Dhaka শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যাসহ পাঁচ মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বেলা সোয়া ১১টার সময় শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাসানুল ইসলাম এই আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আসামি চিন্ময়ের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্যের নেতৃত্ব একটি টিম।

এদিকে জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালতে ব্যাপক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়।

এর আগে গত ৩ জুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে চিন্ময় দাসের জামিনের আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর হয়েছিল। এই আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়েছিল।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরসহ পাঁচ মামলায় জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তাঁর জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।

চিন্ময় দাসের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, শুনানিতে আমরা বলেছি, মামলাগুলোর এজাহারে তাঁর (চিন্ময় দাস) নাম ছিল না। পরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে এসব মামলায় আসামি করা হয়। চিন্ময় দাস অসুস্থ। তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত।

আদালত সূত্র জানায়, ১ জুলাই চিন্ময় দাসসহ ৩৮ জনকে আসামি করে আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এতে বলা হয়, চিন্ময় দাসের উসকানি ও নির্দেশে আইনজীবী সাইফুলকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ মে চিন্ময় দাসকে আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। পরে অন্য মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আদালত সূত্র জানায়, আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই মামলায় চিন্ময় দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২৬ নভেম্বর চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা, আইনজীবী-বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয় মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

প্রকাশের সময় : ০৩:০৮:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যাসহ পাঁচ মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বেলা সোয়া ১১টার সময় শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাসানুল ইসলাম এই আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আসামি চিন্ময়ের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্যের নেতৃত্ব একটি টিম।

এদিকে জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালতে ব্যাপক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়।

এর আগে গত ৩ জুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে চিন্ময় দাসের জামিনের আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর হয়েছিল। এই আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়েছিল।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরসহ পাঁচ মামলায় জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তাঁর জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।

চিন্ময় দাসের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, শুনানিতে আমরা বলেছি, মামলাগুলোর এজাহারে তাঁর (চিন্ময় দাস) নাম ছিল না। পরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে এসব মামলায় আসামি করা হয়। চিন্ময় দাস অসুস্থ। তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত।

আদালত সূত্র জানায়, ১ জুলাই চিন্ময় দাসসহ ৩৮ জনকে আসামি করে আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এতে বলা হয়, চিন্ময় দাসের উসকানি ও নির্দেশে আইনজীবী সাইফুলকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ মে চিন্ময় দাসকে আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। পরে অন্য মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আদালত সূত্র জানায়, আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই মামলায় চিন্ময় দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২৬ নভেম্বর চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা, আইনজীবী-বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয় মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন।