Dhaka মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, এগিয়ে ইমরান সমর্থিত প্রার্থীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর থেকেই চলছে ভোটগণনা, সঙ্গে চলছে ফল প্রকাশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছেন কারাবন্দি ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ঘোষণা হওয়া ১০৬টি আসনের ফলাফলে ৪৭টিতেই জয় পেয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দেশটির মোট সংসদীয় আসন ২৬৫টি।

এদিকে, বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ২৪টি আসনে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে, এবারের নির্বাচনে যাকে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী বলে বিবেচনা করা হচ্ছিল, সেই নওয়াজ শরীফ পেয়েছেন মাত্র ১৮টি আসন। আর ১৬টি আসন পেয়েছে অন্যান্য রাজনৈতিক দল। একটির ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই পাকিস্তানি গণমাধ্যমগুলোতে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এগিয়ে থাকার খবর আসতে থাকে। অন্যদিকে, সবচেয়ে বেশি হাইলাইট পাওয়া নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) পিছিয়ে থাকার খবর আসে।

এমনকি, নিজস্ব দুই আসনেও নওয়াজ পিছিয়ে রয়েছেন বলে জানা যায়। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, খাইবার পাখতুনখাওয়ার এনএ- ১৫ মানসেহরা আসনে ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদা গাস্তাসাপের কাছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটে পরাজতি হয়েছেন নওয়াজ শরিফ।

অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা যায়, এনএ- ১৫ আসনে নওয়াজ শরিফ ৬৩ হাজার ৫৪টি ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে, শাহজাদা গাস্তাসাপ পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৭১৩ ভোট। অর্থাৎ ১১ হাজার ৬৫৯ ভোটে পরাজিত হন নওয়াজ।

তবে লাহোরের এনএ- ১৫ (লাহোর ১৪) আসনে জয়লাভ করেছেন নওয়াজ শরিফ। এই আসনে তিনি ১ লাখ ৭১ হাজার ২৪ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত ড. ইয়াসমিন রশিদ পেয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৩ ভোট।

মূলত ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) দল হিসাবে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের নির্বাচনী প্রতীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আর তাই ইমরানের দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

বিশ্লেষকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, এই নির্বাচনে কোনও দলই স্পষ্ট বিজয়ী নাও হতে পারে। মূলত বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ বন্ধ হওয়ার ১৮ ঘণ্টা পরে কিছু ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে, যা পাকিস্তানের যেকোনও নির্বাচনের জন্য বেশ অস্বাভাবিক।

রয়টার্স বলছে, ‘ইন্টারনেট সমস্যার’ কারণে ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে বলে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) বিশেষ সচিব জাফর ইকবাল দাবি করেছেন। তবে এর চেয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি তিনি।

সরকার দাবি করেছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুরক্ষিত করার অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার নির্বাচনের আগে মোবাইল ফোন পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল এবং সেগুলোই এখন আংশিকভাবে চালু করা হয়েছে।

সদ্য সমাপ্ত এই নির্বাচনে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) প্রার্থীদের মধ্যে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) গত জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে কে আসলে বিজয়ী হবেন তা স্পষ্ট না হলেও এটি নির্ধারণে পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর ক্ষমতাধর জেনারেলরা বেশ বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। স্বাধীনতার পর থেকে গত ৭৬ বছরে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশটিতে আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয় (বৃহস্পতিবার ভোট হয়েছে ২৬৫টি আসনে)। আর ৭০টি আসন সংরক্ষিত। এর মধ্যে ৬০টি আসন নারীদের ও ১০টি আসন অমুসলিম প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত।

সরকার গঠন করতে কোনও দল বা জোটকে কমপক্ষে ১৬৯টি আসনে জয় নিশ্চিত করতে হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

উড়োজাহাজ সংকটে কুয়েত ও দুবাইগামী দুই ফ্লাইট বাতিল

পাকিস্তানের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, এগিয়ে ইমরান সমর্থিত প্রার্থীরা

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৭:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর থেকেই চলছে ভোটগণনা, সঙ্গে চলছে ফল প্রকাশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছেন কারাবন্দি ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ঘোষণা হওয়া ১০৬টি আসনের ফলাফলে ৪৭টিতেই জয় পেয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দেশটির মোট সংসদীয় আসন ২৬৫টি।

এদিকে, বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ২৪টি আসনে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে, এবারের নির্বাচনে যাকে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী বলে বিবেচনা করা হচ্ছিল, সেই নওয়াজ শরীফ পেয়েছেন মাত্র ১৮টি আসন। আর ১৬টি আসন পেয়েছে অন্যান্য রাজনৈতিক দল। একটির ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই পাকিস্তানি গণমাধ্যমগুলোতে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এগিয়ে থাকার খবর আসতে থাকে। অন্যদিকে, সবচেয়ে বেশি হাইলাইট পাওয়া নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) পিছিয়ে থাকার খবর আসে।

এমনকি, নিজস্ব দুই আসনেও নওয়াজ পিছিয়ে রয়েছেন বলে জানা যায়। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, খাইবার পাখতুনখাওয়ার এনএ- ১৫ মানসেহরা আসনে ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদা গাস্তাসাপের কাছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটে পরাজতি হয়েছেন নওয়াজ শরিফ।

অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা যায়, এনএ- ১৫ আসনে নওয়াজ শরিফ ৬৩ হাজার ৫৪টি ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে, শাহজাদা গাস্তাসাপ পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৭১৩ ভোট। অর্থাৎ ১১ হাজার ৬৫৯ ভোটে পরাজিত হন নওয়াজ।

তবে লাহোরের এনএ- ১৫ (লাহোর ১৪) আসনে জয়লাভ করেছেন নওয়াজ শরিফ। এই আসনে তিনি ১ লাখ ৭১ হাজার ২৪ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত ড. ইয়াসমিন রশিদ পেয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৩ ভোট।

মূলত ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) দল হিসাবে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের নির্বাচনী প্রতীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আর তাই ইমরানের দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

বিশ্লেষকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, এই নির্বাচনে কোনও দলই স্পষ্ট বিজয়ী নাও হতে পারে। মূলত বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ বন্ধ হওয়ার ১৮ ঘণ্টা পরে কিছু ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে, যা পাকিস্তানের যেকোনও নির্বাচনের জন্য বেশ অস্বাভাবিক।

রয়টার্স বলছে, ‘ইন্টারনেট সমস্যার’ কারণে ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে বলে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) বিশেষ সচিব জাফর ইকবাল দাবি করেছেন। তবে এর চেয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি তিনি।

সরকার দাবি করেছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুরক্ষিত করার অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার নির্বাচনের আগে মোবাইল ফোন পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল এবং সেগুলোই এখন আংশিকভাবে চালু করা হয়েছে।

সদ্য সমাপ্ত এই নির্বাচনে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) প্রার্থীদের মধ্যে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) গত জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে কে আসলে বিজয়ী হবেন তা স্পষ্ট না হলেও এটি নির্ধারণে পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর ক্ষমতাধর জেনারেলরা বেশ বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। স্বাধীনতার পর থেকে গত ৭৬ বছরে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশটিতে আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয় (বৃহস্পতিবার ভোট হয়েছে ২৬৫টি আসনে)। আর ৭০টি আসন সংরক্ষিত। এর মধ্যে ৬০টি আসন নারীদের ও ১০টি আসন অমুসলিম প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত।

সরকার গঠন করতে কোনও দল বা জোটকে কমপক্ষে ১৬৯টি আসনে জয় নিশ্চিত করতে হবে।