আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয় প্রদেশে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে ছয় সেনা নিহত হয়েছেন। অপরদিকে সেনাদের গুলিতে প্রাণ গেছে ছয় সন্ত্রাসীর। নিহত সেনাদের মধ্যে এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও আছেন।
শনিবার (৫ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৪ ও ৫ অক্টোবর আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী উত্তর ওয়াজিরিস্তানের স্পিনওয়ামে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে একজন লেফটেনেন্ট কর্নেলসহ ছয় সেনা এবং ছয় ‘খারেজি’ নিহত হয়েছে।
এদিকে সেনাদের ওপর এই হামলার দায় শিকার করেছে সন্ত্রাসী সংগঠন তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)।
পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বলেছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহসী সেনাদের এই আত্মত্যাগ আমাদের সংকল্পকে আরও দৃঢ় করবে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলায় প্রায় ৯৩০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নিরাপত্তাকর্মী। এই সময়ে আহত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার মানুষ।
চলতি বছরের মার্চ মাসে উত্তর ওয়াজিরিস্তানের একটি সামরিক চৌকিতে আত্মঘাতী হামলায় সাতজন নিরাপত্তা সদস্য প্রাণ হারান। ওই এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
২০০৭ সালে আত্মপ্রকাশ করা টিটিপি প্রায় সময় পাকিস্তানের সেনাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। তাদের দেশটির সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে একটি বাতিল সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
পাকিস্তান সরকারের অভিযোগ আফগানিস্তানের সহায়তায় টিটিপি তাদের কার্যক্রম চালায়। যদিও তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগান সরকার এই অভিযোগ সবসময় অস্বীকার করে থাকে।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সেনাদের হটিয়ে পুনরায় আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। এরপরই পাকিস্তানে সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা বন্ধের আশা অনেকটা ফিকে হয়ে যায়। এই টিটিপির কারণে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে খুবই খারাপ সম্পর্ক বিরাজমান রয়েছে।
সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, কয়েক বছর আগে তারা এই অঞ্চল বিদ্রোহীদের থেকে মুক্ত করেছে। কিন্তু মাঝে মধ্যেই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ফলে পাকিস্তানে তালেবান নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানি তালেবান এবং আফগান তালেবান দুটি আলাদা গোষ্ঠী হলেও তাদের মধ্যে মিত্রতা রয়েছে। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতা দখলের পর থেকে পাকিস্তানি তালেবান দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে, বিশেষত উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 
























