নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ গত ১২ বছরে ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ৭ জন। পাশাপাশি আবেদ আলীর ছেলেসহ মামলার ১০ আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন এ মামলায় গ্রেপ্তার ১৭ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনসহ সাত আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন।
জবানবন্দি দেওয়া আসামিরা বলেন, অপর ছয়জন আসামি হলেন- গাড়িচালক আবেদ আলী, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম, ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন এবং লিটন সরকার (বেকার)।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন- সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম, পিএসসি’র উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুল হাসান।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা ১৭ আসামিকে আদালতে হাজির করেন। এর মধ্যে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সাইম হোসেন এবং লিটন সরকারকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। বাকি ১০ আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়।
এদিকে ১০ আসামির পক্ষে ফারুক আহাম্মদ, কাওসার আহমেদসহ কয়েকজন আইনজীবী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এই জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সাত আসামি ঢাকার পৃথক চার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছেন।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর গত রোববার পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে পিএসসির কর্মকর্তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সিআইডি কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, পিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই এই চক্রের সদস্যরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অর্থ নিতেন। ৫ জুলাই (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন তারা। চক্রের সদস্যরা ওই পরীক্ষার আগের রাতে তাদের চুক্তি করা শিক্ষার্থীদের অজ্ঞাতনামা স্থানে রেখে ওই প্রশ্নপত্র ও তার উত্তর দিয়ে দেন।