টো টাকা পয়সা হারিয়ে পথে বসতে হয়। তাই আমাদের ভূমি আইন সম্পর্কে জানতে হবে। জটিল বিষয় সমাধানের দিকে আসতে হবে। একে অপরকে ছাড় দিতে হবে। এ মানসিকতা তৈরি করতে হবে বলে মন্ত্রী তার বক্তব্য যোগ করেন।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শহীদুল হক চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম সরোয়ার কামাল, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. এমদাদুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন, চট্টগ্রাম রেঞ্জ অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায়। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, ভূমিসেবা গ্রহীতা, চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের ভূমি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিবর্গ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফসলি জমি ও কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন কঠোরভাবে রোধ করতে হবে : ভূমিমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১০:০১:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

নদী, পুকুর ও জলাশয় সংরক্ষণে কঠোর বার্তা দিয়ে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ফসলি জমি ও কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন কঠোরভাবে রোধ করতে হবে। যেভাবে কৃষি জমি চলে যাচ্ছে, ৫০ থেকে ৭০ বছর পর আর কোনো কৃষি জমি থাকবে না। তাই আমাদের সজাগ হতে হবে। কোনোভাবেই যাতে মাটি ভরাট করে কৃষি ও ফসলি জমি নষ্ট করা না হয়। কেউ ভূমি ভরাট কিংবা শ্রেণি পরিবর্তন করার চেষ্টা করলে জেলা প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

বুধবার (১২ জুন) দুপুরে নগরীর এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামে সংলগ্ন জিমনেসিয়ামে ভূমিসেবা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: স্মার্ট ভূমিসেবা ও ভূমি ব্যবস্থাপন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভূমি সপ্তাহ উদযাপন করেই বসে থাকলে চলবে না। সব অফিসেই আমাদের সারাবছর ভূমি সংক্রান্ত ভূমিসেবা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। আমরা জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়েও ভূমি সংক্রান্ত সকল বিষয় হাতে-কলমে শেখাতে চাই। অনলাইনে ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজ করার ব্যবস্থা আমরা করেছি। একজন গ্রাহক ঘরে বসেই ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা নিতে পারবে। জমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না হলে আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারব না।

তিনি ভূমি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ভূমি অফিসে গেলে প্রত্যেক নাগরিককে সম্মান দিয়ে কথা বলবেন। প্রথমে তাকে বসতে দিবেন। এক অফিস থেকে অন্য অফিসে না ঘুরিয়ে জটিল সমস্যা সুন্দর করে বসে সমাধান করবেন। কোনভাবেই নাগরিকদের সঙ্গে অসদাচারণ করা যাবে না। সুন্দর করে বুঝিয়ে বলবেন। মনে রাখতে হবে আপনারা নাগরিকের সেবক। নাগরিকের টাকায় আপনাদের বেতনভাতা হয়।

এসময় তিনি চট্টগ্রামকে আরও সুন্দর করে সাজানোর কথা তুলে ধরেন। মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম আমাদের বাণিজ্যিক রাজধানী। এ সুন্দর চট্টগ্রামকে আরও সুন্দর করে সাজাতে চাই। আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেছেন, দেশে একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। তিনি তার কথা রেখেছেন, চট্টগ্রামকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করা হচ্ছে।

নদী, পুকুর ও জলাশয় সংরক্ষণের বিষয়ে কঠোর বার্তা ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, নদী সংরক্ষণ করতে হবে। কোনভাবেই নদী বা নদীর আশপাশ ভরাট করা যাবে না। আমরা এসব বিষয় অত্যন্ত তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখছি। আমাদের পুকুর ও জলাশয় সংরক্ষণ করতে হবে। কৃষি জমির শ্রেণী কোনভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না। ফসলি জমি ও কৃষি জমির শ্রেণী পরিবর্তন কঠোরভাবে রোধ করতে হবে। যেভাবে কৃষি জমি চলে যাচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ বছর পর আর কোন কৃষি জমি থাকবে না। তাই আমাদের সজাগ হতে হবে। কোনভাবেই যাতে মাটি ভরাট করে কৃষি ও ফসলি জমি নষ্ট না করা হয়।

জমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না হলে আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবো না। আমরা সবাই সমালোচনা করি। একে অন্যের সমালোচনা করি। কিন্তু নিজের সমালোচনা কেউ করি না। নিজের সমালোচনা নিজে যদি করি তাহলে অনেক কিছুর পরিবর্তন আসবে। বহুতল বিশিষ্ট ভবনে বসবাসে শান্তি নিহীত নয়। সবাই মিলে সুষ্ঠু পরিবেশে বসবাস করাই শান্তি। আমরা চাই পরিচ্ছন্ন একটি সমাজ ব্যবস্থা। সেখানে সবাই শান্তিতে বসবাস করবে।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ভূমি সংক্রান্ত যে জটিলতা সেগুলো আমরা নিরসন করছি। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। আমরা যারা শিক্ষিত তারাও ভূমির অনেক বিষয়ে জানি না। তাই নবম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ে ভূমি সংক্রান্ত বেশকিছু বিষয় রাখা হয়েছে। যাতে অন্তত নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়লেও ভূমি সংক্রান্ত একটি ধারণা পাওয়া যায়।

সিভিল মামলায় গেলে সে পরিবার একেবারেই শেষ। তার বাবা ছেলেকে, ছেলে তার ছেলেকে এ মামলা দিয়ে যায়। এতে কোন সামাধান হয় না। উল্টো টাকা পয়সা হারিয়ে পথে বসতে হয়। তাই আমাদের ভূমি আইন সম্পর্কে জানতে হবে। জটিল বিষয় সমাধানের দিকে আসতে হবে। একে অপরকে ছাড় দিতে হবে। এ মানসিকতা তৈরি করতে হবে বলে মন্ত্রী তার বক্তব্য যোগ করেন।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শহীদুল হক চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম সরোয়ার কামাল, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. এমদাদুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন, চট্টগ্রাম রেঞ্জ অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায়। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, ভূমিসেবা গ্রহীতা, চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের ভূমি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিবর্গ।