Dhaka সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রবাস ফেরত যুবককে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী-শাশুড়ি আটক

নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি : 

নেত্রকোনার মদনে বিদেশ ফেরত যুবক এখলাছ মিয়াকে (৩৩) আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় স্ত্রী-শাশুড়িকে আটক করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ এর উপ-পরিচালক অপারেশনস অফিসার আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আটক ব্যক্তিরা হলেন- এখলাছের স্ত্রী মুক্তা আক্তার (২৮) ও শাশুড়ি লুৎফুন নেছা (৫০)।

বুধবার দিবাগত রাত একটার দিকে ময়মনসিংহ শহরের সানকিপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র‌্যাবের একটি দল।

হত্যার শিকার এখলাছ মিয়া কেন্দুয়া উপজেলার পাছর গ্রামের মৃত আলী আমজাদ খাঁর ছেলে।
মামলার অভিযোগের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, ছয় বছর আগে মদন উপজেলার বাড়রী গ্রামের খাইরুল ইসলামের মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করেন এখলাছ। বিয়ের কিছুদিন পর সৌদিআরব চলে যান তিনি। মুক্তা তার বাবার বাড়িতে থাকত। বিদেশে উপার্জিত টাকা স্ত্রীর কাছেই পাঠাতেন এখলাছ। পাঁচ বছর বিদেশে কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফেরেন তিনি।

১২ নভেম্বর দিবাগত রাতে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে টাকা পয়সাসহ স্ত্রীকে নিজের বাড়ি কেন্দুয়া যেতে বলেন এখলাছ। স্ত্রী মুক্তা টাকা-পয়সা দিতে ও বাড়ি যেতে অস্বীকার করলে দু’জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে মুক্তা তার বাবা-মা ও আরও কয়েকজন পরিচিতের সহায়তায় এখলাছের হাঁত-পা বেঁধে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

র‌্যাব আরও জানায়, চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এখলাছ মিয়াকে উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ নভেম্বর মারা যান এখলাছ।

এদিকে এ ঘটনায় এখলাছের চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে ১৫ নভেম্বর মদন থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এতে এখলাছের স্ত্রী মুক্তা, শ্বশুর খাইরুল ইসলাম ও শাশুড়ি লুৎফুন নেছাসহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়। তবে ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালান আসামিরা।

ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ এর উপ-পরিচালক অপারেশনস অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলার পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চালায় র‌্যাব। গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ময়মনসিংহ শহরের সানকিপাড়া এলাকায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করার পর গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের মদন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মামলার বাদী ও এখলাছের চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিদেশে থেকে উপার্জিত সব টাকা এখলাছ স্ত্রীর কাছে পাঠাতেন। দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে দেশে ফিরে টাকার হিসাব চাইতেই তার স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ি ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে তার স্ত্রী মুক্তা চট্টগ্রাম পালিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতেন মুক্তা। বাসার মালিককে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে মুক্তাকে ১১ নভেম্বর এলাকায় ফেরত নেন এখলাছ। পরদিন রাতে নিজের বাড়ি ডেকে নিয়ে বাবা-মাসহ কয়েকজনের সহায়তায় এখলাছের হাত-পা বেঁধে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেন মুক্তা। পরে বিষয়টিকে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে প্রচার করে তারা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

প্রবাস ফেরত যুবককে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী-শাশুড়ি আটক

প্রকাশের সময় : ০১:১৩:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৩

নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি : 

নেত্রকোনার মদনে বিদেশ ফেরত যুবক এখলাছ মিয়াকে (৩৩) আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় স্ত্রী-শাশুড়িকে আটক করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ এর উপ-পরিচালক অপারেশনস অফিসার আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আটক ব্যক্তিরা হলেন- এখলাছের স্ত্রী মুক্তা আক্তার (২৮) ও শাশুড়ি লুৎফুন নেছা (৫০)।

বুধবার দিবাগত রাত একটার দিকে ময়মনসিংহ শহরের সানকিপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র‌্যাবের একটি দল।

হত্যার শিকার এখলাছ মিয়া কেন্দুয়া উপজেলার পাছর গ্রামের মৃত আলী আমজাদ খাঁর ছেলে।
মামলার অভিযোগের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, ছয় বছর আগে মদন উপজেলার বাড়রী গ্রামের খাইরুল ইসলামের মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করেন এখলাছ। বিয়ের কিছুদিন পর সৌদিআরব চলে যান তিনি। মুক্তা তার বাবার বাড়িতে থাকত। বিদেশে উপার্জিত টাকা স্ত্রীর কাছেই পাঠাতেন এখলাছ। পাঁচ বছর বিদেশে কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফেরেন তিনি।

১২ নভেম্বর দিবাগত রাতে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে টাকা পয়সাসহ স্ত্রীকে নিজের বাড়ি কেন্দুয়া যেতে বলেন এখলাছ। স্ত্রী মুক্তা টাকা-পয়সা দিতে ও বাড়ি যেতে অস্বীকার করলে দু’জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে মুক্তা তার বাবা-মা ও আরও কয়েকজন পরিচিতের সহায়তায় এখলাছের হাঁত-পা বেঁধে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

র‌্যাব আরও জানায়, চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এখলাছ মিয়াকে উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ নভেম্বর মারা যান এখলাছ।

এদিকে এ ঘটনায় এখলাছের চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে ১৫ নভেম্বর মদন থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এতে এখলাছের স্ত্রী মুক্তা, শ্বশুর খাইরুল ইসলাম ও শাশুড়ি লুৎফুন নেছাসহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়। তবে ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালান আসামিরা।

ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ এর উপ-পরিচালক অপারেশনস অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলার পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চালায় র‌্যাব। গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ময়মনসিংহ শহরের সানকিপাড়া এলাকায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করার পর গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের মদন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মামলার বাদী ও এখলাছের চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিদেশে থেকে উপার্জিত সব টাকা এখলাছ স্ত্রীর কাছে পাঠাতেন। দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে দেশে ফিরে টাকার হিসাব চাইতেই তার স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ি ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে তার স্ত্রী মুক্তা চট্টগ্রাম পালিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতেন মুক্তা। বাসার মালিককে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে মুক্তাকে ১১ নভেম্বর এলাকায় ফেরত নেন এখলাছ। পরদিন রাতে নিজের বাড়ি ডেকে নিয়ে বাবা-মাসহ কয়েকজনের সহায়তায় এখলাছের হাত-পা বেঁধে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেন মুক্তা। পরে বিষয়টিকে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে প্রচার করে তারা।