নিজস্ব প্রতিবেদক :
দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আরো ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডিএমপি’র মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গতরাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হলো। ডিবি পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের বিস্তারিত পরিচয় পরে গণমাধ্যমকে অবহিত করা হবে।
দেশের শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত হিসেবে সোমবার পর্যন্ত ৩১ জনকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে ১৯ জনকে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) গ্রেফতার করার কথা পুলিশ জানায়। গ্রেফতাকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৩ জন লুটপাট এবং চারজন হামলার সঙ্গে জড়িত বলে জানায় পুলিশ। বাকিদের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। আজ আরও ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রোববার রাতে তেজগাঁও থানায় মামলা করা হয়। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ১৫ আসামিকে সোমবার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, ১৮ ডিসেম্বর রাতে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ও ফার্মগেটে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ মামলা করেছে। ডেইলি স্টারের মামলা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ শেষে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দুই প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় জড়িতদের থানা পুলিশ, ডিবি, সিটিটিসি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সিসিটিভি-ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শনাক্তের কাজ করছে। এ পর্যন্ত থানা পুলিশ ১৩ জন, সিটিটিসি তিনজন, ডিবি একজনসহ মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তারা হলেন- মোহাম্মদ নাইম, আকাশ আহমেদ সাগর, আব্দুল আহাদ, বিপ্লব, নজরুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ, মো. জাহাঙ্গীর, মোহাম্মদ সোহেল রানা, মো. হাসান, রাসেল ওরফে সাকিল, আব্দুল বারেক শেখ ওরফে আলামিন, রাশেদুল ইসলাম, সোহেল রানা, শফিকুল ইসলাম, মো. প্রান্ত সিকদার ওরফে ফয়সাল আহমেদ প্রান্ত, আবুল কাশেম, রাজু হোসাইন চাঁদ ও সাইদুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ১৭ জন গ্রেপ্তারের কথা জানালেও মূল অপরাধীরা এখনও ধরা পড়েনি। সামাজিক মাধ্যমে যেসব হামলাকারীর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়েছে, তারা এখনও অধরা। অবশ্য ৩১ জনকে শনাক্তের কথা জানিয়েছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, সামাজিক মাধ্যমে উস্কানি ও সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগেও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রোববার রাতে তেজগাঁও থানায় মামলা হয়। সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে প্রথম আলোর এক কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় প্রথম আলো পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ এবং অফিসের কাজে বাধা দিতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, অনলাইনে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নির্দেশনা দেওয়া ও অন্তর্ঘাতমূলক কাজের অভিযোগ আনা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়েছে, হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সময় লুটপাট করা সম্পদের মূল্য দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা।
নিজস্ব প্রতিবেদক 





















