আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
পাকিস্তানে সামরিক গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৯ জন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িবহর লক্ষ্য করে চালানো আত্মঘাতী ওই হামলায় হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে রেখেছে বলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বান্নু জেলায় বৃহস্পতিবারের এ হামলার জন্য এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি।
মোটরসাইকেল আরোহী আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটায়। হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার। তিনি নিহত সেনাদের শহিদ উল্লেখ করে তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
দেশটির সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর জানিয়েছে, আফগানিস্তানের সীমান্ত থেকে প্রায় ৬১ কিলোমিটার দূরে ‘মোটরসাইকেল আরোহী আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটায়’। দুর্গম এ সীমান্ত এলাকা দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গি তৎপরতার আস্তানা বলে পরিচিত।
দেশটির প্রাদেশিক মন্ত্রী ফিরোজ জামাল শাহ বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী মোটরসাইকেল আরোহী ছিল এবং সে মোটরসাইকেল নিয়ে সামরিক কনভয়ের মধ্যে থাকা ট্রাককে ধাক্কা দেয়। আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নুতে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আলজাজিরা বলছে, পাকিস্তানের অশান্ত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলটি মূলত আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা। সশস্ত্র যোদ্ধা এবং সরকারের মধ্যে আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর গত বছর থেকে পাকিস্তানের এই অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে।
এই হামলার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি। তবে সন্দেহের তীর গিয়ে পড়ছে পাকিস্তানি তালেবানদের ওপর। কারণ তারা ২০২২ সাল থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা বাড়িয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তানের বান্নু এলাকা উত্তর ওয়াজিরিস্তানের প্রাক্তন জঙ্গি ঘাঁটির কাছে অবস্থিত, যেটি বিদ্রোহীরা ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করত। সেনাবাহিনী কয়েক বছর আগে স্থানীয় এবং বিদেশী জঙ্গিদের অঞ্চলটি থেকে প্রতিহত করে। তবে মাঝে মাঝেই হামলার ঘটনা ঘটে। এই অঞ্চলের স্থানীয় তালেবানরা ‘তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান’ নামে পরিচিত।
যারা এলাকায় পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে, যা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তানি তালেবান একটি পৃথক গোষ্ঠী হলেও আফগান তালেবানদের সহযোগী।
গত মাসে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে আত্মঘাতী হামলায় ৬০ জনের বেশি নিহত হয়েছিলেন। এর আগে জানুয়ারিতে তেহরিক ই তালিবান একটি মসজিদ প্রাঙ্গনে হামলা চালালো ৮০ জনেরও বেশি সেনা কর্মকর্তা নিহত হন।