Dhaka মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রবীর মিত্র মারা গেছেন

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১১:৩২:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২২১ জন দেখেছেন

বিনোদন ডেস্ক : 

বাংলা চলচ্চিত্রের ‘নবাব’ খ্যাত স্বর্ণালী যুগের চিত্রনায়ক ও বহুমাত্রিক অভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন। চিত্রনায়িকা অঞ্জনার মৃত্যুর এক দিন বাদেই চলে গেলেন ক্যারিয়ার জীবনে প্রায় তার সমসাময়িক এই অভিনেতা।

রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ঢাকাই সিনেমার একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক প্রবীর মিত্র। প্রবীর মিত্রর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

প্রবীর মিত্রের মৃত্যুর বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ও অভিনেতা মিশা সওদাগর। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্র অঙ্গনে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে মিশা সওদাগর লিখেছেন, প্রবীর মিত্র দাদা আর নেই। কিছুক্ষণ আগে উনি ইন্তেকাল করেছেন। স্রষ্টা তাকে ক্ষমা করুক।

মিশা সওদাগরের তথ্য অনুযাযী, সর্বস্তরের শ্রদ্ধা জানাতে সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে এফডিসিতে প্রবীর মিত্রর মরদেহ আনা হবে।

শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় রোববার (৫ জানুয়ারি) আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় প্রবীর মিত্রকে। এর আগে ১০-১২ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

গত ২২ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রবীর মিত্রকে। শরীরে অক্সিজেন পাচ্ছিল না। এরপর আইসিইউতে নেওয়া হয় তাকে। সেখান থেকে কেবিনে দেওয়া হয়েছিল। তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি; ক্রমেই খারাপ অবস্থার দিকে যান। ব্লাড লস হয়, প্লাটিলেটও কমে যায়।

উল্লেখ্য, অনেকে ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব’ বলে ডাকেন প্রবীর মিত্রকে। ১৯৪০ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুর জেলার নতুন বাজারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। প্রবীর মিত্রের শৈশব কেটেছে পুরান ঢাকায়। পড়াশোনা করেন সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল ও জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)। ১৯৭১ সালে এইচ আকবরের ‘জলছবি’ সিনেমা দিয়ে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু করেন প্রবীর মিত্র। এরপর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পর্দায় নায়ক চরিত্রে যেমন সফল হয়েছেন, তেমনি চরিত্রাভিনেতা হিসেবেও সমানভাবে আলো ছড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন গুণী এই অভিনেতা।

‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে প্রবীর মিত্রকে। এছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় মূখ্য চরিত্রে ছিলেন তিনি। তার অভিনীত অনান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সীমার’, ‘তীর ভাঙা ঢেউ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘অঙ্গার’, ‘পুত্রবধূ’, ‘নয়নের আলো’, ‘চাষীর মেয়ে’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘আবদার’, ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়ান’, ইত্যাদি।

কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। আর ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। ব্যক্তি জীবনে তার তিন ছেলে, এক মেয়ে। স্ত্রী অজন্তা মিত্রকে ২০০০ সালে হারানোর পর ২০১২ সালে তার ছোট ছেলে আকাশও পরপারে পাড়ি জমান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ১০

প্রবীর মিত্র মারা গেছেন

প্রকাশের সময় : ১১:৩২:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫

বিনোদন ডেস্ক : 

বাংলা চলচ্চিত্রের ‘নবাব’ খ্যাত স্বর্ণালী যুগের চিত্রনায়ক ও বহুমাত্রিক অভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন। চিত্রনায়িকা অঞ্জনার মৃত্যুর এক দিন বাদেই চলে গেলেন ক্যারিয়ার জীবনে প্রায় তার সমসাময়িক এই অভিনেতা।

রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ঢাকাই সিনেমার একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক প্রবীর মিত্র। প্রবীর মিত্রর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

প্রবীর মিত্রের মৃত্যুর বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ও অভিনেতা মিশা সওদাগর। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্র অঙ্গনে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে মিশা সওদাগর লিখেছেন, প্রবীর মিত্র দাদা আর নেই। কিছুক্ষণ আগে উনি ইন্তেকাল করেছেন। স্রষ্টা তাকে ক্ষমা করুক।

মিশা সওদাগরের তথ্য অনুযাযী, সর্বস্তরের শ্রদ্ধা জানাতে সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে এফডিসিতে প্রবীর মিত্রর মরদেহ আনা হবে।

শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় রোববার (৫ জানুয়ারি) আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় প্রবীর মিত্রকে। এর আগে ১০-১২ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

গত ২২ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রবীর মিত্রকে। শরীরে অক্সিজেন পাচ্ছিল না। এরপর আইসিইউতে নেওয়া হয় তাকে। সেখান থেকে কেবিনে দেওয়া হয়েছিল। তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি; ক্রমেই খারাপ অবস্থার দিকে যান। ব্লাড লস হয়, প্লাটিলেটও কমে যায়।

উল্লেখ্য, অনেকে ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব’ বলে ডাকেন প্রবীর মিত্রকে। ১৯৪০ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুর জেলার নতুন বাজারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। প্রবীর মিত্রের শৈশব কেটেছে পুরান ঢাকায়। পড়াশোনা করেন সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল ও জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)। ১৯৭১ সালে এইচ আকবরের ‘জলছবি’ সিনেমা দিয়ে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু করেন প্রবীর মিত্র। এরপর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পর্দায় নায়ক চরিত্রে যেমন সফল হয়েছেন, তেমনি চরিত্রাভিনেতা হিসেবেও সমানভাবে আলো ছড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন গুণী এই অভিনেতা।

‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে প্রবীর মিত্রকে। এছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় মূখ্য চরিত্রে ছিলেন তিনি। তার অভিনীত অনান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সীমার’, ‘তীর ভাঙা ঢেউ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘অঙ্গার’, ‘পুত্রবধূ’, ‘নয়নের আলো’, ‘চাষীর মেয়ে’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘আবদার’, ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়ান’, ইত্যাদি।

কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। আর ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। ব্যক্তি জীবনে তার তিন ছেলে, এক মেয়ে। স্ত্রী অজন্তা মিত্রকে ২০০০ সালে হারানোর পর ২০১২ সালে তার ছোট ছেলে আকাশও পরপারে পাড়ি জমান।