নিজস্ব প্রতিবেদক :
সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের ইস্যুটি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের নেতাদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, হঠাৎ করে পিআর পদ্ধতির দাবি সামনে এনে আন্দোলন করার বিষয়টি যারা দ্রুত নির্বাচন চান তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। বিষয়টি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে পরবর্তী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে। এখন পিআর দিলে জনগণ বুঝবেই না, এটা আসলে কী।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ আরেকবার রায় দেবে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থার চেষ্টা চলছে। যদিও সেটা বিঘ্ন করার বিভিন্ন অপচেষ্টা দেখা যায়।
তিনি বলেন, সংসদের উচ্চকক্ষে সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রাখা হবে। চার কোটি বেকারের সংকট সমাধানে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। দল ক্ষমতায় এলে দেড় বছরে এই সমস্যার সমাধান হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ আরেকবার রায় দেবে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থার চেষ্টা চলছে। যদিও সেটা বিঘ্ন করার বিভিন্ন অপচেষ্টা দেখা যায়।
এ সময় পিআর পদ্ধতির নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হঠাৎ করে পিআর পদ্ধতির দাবি সামনে এনে আন্দোলন করার বিষয়টি পরিষ্কার নয়। বিষয়টি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে পরবর্তী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে।
সংসদ পদ্ধতির প্রসঙ্গে তুলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি উচ্চকক্ষের কথা বলেছে। এটি নতুন অভিজ্ঞতা। কিন্তু নিম্নকক্ষ অবাস্তব।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব ধরনের ষড়যন্ত্রের ঊর্ধ্বে উঠে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে। এজন্য একটি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। ১৭ তারিখে আমরা আশা করছি, যেসব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন, সেখানে সাক্ষর হবে। যেগুলোতে মতপার্থক্য আছে, সেগুলো জনগণের কাছে নির্বাচনের মাধ্যমে ছেড়ে দিতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, হঠাৎ করে পিআর পদ্ধতির দাবি সামনে এনে আন্দোলন করা বিষয়টি যারা দ্রুত নির্বাচন চান তাদের কাছে বোধগম্য নয়। এটি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে সেখানে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে, পরবর্তী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, রাজনীতিতে একধরনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলিয়ে দিতে চায়। আমরা সেই মুক্তিযুদ্ধকে ভুলে যেতে চাই না। আমরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
তিনি আরও যোগ করেন, দেশে গত ১৫ বছর ধরে একটি ফ্যাসিস্ট শাসন ছিল। একটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা সেই ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে মুক্ত হয়েছি। এখন দেশের মানুষ আশা করছে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার গঠন করবে। এজন্য সারাদেশে আমাদের সমর্থকদের অংশগ্রহণ জরুরি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচন হবে জনগণের রায়ের প্রকৃত প্রতিফলন। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই বোঝা যাবে—আমরা সত্যিই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করতে পেরেছি কিনা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খ্রিষ্টান ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রেসিডেন্ট ফাদার আলবার্ট রোজারিও। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ খ্রিষ্টান ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অনিল লিও কস্তা। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, কারিতাস এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. বেনেডিক্ট আলো ডি’ রোজারিও, কোর দি জুট ওয়াকস্-এর পরিচালক রীতা রোজলিন কস্তা, দি মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান প্রতাপ আগস্টিন গমেজ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট-এর চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, বিএনপি ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক অ্যাডভোকেট জন গমেজ, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট-এর ট্রাস্টি ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুশীল বড়ুয়া, দ্য খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড (ঢাকা)-এর প্রেসিডেন্ট মাইকেল গমেজ, খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট-এর ট্রাস্টি মৃগেন হাগিদক, মন্টু পিটার রোজারিও, ফনিন্দ্রনাথ কর্মকার ও জ্যাকশন পিউরিফিকেশন, হীড বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক পাস্টর আনোয়ার হোসেন, ওয়াইএমসিএ-এর প্রেসিডেন্ট বাবলু ডেভিড গমেজ, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের পরিচালক চন্দন জাকারিয়াস গমেজ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক লুইস গমেজ ও শীতল রিবেরু প্রমুখ।
সভায় বক্তারা ধর্মীয় সম্প্রীতি, সংখ্যালঘু অধিকার ও আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ হবে গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক ও সকল ধর্ম-বর্ণের সহাবস্থানের একটি দেশ।