স্পোর্টস ডেস্ক :
পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে হারলেও দ্বিতীয়টিতে শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় সুপার ওভারে দুর্দান্ত জয় পায় বাংলাদেশ। এ জয়ে সিরিজে সমতায় ফেরে টাইগ্রেসরা। ফলে আজকের তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচটি হয়ে দাঁড়িয়েছে সিরিজ নির্ধারণী। গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচে আজ সকালে মিরপুরে টসে জিতে পাকিস্তান আগে ব্যাটিং নেয়ার পর নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রানের সংগ্রহ গড়ে। পরে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই টাইগ্রেস ওপেনারের রেকর্ড ওপেনিং জুটিতে হেসেখেলে ৭ উইকেটের দুর্দান্ত জয়ে ইতিহাস গড়ে সিরিজ নিজেদের করেছে বাংলাদেশ। ফলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতল টাইগ্রেসরা।
এর আগে সিরিজের প্রথমে ম্যাচে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ৫ উইকেট হারতে হয়েছিল। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে বোলারদের নৈপুণ্যে ১৬৯ রানের টার্গেট দিয়ে পাকিস্তানকে ১৬৯ রানেই আটকে দিয়েছিল টাইগ্রেসরা। এরপর সুপার ওভারে নাহিদা আক্তারের দুর্দান্ত বোলিং আর ব্যাটিংয়ে সোবানা মোস্তারি ও নিগার সুলতানার জ্যোতির বীরত্বে জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তোলে পাকিস্তান। টার্গেট তাড়ায় বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ১২৫ রান। নারী দলের ওয়ানডে ইতিহাসে উদ্বোধনীতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে শুকতারা রহমান ও শারমিন আক্তারের করা ১১৩ রান ছিল সর্বোচ্চ জুটি।
দলের জয়ের জন্য মাত্র ৪২ রান প্রয়োজন তখন নাশরা সান্ধুর বলে এলবিডব্লিউ হন ফারজানা হক। সাজঘরে ফেরার আগে ১১৩ বলে ৫ চারের মারে খেলেন ৬২ রানের দারুণ এক ইনিংস। নারীদের ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশিদের মধ্যে আগে থেকেই সর্বোচ্চ রান ছিল ফারজানার। আজকের অর্ধশতক ছিল তার ১০ম। প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০ অর্ধশতক ফারজানার, ওয়ানডে ক্রিকেটে একমাত্র সেঞ্চুরিও তার দখলে।
ফারজানার পর আরেক ওপেনার মুর্শিদাকেও ফেরান নাশরা। মাঠ ছাড়ার আগে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন মুর্শিদা। আগের ক্যারিয়ার সেরা ৫১ রানের ইনিংস ছাপিয়ে ১০৬ বলে ৬ চারের মারে এদিন তিনি করেন ৫৪ রান। এরপর ক্রিজে নেমে নিগার সুলতানা জ্যোতির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে বল মোকাবিলার আগেই রান আউট হন ফাহিমা।
তবে আর কোনো উইকেটের পতন হতে দেননি জ্যোতি আর সোবানা মোস্তারি জুটি। তারা দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। মোস্তারি ৩০ বলে ১৯ আর জ্যোতি ২৫ বলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। পাকিস্তানের হয়ে ২ উইকেট নেন নাশরা সিন্ধু।
এর আগে, টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৬৫ রান যোগ করেন দুই ওপেনার সিদরা আমিন ও সাদাফ শামস। ৬১ বলে ৩১ রান করে নাহিদা আক্তারের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন সাদাফ। সেখান থেকে মুনিবা আলিকে নিয়ে সংক্ষিপ্ত জুটি গড়ে তোলেন সিদরা। ৯৩ রানের মাথায় মুনিবাকে হারায় পাকিস্তান। এরপরই ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। একসময় ১২৮ রানে ৭ উইকেট খোয়ায় পাকিস্তান।
কিন্তু সিদরা আমিনের দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার পর্যন্ত ব্যাট চালিয়ে যায় পাকিস্তান। ১৪৩ বলে মাত্র ৩ চারে ৮৪ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন সিদরা।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে নাহিদা আক্তার সর্বোচ্চ তিনটি উইকটে নিযেছেন। এছাড়া রাবেয়া খান দুটি এবং ফাহিমা খাতুন, নিশিতা আক্তার ও স্বর্ণা আক্তার একটি করে উইকেট নিয়েছেন।