Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রথম ৪০ মিনিটেই টিকিটের জন্য আড়াই কোটি হিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রেলওয়ের সার্ভারে ঈদের টিকেট কাটতে চাপ ব্যাপক সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ঈদের আগের ২১ এপ্রিলের টিকিট সকাল ৮টায় অনলাইনে বিক্রি শুরু হয়। এরপর ২৬ হাজার ৪৪৬টি টিকিটের জন্য প্রথম ৪০ মিনিটে আড়াই কোটি হিট পড়েছে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, সকাল ৮টা থেকে চার ঘণ্টা আপ্রাণ চেষ্টা করেও সার্ভারে প্রবেশ করতে না পেরে অনেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে চলে এসেছেন।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেলের আগাম টিকিট বিক্রির শেষদিন মঙ্গলবারও উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীর চাপ বেশি ছিল। এছাড়াও এদিন প্রথম এক ঘণ্টায় বিক্রি হয়েছে জামালপুর, নেত্রকোনা, যশোর, খুলনা, নোয়াখালী রুটের টিকিট।

অন্যদিনের তুলনায় আজ সার্ভারে বেশি হিট পড়ায় প্রথম তিন ঘণ্টা সমস্যা দেখা দেয়। তবে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সমস্যা কেটে যায়। পশ্চিমাঞ্চলের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রি শুরু হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। পূর্বাঞ্চলের কিছু টিকিট শুরুতে অবিক্রীত থাকে।

এদিন ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী সিল্কসিটি, পদ্মা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেসের টিকিট সকাল ৯টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। ময়মনসিংহ, জামালপুর রুটের চলাচলকারী অগ্নিবীণা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, জামালপুর ও তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের চাহিদাও ছিল অনেক বেশি। প্রথম ঘণ্টায়ই বিক্রি হয়ে যায় সব টিকিট।

উত্তরবঙ্গগামী একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট প্রথম এক ঘণ্টায় শেষ হয়ে যায়। ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা রুটের মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেসের দেড় হাজার টিকিটও বিক্রি হয়ে গেছে। চট্টলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর, মহানগর প্রভাতী, তূর্ণা ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের অধিকাংশ টিকিট শুরু দিকে বিক্রি হয়ে যায়।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, এবারই প্রথম অনলাইনে টিকিটি বিক্রি হচ্ছে। এতে নতুন নতুন সমস্যা সামনে আসছে। এগুলো সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সিডিউল করে টিকিট বিক্রির পরামর্শও পেয়েছি। সব বিষয় আমলে নিয়ে পরবর্তীতে বসব। আশা করি, ধীরে ধীরে একটা সমাধানের মধ্যে আসবে।

তিনি বলেন, ২৭ হাজার টিকিটের জন্য যখন আড়াই কোটি হিট পড়ে তখন সার্ভারে সমস্যা হবেই। তারপরও সোমবার ও রোববার সার্ভার জটিলতা ছাড়াই টিকিট কিনতে পেরেছেন যাত্রীরা। শনিবারের সমস্যা গত দুই দিনে কাটিয়ে উঠতে পারলেও আজ কিছুটা সমস্যা হয়েছে। সক্ষমতার চেয়ে শতগুণেরও বেশি হিট পড়ছে অনলাইনে। কারও ভাগ্যে টিকিট জুটছে, কারও নয়। তবে আমরা শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে টিকিট বিক্রি করছি।

সাইদুর রহমান নামে একজন যাত্রী বলেন, সব অঞ্চলের টিকিট একসঙ্গে না ছেড়ে সময় ভাগ করে ছাড়লে সার্ভারের লোড কমানো সম্ভব হতো। তার মতে, সকাল ৮টা থেকে ১০টা উত্তরাঞ্চলের টিকিট, ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সিলেট ও চট্টগ্রাম, ১২ থেকে ২টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের টিকিট বিক্রির সিডিউল দিলে সার্ভারের জটিলতা কমানো যেত। এখন সব টিকিট একসঙ্গে ছাড়ার কারণে লাখ লাখ মানুষ সার্ভারে হিট করছে। এতে লটারির মতো হয়ে যাচ্ছে। কেউ কোনরকমে ঢুকতে পারলেই তিনি ভাগ্যবান ব্যক্তি হয়ে যাচ্ছেন। যাত্রীদের হয়রানি কমানোর জন্য যেহেতু এ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে, তাই সার্ভারের জটিলতা কীভাবে কমানো যায় তা নিয়ে আগামীতে রেল কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত।

রেল সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে রেলের টিকিট কাটার জন্য নিবন্ধন করেছে ১৮ লাখ মানুষ। অনলাইনে ঈদের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১৫ এপ্রিল।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৭ এপ্রিল ১৮৫০০, ৮ এপ্রিল ২৫২০০ এবং ৯ এপ্রিল ২৪৫০০ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। সোমবার ২৭ হাজারের কিছু বেশি টিকিট বিক্রি হয়। মঙ্গলবার ২১ এপ্রিলের জন্য নির্ধারিত ২৬ হাজার ৪৪৬টি টিকিট কিনতে যুদ্ধ করছে কয়েক লাখ মানুষ।

যারা টিকিট পাচ্ছেন না তাদের জন্য আসনবিহীন টিকিট বিক্রি হবে। ঢাকা-চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ছাড়া বাকি ৩৬টি আন্তঃনগর ট্রেনে শুধু যাত্রার দিন আসনবিহীন ২৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার। তিনি জানান, অবিক্রীত টিকিটও যাত্রার আগে কাউন্টার থেকে কাটতে পারবেন যাত্রীরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

প্রথম ৪০ মিনিটেই টিকিটের জন্য আড়াই কোটি হিট

প্রকাশের সময় : ০৩:৪০:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রেলওয়ের সার্ভারে ঈদের টিকেট কাটতে চাপ ব্যাপক সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ঈদের আগের ২১ এপ্রিলের টিকিট সকাল ৮টায় অনলাইনে বিক্রি শুরু হয়। এরপর ২৬ হাজার ৪৪৬টি টিকিটের জন্য প্রথম ৪০ মিনিটে আড়াই কোটি হিট পড়েছে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, সকাল ৮টা থেকে চার ঘণ্টা আপ্রাণ চেষ্টা করেও সার্ভারে প্রবেশ করতে না পেরে অনেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে চলে এসেছেন।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেলের আগাম টিকিট বিক্রির শেষদিন মঙ্গলবারও উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীর চাপ বেশি ছিল। এছাড়াও এদিন প্রথম এক ঘণ্টায় বিক্রি হয়েছে জামালপুর, নেত্রকোনা, যশোর, খুলনা, নোয়াখালী রুটের টিকিট।

অন্যদিনের তুলনায় আজ সার্ভারে বেশি হিট পড়ায় প্রথম তিন ঘণ্টা সমস্যা দেখা দেয়। তবে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সমস্যা কেটে যায়। পশ্চিমাঞ্চলের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রি শুরু হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। পূর্বাঞ্চলের কিছু টিকিট শুরুতে অবিক্রীত থাকে।

এদিন ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী সিল্কসিটি, পদ্মা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেসের টিকিট সকাল ৯টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। ময়মনসিংহ, জামালপুর রুটের চলাচলকারী অগ্নিবীণা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, জামালপুর ও তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের চাহিদাও ছিল অনেক বেশি। প্রথম ঘণ্টায়ই বিক্রি হয়ে যায় সব টিকিট।

উত্তরবঙ্গগামী একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট প্রথম এক ঘণ্টায় শেষ হয়ে যায়। ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা রুটের মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেসের দেড় হাজার টিকিটও বিক্রি হয়ে গেছে। চট্টলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর, মহানগর প্রভাতী, তূর্ণা ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের অধিকাংশ টিকিট শুরু দিকে বিক্রি হয়ে যায়।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, এবারই প্রথম অনলাইনে টিকিটি বিক্রি হচ্ছে। এতে নতুন নতুন সমস্যা সামনে আসছে। এগুলো সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সিডিউল করে টিকিট বিক্রির পরামর্শও পেয়েছি। সব বিষয় আমলে নিয়ে পরবর্তীতে বসব। আশা করি, ধীরে ধীরে একটা সমাধানের মধ্যে আসবে।

তিনি বলেন, ২৭ হাজার টিকিটের জন্য যখন আড়াই কোটি হিট পড়ে তখন সার্ভারে সমস্যা হবেই। তারপরও সোমবার ও রোববার সার্ভার জটিলতা ছাড়াই টিকিট কিনতে পেরেছেন যাত্রীরা। শনিবারের সমস্যা গত দুই দিনে কাটিয়ে উঠতে পারলেও আজ কিছুটা সমস্যা হয়েছে। সক্ষমতার চেয়ে শতগুণেরও বেশি হিট পড়ছে অনলাইনে। কারও ভাগ্যে টিকিট জুটছে, কারও নয়। তবে আমরা শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে টিকিট বিক্রি করছি।

সাইদুর রহমান নামে একজন যাত্রী বলেন, সব অঞ্চলের টিকিট একসঙ্গে না ছেড়ে সময় ভাগ করে ছাড়লে সার্ভারের লোড কমানো সম্ভব হতো। তার মতে, সকাল ৮টা থেকে ১০টা উত্তরাঞ্চলের টিকিট, ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সিলেট ও চট্টগ্রাম, ১২ থেকে ২টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের টিকিট বিক্রির সিডিউল দিলে সার্ভারের জটিলতা কমানো যেত। এখন সব টিকিট একসঙ্গে ছাড়ার কারণে লাখ লাখ মানুষ সার্ভারে হিট করছে। এতে লটারির মতো হয়ে যাচ্ছে। কেউ কোনরকমে ঢুকতে পারলেই তিনি ভাগ্যবান ব্যক্তি হয়ে যাচ্ছেন। যাত্রীদের হয়রানি কমানোর জন্য যেহেতু এ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে, তাই সার্ভারের জটিলতা কীভাবে কমানো যায় তা নিয়ে আগামীতে রেল কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত।

রেল সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে রেলের টিকিট কাটার জন্য নিবন্ধন করেছে ১৮ লাখ মানুষ। অনলাইনে ঈদের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১৫ এপ্রিল।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৭ এপ্রিল ১৮৫০০, ৮ এপ্রিল ২৫২০০ এবং ৯ এপ্রিল ২৪৫০০ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। সোমবার ২৭ হাজারের কিছু বেশি টিকিট বিক্রি হয়। মঙ্গলবার ২১ এপ্রিলের জন্য নির্ধারিত ২৬ হাজার ৪৪৬টি টিকিট কিনতে যুদ্ধ করছে কয়েক লাখ মানুষ।

যারা টিকিট পাচ্ছেন না তাদের জন্য আসনবিহীন টিকিট বিক্রি হবে। ঢাকা-চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ছাড়া বাকি ৩৬টি আন্তঃনগর ট্রেনে শুধু যাত্রার দিন আসনবিহীন ২৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার। তিনি জানান, অবিক্রীত টিকিটও যাত্রার আগে কাউন্টার থেকে কাটতে পারবেন যাত্রীরা।