Dhaka বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রয়োজনে ইসরায়েল একাই লড়বে : নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল একাই দাঁড়াতে পারে। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা একাই যুদ্ধ চালিয়ে যাবো। দরকার হলে আমরা ‘নখ’ দিয়ে যুদ্ধ করবো। দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে স্থল অভিযান শুরুর আগে পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) ইসরায়েলের রাজধানী জেরুজালেমে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এ ইস্যুতে ইসরায়েলের অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি।

তিনি বলেন, ৭৬ বছর আগে, স্বাধীনতাযুদ্ধে অনেকেই আমাদের বিরুদ্ধে ছিল, ছিল অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা। সেসময় আমাদের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্রও ছিল না। কিন্তু আমাদের মধ্যে প্রবল চেতনা, বীরত্ব ও ঐক্যের জোর থাকায় ওই যুদ্ধে আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম।

তিনি আরো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি অস্ত্রের চালান বন্ধ করে দেন, তবে চিন্তার কিছু নেই। ইসরায়েলের কাছে এখন পর্যাপ্ত অস্ত্রের জোগান আছে। সঙ্গে আছে আমাদের অদম্য মনোবল। ঈশ্বরের সাহায্যে আমরা বিজয়ী হবো।

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস এবং তাদের মিত্রগোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের (পিআইজে) যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল; আর এই যুদ্ধের শুরু থেকে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি রাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরোনো ও বিশ্বস্ত মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি এ ইস্যুতে এতদিন আন্তর্জাতিক জনমতও উপেক্ষা করেছে ওয়াশিংটন।

অস্ত্র সরবরাহের পাশাপাশি গত ৭ মাসে ইসরায়েলকে বিভিন্ন নির্দেশনাও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেসবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি নির্দেশনা ছিল (ক) গাজায় নিরপরাধ বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হতাহতের হার হ্রাস করা এবং (খ) আরও দক্ষ ও নিখুঁতভাবে অভিযান পরিচালনা করা।

কিন্তু এসব নির্দেশনার কোনোটিতেই ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন সরকার কিংবা প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) কর্ণপাত করেনি। ফলে দুই দেশের কর্মকর্তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই খানিকটা জটিল হয়ে ওঠে গত কয়েক মাসে।

এই জটিলতা প্রথম স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয় গত এপ্রিলে, যখন নেতানিয়াহু প্রথম গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন। যুক্তরাষ্ট্র এতে প্রবল আপত্তি জানায়। কারণ, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে নিরাপত্তার জন্য লাখ লাখ ফিলিস্তিনি রাফায় আশ্রয় নেওয়া শুরু করেন। এই ফিলিস্তিনিদের সবাই বেসামরিক।

প্রায় এক মাস এই নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে টানাপোড়েনের পর গত সপ্তাহে রাফায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী; আর এই অভিযান শুরুর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করে ওয়াশিংটন।

বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন স্পষ্টভাবে বলেন, যদি তারা রাফায় অগ্রসর হয়, সেক্ষেত্রে আমি নিশ্চিতভাবেই সেই অভিযানের জন্য অস্ত্র সরবরাহ করব না।

বাইডেনের এই সাক্ষাৎকারের পরের দিন দেওয়া সেই ভাষণে ১৯৪৭ সালে ইসরয়েলের প্রতিষ্ঠাকাল স্মরণ করেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, আজ থেকে ৭৬ বছর আগে আমরা খুবই অল্প ছিলাম, কিন্তু অনেকের সঙ্গে লড়াই করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সে সময় আমাদের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্র ছিল না, আন্তর্জাতিক নিষেধজ্ঞাও ছিল। কিন্তু একতা, বীরত্ব ও স্পিরিটের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এবারের লড়াইয়েও আমরাই জিতব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নেপালে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রয়োজনে ইসরায়েল একাই লড়বে : নেতানিয়াহু

প্রকাশের সময় : ১২:৫৯:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল একাই দাঁড়াতে পারে। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা একাই যুদ্ধ চালিয়ে যাবো। দরকার হলে আমরা ‘নখ’ দিয়ে যুদ্ধ করবো। দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে স্থল অভিযান শুরুর আগে পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) ইসরায়েলের রাজধানী জেরুজালেমে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এ ইস্যুতে ইসরায়েলের অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি।

তিনি বলেন, ৭৬ বছর আগে, স্বাধীনতাযুদ্ধে অনেকেই আমাদের বিরুদ্ধে ছিল, ছিল অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা। সেসময় আমাদের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্রও ছিল না। কিন্তু আমাদের মধ্যে প্রবল চেতনা, বীরত্ব ও ঐক্যের জোর থাকায় ওই যুদ্ধে আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম।

তিনি আরো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি অস্ত্রের চালান বন্ধ করে দেন, তবে চিন্তার কিছু নেই। ইসরায়েলের কাছে এখন পর্যাপ্ত অস্ত্রের জোগান আছে। সঙ্গে আছে আমাদের অদম্য মনোবল। ঈশ্বরের সাহায্যে আমরা বিজয়ী হবো।

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস এবং তাদের মিত্রগোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের (পিআইজে) যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল; আর এই যুদ্ধের শুরু থেকে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি রাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরোনো ও বিশ্বস্ত মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি এ ইস্যুতে এতদিন আন্তর্জাতিক জনমতও উপেক্ষা করেছে ওয়াশিংটন।

অস্ত্র সরবরাহের পাশাপাশি গত ৭ মাসে ইসরায়েলকে বিভিন্ন নির্দেশনাও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেসবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি নির্দেশনা ছিল (ক) গাজায় নিরপরাধ বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হতাহতের হার হ্রাস করা এবং (খ) আরও দক্ষ ও নিখুঁতভাবে অভিযান পরিচালনা করা।

কিন্তু এসব নির্দেশনার কোনোটিতেই ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন সরকার কিংবা প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) কর্ণপাত করেনি। ফলে দুই দেশের কর্মকর্তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই খানিকটা জটিল হয়ে ওঠে গত কয়েক মাসে।

এই জটিলতা প্রথম স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয় গত এপ্রিলে, যখন নেতানিয়াহু প্রথম গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন। যুক্তরাষ্ট্র এতে প্রবল আপত্তি জানায়। কারণ, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে নিরাপত্তার জন্য লাখ লাখ ফিলিস্তিনি রাফায় আশ্রয় নেওয়া শুরু করেন। এই ফিলিস্তিনিদের সবাই বেসামরিক।

প্রায় এক মাস এই নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে টানাপোড়েনের পর গত সপ্তাহে রাফায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী; আর এই অভিযান শুরুর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করে ওয়াশিংটন।

বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন স্পষ্টভাবে বলেন, যদি তারা রাফায় অগ্রসর হয়, সেক্ষেত্রে আমি নিশ্চিতভাবেই সেই অভিযানের জন্য অস্ত্র সরবরাহ করব না।

বাইডেনের এই সাক্ষাৎকারের পরের দিন দেওয়া সেই ভাষণে ১৯৪৭ সালে ইসরয়েলের প্রতিষ্ঠাকাল স্মরণ করেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, আজ থেকে ৭৬ বছর আগে আমরা খুবই অল্প ছিলাম, কিন্তু অনেকের সঙ্গে লড়াই করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সে সময় আমাদের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্র ছিল না, আন্তর্জাতিক নিষেধজ্ঞাও ছিল। কিন্তু একতা, বীরত্ব ও স্পিরিটের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এবারের লড়াইয়েও আমরাই জিতব।