Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পরকীয়া সন্দেহে নারীর চুল কেটে বিবস্ত্র করে নির্যাতন

নির্যাতিতা নারী

এবার গাজীপুরে নিজের স্বামীর সঙ্গে অন্য এক নারীর পরকীয়া সন্দেহে তাকে তুলে নিয়ে আটকে রেখে মারপিট ও চুল কেটে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিক নেতা বাবুল হোসেনের স্ত্রী। এসময় বাবুলের স্ত্রীর সাথে আরও কয়েকজন সহযোগী ছিলেন। তারা নির্যাতিতা নারীকে কাঠের সঙ্গে বেঁধে রেখে শারিরিকভাবে নির্যাতন করে।

এরপর পরকীয়ায় সন্দেহ করা নারীকে শারীরিক নির্যাতন ও চুল কেটে দেয়ার পর উলঙ্গ করে তার ছবি তুলে রেখে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের দু’দিন পর দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, অন্যদেরও ধরতে অভিযান চলছে।

নগরের সালনা কাথোরা এলাকার ভিকটিম গৃহবধূ জানান, নির্যাতনের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে নিজ বাসায় যেতে পারছেন না। সামাজিক লজ্জা আর নিরাপত্তাজনিত কারণে ঠাঁই নিয়েছেন বোনের ভাড়া বাসায়।

স্বামী বাবুলের সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে গত ২৫শে অক্টোবর নগরের বাসায় ফেরার পথে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে টেনে-হিঁচড়ে নিজ ঘরে নিয়ে আট ঘণ্টা ধরে আটকে রেখে নির্যাতন করে স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক নেতা বাবুল হোসেনের স্ত্রী ও তার সহযোগী লোকজন। বেঁধে রেখে কাঠের রোল, কিল-ঘুষি ও লাথি দিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে।

এক পর্যায়ে মাথার চুল কেটে ফেলে। পরে ওই গৃহবধূর পরনের কাপড় খুলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে অভিযুক্তরা। এমন কি নির্যাতনের এই ঘটনা কাউকে জানালে ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়। বিকালে তাকে ছেড়ে দেয়ার পর স্বজনের সহযোগিতায় হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় ওই গৃহবধূ।

আরও পড়ুন : রংপুরে ধর্ষণের ঘটনায় ডিবির এএসআই রায়হানুল গ্রেফতার

এ ঘটনায় সদর থানায় বাবুলের স্ত্রী ফাহিমা আক্তারসহ পাঁচজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সামাজিক ও পারিবারিক ভাবে মান-মর্যাদা নষ্ট হয়েছে এবং এলাকাবাসীকে মুখ দেখাতে পারছেন না দাবি করে এই ঘটনার কঠোর বিচার চেয়েছেন ভিকটিমের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে। এ ছাড়াও আসামিদের পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহারসহ নানা ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

নির্যাতিত ওই গৃহবধূ স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। ওই গৃহবধূর স্বামী এলাকায় দোকান ব্যবসা করেন। ভিকটিমের ভাইয়ের চাকরি বা কর্মসংস্থানের জন্য পরিবহন শ্রমিক নেতা বাবুলের সঙ্গে একবছর আগে পরিচয় হয়েছিল গৃহবধূর।

এ জন্যই ওই গৃহবধূ মাঝে মধ্যে বাবুলের অফিসে যেতেন এবং তা বাবুলের স্বজনরা দেখার পর ধারণা হয়েছে যে, তাদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনার পর বাবুলের সঙ্গে কথা বলা না গেলেও ওই গৃহবধূ বলছেন, তার সঙ্গে বাবুলের অন্য কোনো ধরনের সম্পর্ক কিংবা পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল না। সন্দেহের ওপর ভিত্তি করেই তার ওপর নির্যাতনসহ অমানবিক কাজ করা হয়েছে।

জিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি উত্তর) মো. জাকির হাসান জানান, থানায় অভিযোগ দেয়ার পর মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি পরিবহন নেতা বাবুলের স্ত্রী ফাহিমা আক্তার ও তার সহযোগী শাহিদা খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অধিকাংশ আসামি নারী। তারা নিজেদের বাসা থেকে পালিয়ে গেছে। তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আশা করা হচ্ছে, তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

যুক্তরাষ্ট্র গেলেন শাকিব খান

পরকীয়া সন্দেহে নারীর চুল কেটে বিবস্ত্র করে নির্যাতন

প্রকাশের সময় : ০৬:৪৩:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২০

এবার গাজীপুরে নিজের স্বামীর সঙ্গে অন্য এক নারীর পরকীয়া সন্দেহে তাকে তুলে নিয়ে আটকে রেখে মারপিট ও চুল কেটে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিক নেতা বাবুল হোসেনের স্ত্রী। এসময় বাবুলের স্ত্রীর সাথে আরও কয়েকজন সহযোগী ছিলেন। তারা নির্যাতিতা নারীকে কাঠের সঙ্গে বেঁধে রেখে শারিরিকভাবে নির্যাতন করে।

এরপর পরকীয়ায় সন্দেহ করা নারীকে শারীরিক নির্যাতন ও চুল কেটে দেয়ার পর উলঙ্গ করে তার ছবি তুলে রেখে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের দু’দিন পর দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, অন্যদেরও ধরতে অভিযান চলছে।

নগরের সালনা কাথোরা এলাকার ভিকটিম গৃহবধূ জানান, নির্যাতনের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে নিজ বাসায় যেতে পারছেন না। সামাজিক লজ্জা আর নিরাপত্তাজনিত কারণে ঠাঁই নিয়েছেন বোনের ভাড়া বাসায়।

স্বামী বাবুলের সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে গত ২৫শে অক্টোবর নগরের বাসায় ফেরার পথে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে টেনে-হিঁচড়ে নিজ ঘরে নিয়ে আট ঘণ্টা ধরে আটকে রেখে নির্যাতন করে স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক নেতা বাবুল হোসেনের স্ত্রী ও তার সহযোগী লোকজন। বেঁধে রেখে কাঠের রোল, কিল-ঘুষি ও লাথি দিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে।

এক পর্যায়ে মাথার চুল কেটে ফেলে। পরে ওই গৃহবধূর পরনের কাপড় খুলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে অভিযুক্তরা। এমন কি নির্যাতনের এই ঘটনা কাউকে জানালে ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়। বিকালে তাকে ছেড়ে দেয়ার পর স্বজনের সহযোগিতায় হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় ওই গৃহবধূ।

আরও পড়ুন : রংপুরে ধর্ষণের ঘটনায় ডিবির এএসআই রায়হানুল গ্রেফতার

এ ঘটনায় সদর থানায় বাবুলের স্ত্রী ফাহিমা আক্তারসহ পাঁচজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সামাজিক ও পারিবারিক ভাবে মান-মর্যাদা নষ্ট হয়েছে এবং এলাকাবাসীকে মুখ দেখাতে পারছেন না দাবি করে এই ঘটনার কঠোর বিচার চেয়েছেন ভিকটিমের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে। এ ছাড়াও আসামিদের পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহারসহ নানা ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

নির্যাতিত ওই গৃহবধূ স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। ওই গৃহবধূর স্বামী এলাকায় দোকান ব্যবসা করেন। ভিকটিমের ভাইয়ের চাকরি বা কর্মসংস্থানের জন্য পরিবহন শ্রমিক নেতা বাবুলের সঙ্গে একবছর আগে পরিচয় হয়েছিল গৃহবধূর।

এ জন্যই ওই গৃহবধূ মাঝে মধ্যে বাবুলের অফিসে যেতেন এবং তা বাবুলের স্বজনরা দেখার পর ধারণা হয়েছে যে, তাদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনার পর বাবুলের সঙ্গে কথা বলা না গেলেও ওই গৃহবধূ বলছেন, তার সঙ্গে বাবুলের অন্য কোনো ধরনের সম্পর্ক কিংবা পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল না। সন্দেহের ওপর ভিত্তি করেই তার ওপর নির্যাতনসহ অমানবিক কাজ করা হয়েছে।

জিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি উত্তর) মো. জাকির হাসান জানান, থানায় অভিযোগ দেয়ার পর মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি পরিবহন নেতা বাবুলের স্ত্রী ফাহিমা আক্তার ও তার সহযোগী শাহিদা খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অধিকাংশ আসামি নারী। তারা নিজেদের বাসা থেকে পালিয়ে গেছে। তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আশা করা হচ্ছে, তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।