Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাংশায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি সংস্কারকাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজবাড়ীর পাংশা হেডকোয়ার্টার থেকে মৃগী পর্যন্ত প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়কের প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়েও শেষ হয়নি সংস্কারকাজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতায় কাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই পথে চলাচলকারীরা। ভাঙা সড়কে প্রতিদিন ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পুরো সড়ক ধুলায় জর্জরিত। ভারী যানবাহন গেলে ধুলায় সড়ক অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। যানবাহনের চলাচলে অল্পতেই রাস্তায় তৈরি হচ্ছে খানাখন্দ। আবার বৃষ্টিতে খানাখন্দে জমেছে পানি। আবার কোথাও কোথাও জমছে কাদা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙা সড়কে প্রতিদিনই ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকার পাশাপশি ধুলাবালিতে রোগাক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানান তারা।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে পাংশা হেডকোয়ার্টার থেকে মৃগী পর্যন্ত ১০ হাজার ৯০০ মিটার সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। সড়কটি সংস্কার কাজে ব্যয় ধরা হয় ১১ কোটি ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৭১ টাকা। কাজটি পায় মীর হাবিবুল আলমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। যে কারণে সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়। বাড়ানো সময় অনুযায়ী চলতি বছরের ২৮ জুন কাজ শেষ করার কথা।

পাংশার মৈশালা বাজারের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিন বছর আগে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হলেও তা এখনো শেষ হয়নি। রাস্তায় খোয়া বিছিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ রেখেছে। এতে রাস্তায় চলাচল করা কষ্ট হচ্ছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এছাড়া ধুলাবালিতে দোকানের মধ্যে বসে থাকায় যায় না।

স্থানীয় সবুজ সরদার বলেন, ধুলাবালিতে সড়কে চলাচল করা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য কষ্টকর হচ্ছে। দ্রুত এই সড়ক সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

ভ্যানচালক আজিবর মন্ডল বলেন, রাস্তার বেহাল দশার কারণে অনেকেই এখন ঝাঁকুনির ভয়ে ভ্যানে উঠতে চাই না। বড় বড় খানাখন্দের ফলে প্রায়ই ভ্যান উল্টে যাচ্ছে, চাকা লিক হয়ে যাচ্ছে। কি আর করবো পেটের দায়ে তাও বের হতে হয়।

ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক কুদ্দুস শেখ বলেন, সড়কের এ বেহাল অবস্থার কারণে দুই মিনিটের গন্তব্যে পৌঁছাতে ১০ মিনিটেরও বেশি সময় লাগে। ভাঙা রাস্তার জন্য আমাদের গাড়ির প্রচুর ক্ষতি হয়। তিন বছর ধরে আমরা কষ্ট করে চলছি। আমরা তো অসহায় হয়ে গেছি। কার কাছে বলব কষ্টের কথা। বলার কোনো জায়গা নেই।

তবে এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রাজবাড়ীর সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, কাজটি শেষ করতে ঠিকাদারকে বিভিন্ন সময় চিঠি দেওয়া হয়েছে। তার যে ব্যাংক গ্যারান্টি আমাদের কাছে আছে তা এনক্যাশমেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে আমরা চিঠি দিয়েছি। ব্যাংক এনক্যাশমেন্টের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে ঠিকাদারও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি ২-৩ দিনের মধ্যে সড়কের কাজ শুরু করবেন বলে আমাদের কথা দিয়েছেন। যদি তিনি কাজ না শুরু করেন, তাহলে আমরা চুক্তি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

পাংশায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি সংস্কারকাজ

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৬:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজবাড়ীর পাংশা হেডকোয়ার্টার থেকে মৃগী পর্যন্ত প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়কের প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়েও শেষ হয়নি সংস্কারকাজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতায় কাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই পথে চলাচলকারীরা। ভাঙা সড়কে প্রতিদিন ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পুরো সড়ক ধুলায় জর্জরিত। ভারী যানবাহন গেলে ধুলায় সড়ক অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। যানবাহনের চলাচলে অল্পতেই রাস্তায় তৈরি হচ্ছে খানাখন্দ। আবার বৃষ্টিতে খানাখন্দে জমেছে পানি। আবার কোথাও কোথাও জমছে কাদা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙা সড়কে প্রতিদিনই ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকার পাশাপশি ধুলাবালিতে রোগাক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানান তারা।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে পাংশা হেডকোয়ার্টার থেকে মৃগী পর্যন্ত ১০ হাজার ৯০০ মিটার সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। সড়কটি সংস্কার কাজে ব্যয় ধরা হয় ১১ কোটি ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৭১ টাকা। কাজটি পায় মীর হাবিবুল আলমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। যে কারণে সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়। বাড়ানো সময় অনুযায়ী চলতি বছরের ২৮ জুন কাজ শেষ করার কথা।

পাংশার মৈশালা বাজারের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিন বছর আগে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হলেও তা এখনো শেষ হয়নি। রাস্তায় খোয়া বিছিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ রেখেছে। এতে রাস্তায় চলাচল করা কষ্ট হচ্ছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এছাড়া ধুলাবালিতে দোকানের মধ্যে বসে থাকায় যায় না।

স্থানীয় সবুজ সরদার বলেন, ধুলাবালিতে সড়কে চলাচল করা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য কষ্টকর হচ্ছে। দ্রুত এই সড়ক সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

ভ্যানচালক আজিবর মন্ডল বলেন, রাস্তার বেহাল দশার কারণে অনেকেই এখন ঝাঁকুনির ভয়ে ভ্যানে উঠতে চাই না। বড় বড় খানাখন্দের ফলে প্রায়ই ভ্যান উল্টে যাচ্ছে, চাকা লিক হয়ে যাচ্ছে। কি আর করবো পেটের দায়ে তাও বের হতে হয়।

ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক কুদ্দুস শেখ বলেন, সড়কের এ বেহাল অবস্থার কারণে দুই মিনিটের গন্তব্যে পৌঁছাতে ১০ মিনিটেরও বেশি সময় লাগে। ভাঙা রাস্তার জন্য আমাদের গাড়ির প্রচুর ক্ষতি হয়। তিন বছর ধরে আমরা কষ্ট করে চলছি। আমরা তো অসহায় হয়ে গেছি। কার কাছে বলব কষ্টের কথা। বলার কোনো জায়গা নেই।

তবে এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রাজবাড়ীর সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, কাজটি শেষ করতে ঠিকাদারকে বিভিন্ন সময় চিঠি দেওয়া হয়েছে। তার যে ব্যাংক গ্যারান্টি আমাদের কাছে আছে তা এনক্যাশমেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে আমরা চিঠি দিয়েছি। ব্যাংক এনক্যাশমেন্টের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে ঠিকাদারও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি ২-৩ দিনের মধ্যে সড়কের কাজ শুরু করবেন বলে আমাদের কথা দিয়েছেন। যদি তিনি কাজ না শুরু করেন, তাহলে আমরা চুক্তি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।