নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (বিপিএসসি) তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেফতারের পর তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গতকাল সোমবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে এই মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ১৫। মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ১৭ জনকে।
প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। অভিযানে এই মামলায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে ও পলাতকদের গ্রেফতার করতে পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলায় ১৭ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে।
আর আগে ‘বিসিএস প্রিলি-লিখিতসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস’ শিরোনামে দেশের অন্যতম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে সিআইডি। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত পিএসসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর, উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির, সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান। বিপিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই প্রশ্নফাঁস করে অর্থ লোপাটে মেতে উঠতো সংঘবদ্ধ চক্রটি।
গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছেন পিএসসি’র উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম। আরও রয়েছেন- সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করা এবং বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন ও বেকার যুবক লিটন সরকার।
এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের প্রতিবেদন দেখেছি। আমরা অভিযোগ খতিয়ে দেখছি। প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রমাণিত হতে হবে। আর প্রমাণিত হলে কী হবে, সেটি কমিশনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রকাশিত সংবাদে বিসিএসের প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় আসেন সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম। সেই বাবা-ছেলেকেও গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। অন্যদিকে সংগঠনের নীতি ও নৈতিকতা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সোহানুর রহমান সিয়ামকে।