Dhaka রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ করে অর্থ আদায়ের অভিযোগেনারীসহ গ্রেফতার ৭

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি :

পুলিশ পরিচয়ে ইজিবাইকসহ দুইজনকে অপহরণ করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে তিনজন নারীসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে নীলফামারী সদর পুলিশ।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন নীলফামারী পৌর শহরের কুখাপাড়া পশ্চিম কুচিয়ার মোড় (ফকিরপাড়া) এলাকার আলী হোসেনের স্ত্রী হাবিবা আক্তার বৃষ্টি (২৬), কুখাপাড়া ধনিপাড়া এলাকার মৃত কছিম উদ্দিনের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (৬২), জাহেদুলের স্ত্রী বানু বেগম (৫০), তাদের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার (১৮), একই এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে এজাজুল ইসলাম (২২), বকুল হোসেনের ছেলে লাইম ইসলাম (২০) ও ওই এলাকার মাহফুজার রহমানের ছেলে নাঈম ইসলাম (১৯)।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেলে আদালতে মাধ্যমে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

পুলিশ জানায়, নীলফামারী সদর উপজেলার পলাশবাড়ী পটুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা তার ভাতিজা রহিম বাদশা(৩০) ও ইজিবাইক চালক লাল মিয়ার (২৮) মাধ্যমে জেলা শহরের বিভিন্ন দোকানে বেকারীর মালামাল পৌঁছানোর কাজ করান। গত ১১ মার্চ রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের কাছে বেকারীর মালামাল নির্ধারিত দোকানে দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চান। তখন তারা তাকে কান্নাকাটি করে বলেন, আমাদের রক্ষা করেন। তখন তিনি ভাতিজার কাছে ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে তার ভাতিজা তাকে জানায়, ২৫ বছরের একজন মহিলা ও ১৪ থেকে ১৫ বছরের এক মেয়ে তাদের ইজিবাইকে করে কালীতলা ক্যানেলের রাস্তার পার্শ্ব থেকে সাইফুন হাজী মার্কেট সংলগ্ন খালুয়ার ব্রিজ বাজারে যাইতে চান ও ইজিবাইকে উঠে বসেন। তাদের কথা মত ক্যানেলের রাস্তা দিয়া কিছুদূর যাওয়ার পর ৪ থেকে ৫টি মোটরসাইকেলে অজ্ঞাত ১৪ থেকে ১৫ জন মিলে তাদের ইজিবাইকের পথরোধ করে পুলিশের পরিচয় প্রদান করে মারধর শুরু করেন এবং তাদের কাছে থাকা বেকারীর মালামাল বিক্রির নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন।

একপর্যায়ে গোলাম মোস্তফা ভাতিজার ফোনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বলেন যে, তোমার লোককে বাঁচাইতে চাইলে এখনই তার বিকাশ ও নগদ নাম্বারে এক লক্ষ টাকা প্রদান করলে তাকে অটোরিক্সাসহ আমরা ছেড়ে দিব। না হইলে তারে আর ফেরত পাবেন না। পরে বিষয়টি স্থানীয় ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি তার ভাতিজা রহিম বাদশার বিকাশ নাম্বারে ৫ হাজার টাকা পাঠান। এতে চাহিদা মোতাবেক টাকা না পাঠানোয় ভুক্তভোগীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আরও মারধর করতে থাকেন অপহরণকারীরা।

এক পর্যায়ে রহিম বাদশার মোবাইল থেকে ফোন করে বাকি ৯৫ হাজার টাকা পাঠানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়। এসময় তাকে মারধরের শব্দ শুনানো হয়। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন মিলে ঘটনাস্থলের আশপাশের সাইফুন হাজী মার্কেট সংলগ্ন খালুয়ার ব্রিজ এলাকায় ক্যানেলের পাড় সহ বিভিন্ন জায়গায় রাত ১১ টা পর্যন্ত খোঁজাখুজি করেন মোস্তফা। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিষয়টি থানায় জানিয়ে রাতেই একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। পরে নীলফামারী সদর উপজেলার চাঁদের হাট, হাতীবান্ধা, বাদিয়ার মোড়, ক্যানেল, পাঁচমাথা, কালীতলা ও হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার ও অপহরণের শিকার ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে পুলিশ।

এসময় গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে দুইটি মোটর সাইকেল, একটি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও ৬টি পুরাতন ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ।

ওসি আরও বলেন, মামলার পরেই রাতেই অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতার ব্যক্তিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে বিদেশে-অনলাইনে পরে থাকতে হবে : তারেককে ইঙ্গিত করে পাটওয়ারী

পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ করে অর্থ আদায়ের অভিযোগেনারীসহ গ্রেফতার ৭

প্রকাশের সময় : ০১:২৯:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি :

পুলিশ পরিচয়ে ইজিবাইকসহ দুইজনকে অপহরণ করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে তিনজন নারীসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে নীলফামারী সদর পুলিশ।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন নীলফামারী পৌর শহরের কুখাপাড়া পশ্চিম কুচিয়ার মোড় (ফকিরপাড়া) এলাকার আলী হোসেনের স্ত্রী হাবিবা আক্তার বৃষ্টি (২৬), কুখাপাড়া ধনিপাড়া এলাকার মৃত কছিম উদ্দিনের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (৬২), জাহেদুলের স্ত্রী বানু বেগম (৫০), তাদের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার (১৮), একই এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে এজাজুল ইসলাম (২২), বকুল হোসেনের ছেলে লাইম ইসলাম (২০) ও ওই এলাকার মাহফুজার রহমানের ছেলে নাঈম ইসলাম (১৯)।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেলে আদালতে মাধ্যমে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

পুলিশ জানায়, নীলফামারী সদর উপজেলার পলাশবাড়ী পটুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা তার ভাতিজা রহিম বাদশা(৩০) ও ইজিবাইক চালক লাল মিয়ার (২৮) মাধ্যমে জেলা শহরের বিভিন্ন দোকানে বেকারীর মালামাল পৌঁছানোর কাজ করান। গত ১১ মার্চ রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের কাছে বেকারীর মালামাল নির্ধারিত দোকানে দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চান। তখন তারা তাকে কান্নাকাটি করে বলেন, আমাদের রক্ষা করেন। তখন তিনি ভাতিজার কাছে ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে তার ভাতিজা তাকে জানায়, ২৫ বছরের একজন মহিলা ও ১৪ থেকে ১৫ বছরের এক মেয়ে তাদের ইজিবাইকে করে কালীতলা ক্যানেলের রাস্তার পার্শ্ব থেকে সাইফুন হাজী মার্কেট সংলগ্ন খালুয়ার ব্রিজ বাজারে যাইতে চান ও ইজিবাইকে উঠে বসেন। তাদের কথা মত ক্যানেলের রাস্তা দিয়া কিছুদূর যাওয়ার পর ৪ থেকে ৫টি মোটরসাইকেলে অজ্ঞাত ১৪ থেকে ১৫ জন মিলে তাদের ইজিবাইকের পথরোধ করে পুলিশের পরিচয় প্রদান করে মারধর শুরু করেন এবং তাদের কাছে থাকা বেকারীর মালামাল বিক্রির নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন।

একপর্যায়ে গোলাম মোস্তফা ভাতিজার ফোনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বলেন যে, তোমার লোককে বাঁচাইতে চাইলে এখনই তার বিকাশ ও নগদ নাম্বারে এক লক্ষ টাকা প্রদান করলে তাকে অটোরিক্সাসহ আমরা ছেড়ে দিব। না হইলে তারে আর ফেরত পাবেন না। পরে বিষয়টি স্থানীয় ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি তার ভাতিজা রহিম বাদশার বিকাশ নাম্বারে ৫ হাজার টাকা পাঠান। এতে চাহিদা মোতাবেক টাকা না পাঠানোয় ভুক্তভোগীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আরও মারধর করতে থাকেন অপহরণকারীরা।

এক পর্যায়ে রহিম বাদশার মোবাইল থেকে ফোন করে বাকি ৯৫ হাজার টাকা পাঠানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়। এসময় তাকে মারধরের শব্দ শুনানো হয়। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন মিলে ঘটনাস্থলের আশপাশের সাইফুন হাজী মার্কেট সংলগ্ন খালুয়ার ব্রিজ এলাকায় ক্যানেলের পাড় সহ বিভিন্ন জায়গায় রাত ১১ টা পর্যন্ত খোঁজাখুজি করেন মোস্তফা। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিষয়টি থানায় জানিয়ে রাতেই একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। পরে নীলফামারী সদর উপজেলার চাঁদের হাট, হাতীবান্ধা, বাদিয়ার মোড়, ক্যানেল, পাঁচমাথা, কালীতলা ও হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার ও অপহরণের শিকার ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে পুলিশ।

এসময় গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে দুইটি মোটর সাইকেল, একটি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও ৬টি পুরাতন ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ।

ওসি আরও বলেন, মামলার পরেই রাতেই অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতার ব্যক্তিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।