Dhaka মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বুঝা যায়, সরকার খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায়: ফখরুল 

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

‘রোজই শুনি এই মরে মরে, এই যায় যায়। বয়স তো ৮০’র উপরে। সময় হয়ে গেছে। তার মধ্যে অসুস্থ। এখানে এত কান্নাকাটি করে লাভ নাই’- সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বুঝা যায়, এ সরকার তাকে বাঁচতে দিতে চায় না।

বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সরকার পতনের চলমান এক দফা আন্দোলনের সর্বশেষ পরিস্থিতি, পরবর্তী করণীয় এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে সরকার তাকে হত্যা করতে চায়। খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য সেরকমই ইঙ্গিত দেয়। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সুযোগ না দেয়া মানে তাকে হত্যা করতে চায় সরকার। বিদেশে গিয়ে যাতে চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সে জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না সরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি খুব ক্ষোভের সঙ্গে জানাতে চাই, গত মধ্যরাত ২টায় আমাদের প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন এ্যানিকে যে বর্বর বা ডাকাতির পদ্ধতিতে গ্রেপ্তার করেছে তা প্রমাণ করে যে এই সরকার এক তরফা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তার কোনো দোষ থাকলে তাকে থানায় যেতে বলতে পারত। কিন্তু সন্ত্রাসী কায়দায় যেভাবে ডাকাত হামলা করে সেভাবে তাকে আটক করা হয়েছে। এমনকি আমাদের যেসব নেতা জামিন পাচ্ছে তাদের জেল গেট থেকে আটক করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য যেতে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। খালেদা জিয়াকে তার ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে জোরপূর্বক বের করে মিথ্য ফরমায়েশি রায়ে জেলে রেখেছে। সরকারপ্রধান অনেক সময় বিভিন্ন বক্তব্যে হত্যার হুমকি দিয়েছেন যেমন- টুপ করে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেওয়া ইত্যাদি। যে সরকার খালেদা জিয়ার মৃত্যু চায়, সে সরকার তাকে সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করছে না।

অতি দ্রুত সাজা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার বিএনপি ও বিরোধীদলের নেতাদের সাজা দিচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আইন মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে শুধু বিএনপি নেতাদের সাজা দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য। পুলিশের সঙ্গে ডিবি বর্বর অবস্থায় আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন বন্ধ করে তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করার দাবি জানাচ্ছি।

আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ভাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি এভাবে শেখ হাসিনার অধীনে কোনও নির্বাচন হতে পারে না। আমরা বলে দিয়েছি সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো ভাবনা নেই, ভাবনা একটাই এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আর এছাড়া বাংলাদেশের কোনও মুক্তি নেই। আওয়ামী লীগের পদলেহিত দলগুলো ছাড়া দেশের আর কোনও দল বলছে না—এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।

সরকার দেশকে সাংঘর্ষিক অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকারের লক্ষ্যটাই হচ্ছে একটা সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি করে আবার সেই আগের ১৪ এবং ১৮ সালের মতন নির্বাচন করা। একতরফা ভোটার ছাড়া কোনও ভোটার থাকবে না। আর এভাবে নির্বাচন করে দেখিয়ে দেবে যে নির্বাচন হয়েছে। এটা এবার আর সম্ভব হবে না।

নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি কোনও সংলাপে যাবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে সকল প্রাক নির্বাচনি পর্যবেক্ষকরা দেশে আছেন তারা আগামী নির্বাচনের পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি পাঠাবে না সে বিষয়ে কথা বলছেন। দেশে নির্বাচনি কোনও পরিবেশ পরিস্থিতি আছে কিনা সেটা দেখার জন্য তারা এসেছেন। আমাদের খসরু সাহেব তাদেরকে পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেওয়া ছাড়া, এ অবস্থায় দেশে কোনও নির্বাচন হতে পারে না।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে বিএনপি নির্বাচনের বিষয়ে সংলাপের পথ বন্ধ করে দিয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা যে কত বড় মিথ্যা কথা তা সবাই জানে। আমরা বরাবরই বলে আসছি একটা বিষয়ে আলোচনা হতে পারে এছাড়া আর কোনও আলোচনা হবে না। আর সেটা হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয় বা নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনের বিষয় ছাড়া আর কোনও বিষয়ে আলোচনা হবে না। তবে আমরা কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকার বুঝাচ্ছি না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের কথা আমরা বলছি। নির্বাচনকালীন সরকার বলে কি আমরা আওয়ামী লীগকে ডেকে আনবো নাকি আবার।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যদি ঘোষণা দেয় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়ে তারা আলাপ করবে তাহলে আমরা তাদের সঙ্গে সংলাপে বসবো।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

আবহাওয়া

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বুঝা যায়, সরকার খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায়: ফখরুল 

প্রকাশের সময় : ০২:৫৮:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

‘রোজই শুনি এই মরে মরে, এই যায় যায়। বয়স তো ৮০’র উপরে। সময় হয়ে গেছে। তার মধ্যে অসুস্থ। এখানে এত কান্নাকাটি করে লাভ নাই’- সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বুঝা যায়, এ সরকার তাকে বাঁচতে দিতে চায় না।

বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সরকার পতনের চলমান এক দফা আন্দোলনের সর্বশেষ পরিস্থিতি, পরবর্তী করণীয় এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে সরকার তাকে হত্যা করতে চায়। খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য সেরকমই ইঙ্গিত দেয়। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সুযোগ না দেয়া মানে তাকে হত্যা করতে চায় সরকার। বিদেশে গিয়ে যাতে চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সে জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না সরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি খুব ক্ষোভের সঙ্গে জানাতে চাই, গত মধ্যরাত ২টায় আমাদের প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন এ্যানিকে যে বর্বর বা ডাকাতির পদ্ধতিতে গ্রেপ্তার করেছে তা প্রমাণ করে যে এই সরকার এক তরফা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তার কোনো দোষ থাকলে তাকে থানায় যেতে বলতে পারত। কিন্তু সন্ত্রাসী কায়দায় যেভাবে ডাকাত হামলা করে সেভাবে তাকে আটক করা হয়েছে। এমনকি আমাদের যেসব নেতা জামিন পাচ্ছে তাদের জেল গেট থেকে আটক করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য যেতে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। খালেদা জিয়াকে তার ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে জোরপূর্বক বের করে মিথ্য ফরমায়েশি রায়ে জেলে রেখেছে। সরকারপ্রধান অনেক সময় বিভিন্ন বক্তব্যে হত্যার হুমকি দিয়েছেন যেমন- টুপ করে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেওয়া ইত্যাদি। যে সরকার খালেদা জিয়ার মৃত্যু চায়, সে সরকার তাকে সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করছে না।

অতি দ্রুত সাজা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার বিএনপি ও বিরোধীদলের নেতাদের সাজা দিচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আইন মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে শুধু বিএনপি নেতাদের সাজা দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য। পুলিশের সঙ্গে ডিবি বর্বর অবস্থায় আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন বন্ধ করে তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করার দাবি জানাচ্ছি।

আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ভাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি এভাবে শেখ হাসিনার অধীনে কোনও নির্বাচন হতে পারে না। আমরা বলে দিয়েছি সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো ভাবনা নেই, ভাবনা একটাই এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আর এছাড়া বাংলাদেশের কোনও মুক্তি নেই। আওয়ামী লীগের পদলেহিত দলগুলো ছাড়া দেশের আর কোনও দল বলছে না—এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।

সরকার দেশকে সাংঘর্ষিক অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকারের লক্ষ্যটাই হচ্ছে একটা সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি করে আবার সেই আগের ১৪ এবং ১৮ সালের মতন নির্বাচন করা। একতরফা ভোটার ছাড়া কোনও ভোটার থাকবে না। আর এভাবে নির্বাচন করে দেখিয়ে দেবে যে নির্বাচন হয়েছে। এটা এবার আর সম্ভব হবে না।

নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি কোনও সংলাপে যাবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে সকল প্রাক নির্বাচনি পর্যবেক্ষকরা দেশে আছেন তারা আগামী নির্বাচনের পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি পাঠাবে না সে বিষয়ে কথা বলছেন। দেশে নির্বাচনি কোনও পরিবেশ পরিস্থিতি আছে কিনা সেটা দেখার জন্য তারা এসেছেন। আমাদের খসরু সাহেব তাদেরকে পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেওয়া ছাড়া, এ অবস্থায় দেশে কোনও নির্বাচন হতে পারে না।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে বিএনপি নির্বাচনের বিষয়ে সংলাপের পথ বন্ধ করে দিয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা যে কত বড় মিথ্যা কথা তা সবাই জানে। আমরা বরাবরই বলে আসছি একটা বিষয়ে আলোচনা হতে পারে এছাড়া আর কোনও আলোচনা হবে না। আর সেটা হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয় বা নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনের বিষয় ছাড়া আর কোনও বিষয়ে আলোচনা হবে না। তবে আমরা কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকার বুঝাচ্ছি না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের কথা আমরা বলছি। নির্বাচনকালীন সরকার বলে কি আমরা আওয়ামী লীগকে ডেকে আনবো নাকি আবার।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যদি ঘোষণা দেয় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়ে তারা আলাপ করবে তাহলে আমরা তাদের সঙ্গে সংলাপে বসবো।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।