স্পোর্টস ডেস্ক :
রেফারির ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই ভোঁ দৌড়। ডাগআউট থেকে ফুটবলারদের সঙ্গে যোগ দিলেন সাপোর্ট স্টাফরাও। শিরোপার উল্লাস বাংলাদেশের। পিনপতন নীরবতা নেমে এলো আনফা কমপ্লেক্সের গ্যালারিতে। অবশ্য ম্যাচের প্রথমার্ধ থেকেই স্বাগতিক দর্শকদের চুপ করিয়ে রেখেছিল লাল-সবুজের দল।
বুধবার (২৮ আগস্ট) নেপালের কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিকদের ৪-১ গোলে হারিয়ে আরেকটি ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা।
সাউথ এশিয়ান গেমস ফুটবলে প্রথম স্বর্ণ, মেয়েদের সাফের একমাত্র শিরোপার পর এবার নেপালের মাটিতে অনূর্ধ্ব-২০ সাফে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ।
২০২২ সালে অনূর্ধ্ব-২০ ক্যাটগরির আসরে ভারতের বিপক্ষে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার সেমি-ফাইনালে তাদেরকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনালের মঞ্চে উঠে আসে বাড়তি আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
শুরুতে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ; কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে আধিপত্য বাড়তে থাকে নেপালের। অষ্টম মিনিটে প্রথম কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েন সেমি-ফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতের বিপক্ষে দুটি সেভ করা গোলরক্ষক আসিফ হোসেন।
বক্সের বেশ খানিকটা দূর থেকে নিরাজন ধামীর দুরপাল্লার শট অনেকটা লাফিয়ে আঙুলের টোকায় ক্রসবারের উপর দিয়ে বের করে দেন আসিফ।
ষোড়শ মিনিটে সতীর্থের থ্রু পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে ধরে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন সমীর তামাং, তবে রাজীব হোসেন ছুটে গিয়ে দারুণভাবে ক্লিয়ার করেন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও শট নিতে পারেননি সমীর।
৩০তম মিনিটে নিরাজনের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ভুল পাসে নেপালের এই ফরোয়ার্ডের পায়ে বল তুলে দিয়েছিলেন এক ডিফেন্ডার।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে মিরাজুলের ওই দৃষ্টিনন্দন গোলে বদলে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। বক্সের একটু ওপরে ফাউলের শিকার হন এই ফরোয়ার্ড, ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। মিরাজুলের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে পড়া জয়রথ শিখের গ্লাভস ফাঁকি দিয়ে পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে লুটোপুটি খায়। এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় বাংলাদেশ। যার ধারবাহিকতায় দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে মিরাজুলরা। বাঁ প্রান্ত থেকে আক্রমণে ওঠে বাংলাদেশ। বক্সের ভেতর সতীর্থের বাড়ানো ক্রসে বল পার করেন মিরাজুল। পোস্টের সামনে ফাঁকায় থেকে হেডে বল জালে জড়ান তিনি।
ম্যাচে দুই গোল হজম করে খেই হারিয়ে ফেলে নেপাল। সেই সুযোগে তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে খেলতে থাকা বাংলাদেশ ৭০তম মিনিটে ব্যবধান ৩-০ তে নিয়ে যায়। দলের তৃতীয় গোলটি আসে রাহুলের কাছ থেকে। এই গোলেও ছিল মিরাজুলের অবদান। তার যোগান দেয়া বলেই গোল করেন রাহুল।
৮১তম মিনিটে বাংলাদেশের রক্ষণ আর গোলরক্ষকের ভুলে ব্যবধান কমায় স্বাগতিক নেপাল (৩-১)। তবে ইনজুরি সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে এক হালি পূরণ করে বাংলাদেশ। বাঁ দিক থেকে রাব্বি হোসেন রাহুলের ক্রসে পিয়াশ আহমেদ নোভা গোল করে ব্যবধান ৪-১ করেন। বিজয় উল্লাসে মাতে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।