Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাঁচ বছরেও সোজা হয়নি হেলে পড়া সেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

টাঙ্গাইলের বাসাইলে উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়া সেতুটি দীর্ঘ পাঁচ বছরে পরেও মেরামত হয়নি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সেতুটি না থাকায় পাশ্বর্বতী ১০ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। উদ্বোধনের পূর্বেই হেলে পড়া সেতুটি উপজেলার নিরাইল এলাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে পুনরায় নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় প্রকল্প পরিচালক। কিন্তু তা আর আলোর মুখ দেখেনি। অভিযোগ রয়েছে বাসাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজশে পার পেয়ে গেছেন ওই ঠিকাদার।

সরেজমিনে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকি-ফুলবাড়ি সড়কের নিরাইল এলাকায় অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে উদ্বোধনের আগে হেলে পড়া সেই সেতুটি। দেখে মনে হয় এক অভিশপ্ত নগরীর ধ্বংসাবশেষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারবার জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সেতুটির বিষয়ে কোনো প্রকার সুরাহা হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সাত লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রতিবেদন দেন। এতে করে ওই প্রতিষ্ঠান পুনরায় কাজ শেষ না করেই সেতুটি ভেঙে ব্যবহৃত রড ও কংক্রিট নিয়ে যায়। এতে করে সড়ক ব্যবহারকারীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।

সূত্র মতে, গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে টাঙ্গাইলের ১২ উপজেলায় মোট ১২৮টি সেতু নির্মাণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ফুলকি-ফুলবাড়ী সড়কের নিরাইল এলাকায় ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স আব্দুল্লাহ এন্টারপাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই সেতুর কাজ শেষ করে প্রতিষ্ঠানটি। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করায় উদ্বোধনের আগেই সেতুটি হেলে পড়ে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে তদন্ত শেষে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে সেতুটি ফের নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
এ বিষয়ে ফুলকি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুল আলম বিজু বলেন, যখন ওই সেতুটি নির্মাণ করা হয়, তখন আমি চেয়ারম্যান ছিলাম না। তবে আমি চাই, আমার এলাকার জনগণের সুবিধার জন্য ওই স্থানে একটি সেতু পুনরায় নির্মাণ করা হোক। এ জন্য আমি খুব শীঘ্রই জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করব।

এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) সাখাওয়াত হোসেন ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের ক্ষতি হবে জেনে সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করে দেয়নি। এ ছাড়া ওই স্থানে সেতু নির্মাণের কোনো প্রকার প্রকল্প পুনরায় হাতে নেয়নি বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, দুর্নীতির বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের সুবিধার জন্য সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করার জন্য খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

পাঁচ বছরেও সোজা হয়নি হেলে পড়া সেতু

প্রকাশের সময় : ০১:৪১:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

টাঙ্গাইলের বাসাইলে উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়া সেতুটি দীর্ঘ পাঁচ বছরে পরেও মেরামত হয়নি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সেতুটি না থাকায় পাশ্বর্বতী ১০ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। উদ্বোধনের পূর্বেই হেলে পড়া সেতুটি উপজেলার নিরাইল এলাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে পুনরায় নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় প্রকল্প পরিচালক। কিন্তু তা আর আলোর মুখ দেখেনি। অভিযোগ রয়েছে বাসাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজশে পার পেয়ে গেছেন ওই ঠিকাদার।

সরেজমিনে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকি-ফুলবাড়ি সড়কের নিরাইল এলাকায় অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে উদ্বোধনের আগে হেলে পড়া সেই সেতুটি। দেখে মনে হয় এক অভিশপ্ত নগরীর ধ্বংসাবশেষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারবার জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সেতুটির বিষয়ে কোনো প্রকার সুরাহা হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সাত লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রতিবেদন দেন। এতে করে ওই প্রতিষ্ঠান পুনরায় কাজ শেষ না করেই সেতুটি ভেঙে ব্যবহৃত রড ও কংক্রিট নিয়ে যায়। এতে করে সড়ক ব্যবহারকারীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।

সূত্র মতে, গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে টাঙ্গাইলের ১২ উপজেলায় মোট ১২৮টি সেতু নির্মাণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ফুলকি-ফুলবাড়ী সড়কের নিরাইল এলাকায় ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স আব্দুল্লাহ এন্টারপাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই সেতুর কাজ শেষ করে প্রতিষ্ঠানটি। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করায় উদ্বোধনের আগেই সেতুটি হেলে পড়ে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে তদন্ত শেষে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে সেতুটি ফের নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
এ বিষয়ে ফুলকি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুল আলম বিজু বলেন, যখন ওই সেতুটি নির্মাণ করা হয়, তখন আমি চেয়ারম্যান ছিলাম না। তবে আমি চাই, আমার এলাকার জনগণের সুবিধার জন্য ওই স্থানে একটি সেতু পুনরায় নির্মাণ করা হোক। এ জন্য আমি খুব শীঘ্রই জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করব।

এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) সাখাওয়াত হোসেন ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের ক্ষতি হবে জেনে সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করে দেয়নি। এ ছাড়া ওই স্থানে সেতু নির্মাণের কোনো প্রকার প্রকল্প পুনরায় হাতে নেয়নি বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, দুর্নীতির বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের সুবিধার জন্য সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করার জন্য খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।