আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
পাকিস্তানের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) তার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। তিনি দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু তিনি।
এছাড়া শেখ রশিদ আহমেদ আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রধান নেতা। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার আওয়ামী মুসলিম লীগের নেতা শেখ রশিদ (৭২) কে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তার রাওয়ালপিন্ডির বাহরিয়া টাউনে বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ভাগ্নে শেখ রশিদ আহমেদে।
আইনজীবী সরদার আব্দুল রাজ্জাক দাবি করেন, সাদা পোশাকের থাকা একদল রশিদকে তার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে ‘অজ্ঞাত স্থানে’ নিয়ে গেছে।
তার ভাগ্নে শেখ রশিদ শফিক এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ৭২ বছর বয়সী রশিদ আহমেদ ও তার দুই সহযোগীকে রাওয়ালপিন্ডির বাহরিয়া টাউনে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পরে তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শেখ শফিক বলেন, ‘আমি বিচার বিভাগের শীর্ষ পর্যায়কে এভাবে একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে নজর দিতে অনুরোধ করছি, কারণ তিনি কোনও মামলায় ওয়ান্টেড ছিলেন না।’
তিনি আরও বলেন, তার বড় ভাই এবং একজন ভৃত্যকেও রোববার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
অবশ্য গ্রেপ্তার করা হলেও রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। শেখ রশিদ আহমেদ আওয়ামী মুসলিম লীগ তথা এএমএল পার্টির প্রধান এবং তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। এছাড়া ইমরানের সরকারে তিনি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।
এদিকে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ মাইক্রোব্লগিং এক্স (টুইটার) এ একটি পোস্টে শেখ রশিদ এ গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে। পোস্টে বলা হয়েছে, ‘এবার শেখ রশিদকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো যে রাজনৈতিক নিপীড়ন ও ফ্যাসিবাদ অব্যাহত রয়েছে।’
তবে গ্রেফতারের পরে এখনো রশিদ আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত কোনো কিছু প্রকাশ করা হয়নি।
চলতি বছরের মে মাসে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের জেরে পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ-সহিংসতা হয়। পরে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপে ইমরান কারাগার থেকে মুক্তি পলেও তার দল পিটিআইয়ের ওপর নেমে আসে ব্যাপক দমন-পীড়ন। এরই একপর্যায়ে ইমরানের দলের বহু নেতাকর্মী দল ছাড়তে বাধ্য হয় এবং অনেকে নতুন দল গঠন করে।
তবে রাষ্ট্রীয় এই দমন-পীড়নের মধ্যেও ইমরান খানের পাশেই ছিলেন শেখ রশিদ আহমেদ। আর এবার তাকে আটক করা হলো। যদিও রশিদের বিরুদ্ধে কোনও পরোয়ানা ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে। আর তাই রশিদের গ্রেপ্তার গত ৯ মের সহিংসতার ঘটনায় শুরু হওয়া ক্র্যাকডাউনের অংশ বলে মনে হচ্ছে।
এর আগে চলতি বছরের জুনের শুরুতে এএমএল নেতা শেখ রশিদ অভিযোগ করেছিলেন, ইসলামাবাদ পুলিশ তার বাড়িতে ঢুকে তার গৃহকর্মীদের মারধর করেছে।
তিনি আরও দাবি করেছিলেন, দ্বিতীয় একটি ঘটনায় ‘সাধারণ পোশাক পরিহিত বাহিনী’ রাওয়ালপিন্ডিতে তার লাল হাভেলির বাসভবনে কর্মচারীদের নির্যাতন করেছিল।