Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেয়ার জন্য চেয়ার বানালেন কাঠমিস্ত্রি

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

ছোট বেলা থেকে কাঠের সঙ্গে মিতালী বিপেন রায়ের। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে কাঠ দিয়ে বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করেন তিনি। দীর্ঘদিন কাঠের জিনিসপত্র তৈরি করা বিপেন কাঠ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য কিছু করার চিন্তা করেন। সেই ভাবনা থেকেই প্রধানমন্ত্রীর জন্য চেয়ার বানানোর পরিকল্পনা তার মাথায় আসে। যা তিনি উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে দিবেন। বিপেন রায় ঠাকুরগাঁও জেলার সালান্দর গ্রামের বাসিন্দা।

পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের পর থেকে ভাবনা ছিল, প্রধানমন্ত্রীর জন্য কিছু করার। শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও সাধ্যের জায়গা থেকে বানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও নৌকা খচিত দৃষ্টিনন্দন এ চেয়ারটি।

সেই ভাবনা থেকেই শুরু করেন চেয়ার বানানোর কাজ। নিজের হাতের দক্ষতা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য তৈরি করলেন নৌকার আদলে এক অসাধারণ চেয়ার। এই চেয়ার দেখতে এখন প্রতিদিনই শতশত মানুষ ভিড় করছে বিপেন রায়ের বাড়িতে। তিনি তার স্বপ্নের এই চেয়ার প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিতে চান।

ঢাকা থেকে সেগুন কাঠ নিয়ে এসে চেয়ারের কাজ শুরু করেন বিপিন। তিন মাস ধরে রাত-দিন পরিশ্রম করে চেয়ারের কাজ শেষ করেছেন। এখন অপেক্ষা শুধু প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়ার।

বিপেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারের একপাশে খচিত করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত নাড়ানো ছবির দৃশ্য আর অপর পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। মাঝখানে রয়েছে নৌকার ছবি। এতে লেখা হয়েছে – বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে উচ্চারিত সেই স্লোগান ‘জয় বাংলা’। আর চেয়ারের পুরো আকৃতি সাজানো হয়েছে নৌকার আদলে।

চেয়ার তৈরির সম্পর্কে জানতে চাইলে বিপেন বলেন, যখন আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের কথা জানতে পারি। তখন ভাবলাম তিনি আমাদের এত বড় একটা উপহার দিলেন। ছোট্ট মানুষ হিসেবে আমিও প্রধানমন্ত্রীকে একটা উপহার দেওয়ার কথা ভাবলাম। এই চেয়ার তৈরি করতে গিয়ে আমাকে রাতদিন পরিশ্রম করতে হয়েছে। কবে কাজ শেষ করতে পারবো এই চিন্তায় ছিলাম। আমার স্বপ্ন আমি যেন প্রধানমন্ত্রীকে উপহারটি দিতে পারি। ইতোমধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের অনেক নেতার সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তারা যেন আমার উপহারটিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেয়। তিনি যদি চেয়ারটি গ্রহণ করেন তাহলে আমার জীবন সার্থক হবে। তাকে ভালোবেসেই আমি এই চেয়ার তৈরি করেছি।

চেয়ারটি দেখতে আসা কালাম উদ্দীন বলেন, আমি প্রায় এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে তাকে চেয়ার বানানোর কাজ করতে দেখতাম। আমি তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার কথা জানান। তার এ কাজটি সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আমি মন থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই এ কাজের জন্য।

স্থানীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি গত তিন মাস থেকে দেখছি বিপিন দাদা খুব কষ্ট করে মনোযোগ দিয়ে চেয়ারটি বানিয়েছেন। আমি মনে করেছিলাম কেউ বানাতে দিয়েছে। পরে উনি বললেন, এটা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেবেন। একজন কাঠমিস্ত্রির এমন ভালোবাসার উপহার দেখে আমরা সবাই মুগ্ধ। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী এটি গ্রহণ করুক।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ও ১৪ নম্বর রাজাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ ইসলাম বলেন, আমি চেয়ারটি দেখতে গিয়েছিলাম। বিপেন অনেক সুন্দর করে এই চেয়ারটি তৈরি করেছেন। মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করেছেন তিনি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো তিনি যেন চেয়ারটি গ্রহণ করেন। বিপন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবেই এই চেয়ার তৈরি করেছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দেশের বিচার ও আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন : শিল্প উপদেষ্টা

প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেয়ার জন্য চেয়ার বানালেন কাঠমিস্ত্রি

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৫:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

ছোট বেলা থেকে কাঠের সঙ্গে মিতালী বিপেন রায়ের। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে কাঠ দিয়ে বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করেন তিনি। দীর্ঘদিন কাঠের জিনিসপত্র তৈরি করা বিপেন কাঠ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য কিছু করার চিন্তা করেন। সেই ভাবনা থেকেই প্রধানমন্ত্রীর জন্য চেয়ার বানানোর পরিকল্পনা তার মাথায় আসে। যা তিনি উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে দিবেন। বিপেন রায় ঠাকুরগাঁও জেলার সালান্দর গ্রামের বাসিন্দা।

পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের পর থেকে ভাবনা ছিল, প্রধানমন্ত্রীর জন্য কিছু করার। শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও সাধ্যের জায়গা থেকে বানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও নৌকা খচিত দৃষ্টিনন্দন এ চেয়ারটি।

সেই ভাবনা থেকেই শুরু করেন চেয়ার বানানোর কাজ। নিজের হাতের দক্ষতা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য তৈরি করলেন নৌকার আদলে এক অসাধারণ চেয়ার। এই চেয়ার দেখতে এখন প্রতিদিনই শতশত মানুষ ভিড় করছে বিপেন রায়ের বাড়িতে। তিনি তার স্বপ্নের এই চেয়ার প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিতে চান।

ঢাকা থেকে সেগুন কাঠ নিয়ে এসে চেয়ারের কাজ শুরু করেন বিপিন। তিন মাস ধরে রাত-দিন পরিশ্রম করে চেয়ারের কাজ শেষ করেছেন। এখন অপেক্ষা শুধু প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়ার।

বিপেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারের একপাশে খচিত করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত নাড়ানো ছবির দৃশ্য আর অপর পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। মাঝখানে রয়েছে নৌকার ছবি। এতে লেখা হয়েছে – বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে উচ্চারিত সেই স্লোগান ‘জয় বাংলা’। আর চেয়ারের পুরো আকৃতি সাজানো হয়েছে নৌকার আদলে।

চেয়ার তৈরির সম্পর্কে জানতে চাইলে বিপেন বলেন, যখন আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের কথা জানতে পারি। তখন ভাবলাম তিনি আমাদের এত বড় একটা উপহার দিলেন। ছোট্ট মানুষ হিসেবে আমিও প্রধানমন্ত্রীকে একটা উপহার দেওয়ার কথা ভাবলাম। এই চেয়ার তৈরি করতে গিয়ে আমাকে রাতদিন পরিশ্রম করতে হয়েছে। কবে কাজ শেষ করতে পারবো এই চিন্তায় ছিলাম। আমার স্বপ্ন আমি যেন প্রধানমন্ত্রীকে উপহারটি দিতে পারি। ইতোমধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের অনেক নেতার সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তারা যেন আমার উপহারটিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেয়। তিনি যদি চেয়ারটি গ্রহণ করেন তাহলে আমার জীবন সার্থক হবে। তাকে ভালোবেসেই আমি এই চেয়ার তৈরি করেছি।

চেয়ারটি দেখতে আসা কালাম উদ্দীন বলেন, আমি প্রায় এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে তাকে চেয়ার বানানোর কাজ করতে দেখতাম। আমি তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার কথা জানান। তার এ কাজটি সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আমি মন থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই এ কাজের জন্য।

স্থানীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি গত তিন মাস থেকে দেখছি বিপিন দাদা খুব কষ্ট করে মনোযোগ দিয়ে চেয়ারটি বানিয়েছেন। আমি মনে করেছিলাম কেউ বানাতে দিয়েছে। পরে উনি বললেন, এটা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেবেন। একজন কাঠমিস্ত্রির এমন ভালোবাসার উপহার দেখে আমরা সবাই মুগ্ধ। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী এটি গ্রহণ করুক।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ও ১৪ নম্বর রাজাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ ইসলাম বলেন, আমি চেয়ারটি দেখতে গিয়েছিলাম। বিপেন অনেক সুন্দর করে এই চেয়ারটি তৈরি করেছেন। মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করেছেন তিনি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো তিনি যেন চেয়ারটি গ্রহণ করেন। বিপন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবেই এই চেয়ার তৈরি করেছেন।