Dhaka মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকুন্দিয়ায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত প্রায় ১২ হাজার পশু

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : 

আর মাত্র দুইদিন পর মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। দেশে নিম্নচাপের দরুন বৃষ্টির কারনে গত কয়েকদিন কোরবানির হাটে ক্রেতা বিক্রেতা কম ছিল। কোরবানির সময় ও দিন যতই এগিয়ে আসছে দিনের আবহাওয়া যেরকমই থাকুক জমে উঠেছে কোরবানির হাট। এবারের ঈদুল আযহায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় একটি পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়নের মোট চাহিদার চেয়ে পশুর আমদানি বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নে ২ হাজার ৬৫১টি ছোট-বড় খামারি ও প্রান্তিক কৃষক ১২ হাজার ২৯৬টি বিভিন্ন জাতের গরু, ছাগল ও ভেড়া পালন করছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতের গরু ৮ হাজার ৮২২টি, বিভিন্ন জাতের ছাগল ৩ হাজার ২৯৫টি ও ভেড়া ১৭১টি।

উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১১ হাজার ২৯৬টি। এই চাহিদা মিটিয়ে এক হাজার পশু এ উপজেলার বাইরেও বিক্রি করতে পারবে কৃষকরা। উপজেলায় এবার স্থায়ী ও অস্থায়ী অন্তত ১৮টি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা হবে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে কৃষক ও খামারিদের ব্যস্ততা তত বাড়ছে। খাদ্যের জোগানও তত বাড়ানো হচ্ছে। কোরবানির পশুগুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করতে গমের ভূষি, ছোলা, খেসারি ও মসুরের ভূষি খাওয়ানো হচ্ছে। গরুকে নিয়মিত গোসল করানো, সময়মতো খাবার দেওয়া, ঘর পরিষ্কারসহ বিভিন্ন কাজ করছেন তারা। কোনরকম ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রক্রিয়া ছাড়াই প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে পশু মোটাতাজাকরণে নিচ্ছেন বাড়তি যত্ন। যাতে ভালো দামে বিক্রি করতে পারেন পশুগুলো। তবে এবছর গোখাদ্য ও ওষুধের লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে গরু লালন-পালনে খরচ বেড়েছে কয়েক গুন। ফলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। চোরাই পথে দেশের বাইরে থেকে গরু না এলে ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে খামারিরা আশা করছেন।

উপজেলার দরগা বাজার এলাকার রুবেল এগ্রো ফার্মের মালিক রুবেল মিয়া জানান, তার খামারে ৪০টি গরু রয়েছে। তিনি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালন পালন করছেন। তিনি গরুগুলোকে গমের ভূষি, ছোলা, খেসারি ও মসুরের ভূষি খাওয়াচ্ছেন। সবগুলো গরুই স্থানীয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে কিনে খামারে এনে লালন পালন করছেন তিনি।

মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের খামারি রিপন মিয়া জানান, এবারের ঈদে বিক্রি করার জন্য ১৬টি গরু প্রস্তুত করেছেন। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাইয়ে তিনি গরুগুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, গোখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারনে প্রতিটি গরুর পিছনে খরচ অনেক বেশি পড়েছে। তবে তিনি ঈদের বাজারের গরুর দাম নিয়ে শংকিত। কারন বাইরে থেকে চোরাই পথে যদি গরু আসে তবে দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, ফলে গরু বিক্রি করে লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে তিনি মনে করেন।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইফ উদ্দীন আহমেদ বলেন, এবার পাকুন্দিয়ায় ঈদ উল আযহায় বিক্রি করার জন্য ১২ হাজার ২৯৬টি গবাদি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। চাহিদা রয়েছে ১১ হাজার ২৯৬টি পশুর। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে গরুগুলো লালন-পালন করছেন গৃহস্থ ও খামারিরা। কোনরকম স্টেরয়েড ঔষধ ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে তাদের।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাকুন্দিয়ায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত প্রায় ১২ হাজার পশু

প্রকাশের সময় : ০১:০০:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : 

আর মাত্র দুইদিন পর মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। দেশে নিম্নচাপের দরুন বৃষ্টির কারনে গত কয়েকদিন কোরবানির হাটে ক্রেতা বিক্রেতা কম ছিল। কোরবানির সময় ও দিন যতই এগিয়ে আসছে দিনের আবহাওয়া যেরকমই থাকুক জমে উঠেছে কোরবানির হাট। এবারের ঈদুল আযহায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় একটি পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়নের মোট চাহিদার চেয়ে পশুর আমদানি বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নে ২ হাজার ৬৫১টি ছোট-বড় খামারি ও প্রান্তিক কৃষক ১২ হাজার ২৯৬টি বিভিন্ন জাতের গরু, ছাগল ও ভেড়া পালন করছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতের গরু ৮ হাজার ৮২২টি, বিভিন্ন জাতের ছাগল ৩ হাজার ২৯৫টি ও ভেড়া ১৭১টি।

উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১১ হাজার ২৯৬টি। এই চাহিদা মিটিয়ে এক হাজার পশু এ উপজেলার বাইরেও বিক্রি করতে পারবে কৃষকরা। উপজেলায় এবার স্থায়ী ও অস্থায়ী অন্তত ১৮টি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা হবে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে কৃষক ও খামারিদের ব্যস্ততা তত বাড়ছে। খাদ্যের জোগানও তত বাড়ানো হচ্ছে। কোরবানির পশুগুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করতে গমের ভূষি, ছোলা, খেসারি ও মসুরের ভূষি খাওয়ানো হচ্ছে। গরুকে নিয়মিত গোসল করানো, সময়মতো খাবার দেওয়া, ঘর পরিষ্কারসহ বিভিন্ন কাজ করছেন তারা। কোনরকম ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রক্রিয়া ছাড়াই প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে পশু মোটাতাজাকরণে নিচ্ছেন বাড়তি যত্ন। যাতে ভালো দামে বিক্রি করতে পারেন পশুগুলো। তবে এবছর গোখাদ্য ও ওষুধের লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে গরু লালন-পালনে খরচ বেড়েছে কয়েক গুন। ফলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। চোরাই পথে দেশের বাইরে থেকে গরু না এলে ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে খামারিরা আশা করছেন।

উপজেলার দরগা বাজার এলাকার রুবেল এগ্রো ফার্মের মালিক রুবেল মিয়া জানান, তার খামারে ৪০টি গরু রয়েছে। তিনি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালন পালন করছেন। তিনি গরুগুলোকে গমের ভূষি, ছোলা, খেসারি ও মসুরের ভূষি খাওয়াচ্ছেন। সবগুলো গরুই স্থানীয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে কিনে খামারে এনে লালন পালন করছেন তিনি।

মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের খামারি রিপন মিয়া জানান, এবারের ঈদে বিক্রি করার জন্য ১৬টি গরু প্রস্তুত করেছেন। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাইয়ে তিনি গরুগুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, গোখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারনে প্রতিটি গরুর পিছনে খরচ অনেক বেশি পড়েছে। তবে তিনি ঈদের বাজারের গরুর দাম নিয়ে শংকিত। কারন বাইরে থেকে চোরাই পথে যদি গরু আসে তবে দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, ফলে গরু বিক্রি করে লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে তিনি মনে করেন।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইফ উদ্দীন আহমেদ বলেন, এবার পাকুন্দিয়ায় ঈদ উল আযহায় বিক্রি করার জন্য ১২ হাজার ২৯৬টি গবাদি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। চাহিদা রয়েছে ১১ হাজার ২৯৬টি পশুর। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে গরুগুলো লালন-পালন করছেন গৃহস্থ ও খামারিরা। কোনরকম স্টেরয়েড ঔষধ ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে তাদের।