পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি :
পটুয়াখালীতে জুলাই গণ অভ্যুত্থানে শহীদের কন্যা লামিয়া ধর্ষণ মামলায় তিন আসামিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামি সিফাত ও সাকিবকে ১৩ বছর এবং ইমরান মুন্সিকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক নিলুফার শিরিন এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমরা যুক্তিতর্ক শেষে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে সক্ষম হয়েছি। যেহেতু মামলার বিচার কার্য শুরুর আগে আসামিদের শিশু হিসেবে দেখানো হয়েছে তাই আসামিদের নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৯ এর ৩ ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ এদের মধ্যে আসামি সাকিব ও সিফাত মুন্সিকে ৮ এর ৭ ধারায় পর্ণোগ্রাফি আইনে আরও ৩ বছর করে মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে শহীদ জসিম উদ্দিনের কন্যা লামিয়া (১৮) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে তিনি নিজেই বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরবর্তীতে ধর্ষণের ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে লামিয়া ২৬ এপ্রিল ঢাকার শেখেরটেক এলাকায় ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আজ এই রায় ঘোষণা করা হয়।
রায় ঘোষণার পর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমরা মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। আদালত যে ন্যায়বিচার দিয়েছেন, তা লামিয়ার আত্মার শান্তির জন্য কিছুটা হলেও সান্ত্বনা বয়ে আনবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন বলেন, এই মামলার রায় সমাজের জন্য একটি বার্তা— কেউ অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে, সে যত প্রভাবশালীই হোক না কেন।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শহিদুল ইসলাম তালুকদার বলেন, আমার মক্কেলরা নির্দোষ। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাধারণ মানুষ, নারী অধিকারকর্মী ও মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরা রায় ঘোষণার পর সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।