Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশ হেফাজতে দুদকের সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যু

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা পুলিশ হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপ-পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল পার্কভিউতে হৃদরোগ জনিত সমস্যায় তার মৃত্যু হয়। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি-উত্তর) পংকজ দত্ত।

নিহতের ছেলে ক্যাপ্টেন নাফিস শহিদ বলেন, রাত ১১টার দিকে চান্দগাঁও থানার দুজন সহকারী উপপরিদর্শক গিয়ে আমার বাবাকে থানায় নিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার চাচারা থানায় যান। উনি হার্টের পেশেন্ট, ওনার ইনহেলার আর মেডিসিন লাগে সবসময়। বাবাকে থানায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মূলফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইনহেলার ও মেডিসিনও বাবার কাছে পৌঁছাতে দেয়নি। পরে ১২টার দিকে বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা।

তিনি আরও বলেন, আমি ঢাকায় ছিলাম। আমাদের জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ ছিল। তবে সাম্প্রতিক কোনো মামলার বিষয়ে আমরা শুনিনি। এমনকি আমার বাবা আদালত থেকে কোনো নোটিশও পাননি।

দুদক কর্মকর্তা শহিদুল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে পুলিশ হত্যা করেছে বলে অভিযোগ নিহতের আরেক ছেলে আসিফ শহিদের। তিনি বলেন, কোনো ওয়ারেন্ট না দেখিয়েই ধস্তাধস্তি করে বাবাকে নিয়ে গেছে তারা। বাবা দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। ন্যূনতম সম্মানটা উনাকে দেয়নি তারা। মার্ডার করেছে তারা, স্প্রেটা পর্যন্ত দিতে দেয়নি। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

আসিফ শহিদ আরও বলেন, বাবাকে দুদিক থেকে দুজন ও একজন পেছনে শার্টের কলার ধরে ছিলেন। তবে সিসিটিভি ক্যামেরা যেখানে যেখানে আছে সেটা পয়েন্ট আউট করে সেখান দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে গেছে।

পুলিশের এডিসি পংকজ দত্ত বলেন, একটি সিআর মামলায় রাতে তাকে গ্রেফতার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতারের ১৫ মিনিট পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চানগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাইরুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারের পর বয়স্ক লোক হওয়ায় দুদকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রথমে আমার কক্ষে আনা হয়। তিনি হঠাৎ সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে তাঁকে ওষুধ দেন। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন দ্রুত তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহত ব্যক্তির ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

পুলিশ হেফাজতে দুদকের সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১২:২২:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা পুলিশ হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপ-পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল পার্কভিউতে হৃদরোগ জনিত সমস্যায় তার মৃত্যু হয়। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি-উত্তর) পংকজ দত্ত।

নিহতের ছেলে ক্যাপ্টেন নাফিস শহিদ বলেন, রাত ১১টার দিকে চান্দগাঁও থানার দুজন সহকারী উপপরিদর্শক গিয়ে আমার বাবাকে থানায় নিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার চাচারা থানায় যান। উনি হার্টের পেশেন্ট, ওনার ইনহেলার আর মেডিসিন লাগে সবসময়। বাবাকে থানায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মূলফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইনহেলার ও মেডিসিনও বাবার কাছে পৌঁছাতে দেয়নি। পরে ১২টার দিকে বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা।

তিনি আরও বলেন, আমি ঢাকায় ছিলাম। আমাদের জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ ছিল। তবে সাম্প্রতিক কোনো মামলার বিষয়ে আমরা শুনিনি। এমনকি আমার বাবা আদালত থেকে কোনো নোটিশও পাননি।

দুদক কর্মকর্তা শহিদুল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে পুলিশ হত্যা করেছে বলে অভিযোগ নিহতের আরেক ছেলে আসিফ শহিদের। তিনি বলেন, কোনো ওয়ারেন্ট না দেখিয়েই ধস্তাধস্তি করে বাবাকে নিয়ে গেছে তারা। বাবা দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। ন্যূনতম সম্মানটা উনাকে দেয়নি তারা। মার্ডার করেছে তারা, স্প্রেটা পর্যন্ত দিতে দেয়নি। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

আসিফ শহিদ আরও বলেন, বাবাকে দুদিক থেকে দুজন ও একজন পেছনে শার্টের কলার ধরে ছিলেন। তবে সিসিটিভি ক্যামেরা যেখানে যেখানে আছে সেটা পয়েন্ট আউট করে সেখান দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে গেছে।

পুলিশের এডিসি পংকজ দত্ত বলেন, একটি সিআর মামলায় রাতে তাকে গ্রেফতার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতারের ১৫ মিনিট পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চানগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাইরুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারের পর বয়স্ক লোক হওয়ায় দুদকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রথমে আমার কক্ষে আনা হয়। তিনি হঠাৎ সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে তাঁকে ওষুধ দেন। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন দ্রুত তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহত ব্যক্তির ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।