নিজস্ব প্রতিবেদক :
রংপুর নগরীসহ ৭ বিভাগের কয়েকটি জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা ও হাইটেক ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা দেয়ার সময় শিক্ষক, পরীক্ষার্থী ও সিন্ডিকেট সদস্য ও শিক্ষকসহ অর্ধ-শতাধিককে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে শতাধিক মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও ব্যাংক চেক।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
পুলিশ কমিশনার জানান, রংপুর মহানগরে ৩জন শিক্ষক, ১১ জন পরীক্ষার্থী ও ৫ জন সিন্ডিকেট সদস্য সহ ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৮ জন নারী পরীক্ষার্থী রয়েছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে প্রাইমারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় একটি সিন্ডিকেট হাইটেক টেকনোলজি ব্যবহার করে পরীক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা করছে। এ তথ্য পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতে কয়েকজনকে ও সকালে পরীক্ষা চলাকালীন বাকিদের গ্রেপ্তার করে। এদের নিকট থেকে ডিভাইস, মোবাইল ও প্রবেশপত্রসহ বিভিন্ন কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি, চেষ্টা চালানো হয়েছিল। সারা দেশব্যাপী একটি সিন্ডিকেট এই অপতৎপরতার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।
প্রাথমিক শিক্ষার রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, রংপুর বিভাগের লালমনিরহাটে ১৩ জন, দিনাজপুরে ১০ জন, ঠাকুরগাঁয়ে ৬ জন, নীলফামারীতে ৩ জন ও কুড়িগ্রামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জেলাগুলো হলো, রংপুর, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার। এসব জেলায় মোট কেন্দ্র ৫৩৫টি আর পরীক্ষার কক্ষ ছিল আট হাজার ১৮৬টি।
উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩-এর ১ম গ্রুপের (রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ) আওতাধীন জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭।
প্রথম ধাপের পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন চাকরিপ্রার্থী। এ ধাপে বরিশাল, রংপুর ও সিলেট বিভাগের ৭২ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী- ৩ বিভাগের সরকারি প্রাথমিকে শূন্য পদ রয়েছে দুই হাজার ৭৭২টি। সেই হিসাবে প্রতি পদের বিপরীতে লড়ছেন ১৩০ জন। তবে কোটা সুবিধার কারণে নারী প্রার্থীরা নিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন।