Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নেদারল্যান্ডসকে উড়িয়ে সেমির দৌড়ে আফগানিস্তান

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৯:০১:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ নভেম্বর ২০২৩
  • ১৯৪ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

নেদারল্যান্ডসের সাম্প্রতিক ফর্ম দেখে মনে হয়েছিল– আফগানিস্তানের সঙ্গে তাদের ম্যাচটা রোমাঞ্চ ছড়াবে! কিন্তু বিশ্বকাপের আর আট-দশটি ম্যাচের মতো একেবারে একপেশে এক ম্যাচ হয়ে গেল লখনৌতে। নেদারল্যান্ডসের দেওয়া ১৮০ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়ায় তেমন বেগ পেতে হয়নি আফগানিস্তানকে। যদিও শুরুর দিকে রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফিরিয়ে ভিন্ন আভাসই দিয়েছিল ডাচরা। এর পরের গল্পটা রহমত শাহ ও হাশমতউল্লাহ শহিদীর লেখা। দুজনের ব্যক্তিগত অর্ধশতকে আফগানিস্তান ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে।

সেমিফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে আফগানদের জন্য ম্যাচটি ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে ৬ ম্যাচের তিনটিতে জিতে হাশমতউল্লাহ শহিদীর দল। ডাচদের সঙ্গে ম্যাচ শেষে তারা সেই সংখ্যা ৪-এ নিয়ে গেল। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে দুটি দল সেমিতে ওঠার সুযোগ রয়েছে। এই ম্যাচ জয় সেমির পথে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে রশিদ-মুজিবদের। এরপর তাদের সামনে আরও দুটি ম্যাচ রয়েছে।

এদিন ডাচরা আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৬.৩ ওভারে ১৭৯ রানে অলআউট হয়। জবাবে রহমত শাহ ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদির অপরাজিত ফিফটিতে ভর করে ৩১.৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান করে জয় নিশ্চিত করে আফগানরা।

লক্ষ্যটা মোটেও বড় ছিল না। ১৮০ রানের লক্ষ্য খুব সহজেই পূরণ করলো আফগানিস্তান। রহমত শাহ ও হাশমতউল্লাহর হাফ সেঞ্চুরিতে নেদারল্যান্ডসকে ৭ উইকেটে হারালো তারা। বিশ্বকাপে টানা তৃতীয় জয় পেলো আফগানরা।

মোহাম্মদ নবীর ঘূর্ণিজাদুর সঙ্গে উইকেটকিপার ইকরাম আলিখিলের দুর্দান্ত কিপিংয়ে নেদারল্যান্ডসকে ১৭৯ রানে আটকে দেয় আফগানিস্তান। লক্ষ্যে নেমে অল্প রহমানউল্লাহ গুরবাজ (১০) ও ইব্রাহিম জাদরান (২০) দ্রুত আউট হলেও রহতম ও হাশমতউল্লাহর জুটিতে জয়ের ভিত গড়ে তারা। তারা দুজনে তৃতীয় উইকেটে ৭৪ রান যোগ করেন।

ইব্রাহিম টানা তৃতীয় ফিফটি উদযাপন করেন ৪৭ বল খেলে ৮টি চারে। তাকে ৫২ রানে থামতে হয় সাকিব জুলফিকারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। আগের দুই ম্যাচের মতোই অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে আসেন হাশমতউল্লাহ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। এবার ৫৯ বলে ৫ চারে বিশ্বকাপের তৃতীয় ফিফটি করেন। ৩২তম ওভারের তৃতীয় বলে জয়সূচক বাউন্ডারি হাঁকান আফগান অধিনায়ক। ৬৪ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

হাশমতউল্লাহর সঙ্গে ৫২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে এই জয়ে তার সঙ্গী ছিলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ২৮ বলে ৩১ রানে খেলছিলেন তিনি।

এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে আজ শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বসে নেদারল্যান্ডস। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই মুজিব উর রহমানের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরেন ওয়েসলি বারেসি। এর মাধ্যমে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শততম উইকেট তুলে নেন মুজিব। এটি তার ৭২তম ওয়ানডে ম্যাচ। সাম্প্রতিক সময়ে মুজিব নতুন বলে নিজেকে বেশ কার্যকরী প্রমাণ করেছেন। আউটসুইং হওয়া বলে ২২ বছর বয়সী এই অফব্রেক স্পিনার বারেসিকে ফেলেছেন লেগ বিফোরের ফাঁদে। বিক্রমজিৎ সিংয়ের বদলে ওপেন করতে নেমেই ব্যর্থ হলেন বারেসি। তিনি ফেরেন মাত্র ১ রানে।

দলীয় ৩ রানেই প্রথম উইকেট হারানোর পরও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ইউরোপের দেশটি। ম্যাক্স ও’ডাউড ও কলিন অ্যাকারম্যান মিলে গড়েন ৭০ রানের জুটি। ফিফটির পথে ছিলেন ম্যাক্স। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ২ রান নিতে গিয়ে ডিরেক্ট হিটে তার স্টাম্প ভাঙেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। এর আগে ম্যাক্স ৪০ বলে ৯টি চারের বাউন্ডারিতে ৪২ রান করেন। ফলে ডাচদের সংগ্রহ নেওয়ার পথে ছেদ পড়ে। এরপর তারা আর বড় কোনো জুটি বাধতে পারেনি।

অভিজ্ঞ ব্যাটার কলিন অ্যাকারম্যানও ক্রিজে প্রায় থিতু হচ্ছিলেন। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেনি (২৯ রান)। মিড অফে ফিল্ডারের হাতে বল দিয়ে তিনি দৌড় দেন। এরপর রশিদ ও উইকেটকিপার ইকরাম আলিখিল মিলে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান অ্যাকারম্যানকে। ৭৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো দলটি এরপর একশ পূর্ণ করার আগে পাঁচ ব্যাটারকে হারিয়ে বসে। মাঝে ব্যাটিংয়ের মূলস্তম্ভ ডাচ অধিনায়ক এডওয়ার্ডসও রানের খাতা খোলার আগে রানআউট। অপরপ্রান্তে তখনও লড়ছিলেন এঙ্গেলব্রেখ্ট।

শেষ পর্যন্ত ৮৬ বলে ৬টি চারের বাউন্ডারিতে ৫৮ করে তিনি রানআউট। এছাড়া তাদের আর কোনো ব্যাটারই উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেনি। ফলে ৪৬.৩ ওভারেই ১৭৯ রানে থামে ডাচদের ইনিংস। আফগানদের হয়ে ২৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন নবি। এছাড়া নুর আহমদ ৩১ রানে দুটি এবং মুজিব এক উইকেট নেন। ৩১ রানে উইকেটশূন্য ছিলেন রশিদ খান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নেদারল্যান্ডসকে উড়িয়ে সেমির দৌড়ে আফগানিস্তান

প্রকাশের সময় : ০৯:০১:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ নভেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

নেদারল্যান্ডসের সাম্প্রতিক ফর্ম দেখে মনে হয়েছিল– আফগানিস্তানের সঙ্গে তাদের ম্যাচটা রোমাঞ্চ ছড়াবে! কিন্তু বিশ্বকাপের আর আট-দশটি ম্যাচের মতো একেবারে একপেশে এক ম্যাচ হয়ে গেল লখনৌতে। নেদারল্যান্ডসের দেওয়া ১৮০ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়ায় তেমন বেগ পেতে হয়নি আফগানিস্তানকে। যদিও শুরুর দিকে রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফিরিয়ে ভিন্ন আভাসই দিয়েছিল ডাচরা। এর পরের গল্পটা রহমত শাহ ও হাশমতউল্লাহ শহিদীর লেখা। দুজনের ব্যক্তিগত অর্ধশতকে আফগানিস্তান ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে।

সেমিফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে আফগানদের জন্য ম্যাচটি ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে ৬ ম্যাচের তিনটিতে জিতে হাশমতউল্লাহ শহিদীর দল। ডাচদের সঙ্গে ম্যাচ শেষে তারা সেই সংখ্যা ৪-এ নিয়ে গেল। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে দুটি দল সেমিতে ওঠার সুযোগ রয়েছে। এই ম্যাচ জয় সেমির পথে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে রশিদ-মুজিবদের। এরপর তাদের সামনে আরও দুটি ম্যাচ রয়েছে।

এদিন ডাচরা আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৬.৩ ওভারে ১৭৯ রানে অলআউট হয়। জবাবে রহমত শাহ ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদির অপরাজিত ফিফটিতে ভর করে ৩১.৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান করে জয় নিশ্চিত করে আফগানরা।

লক্ষ্যটা মোটেও বড় ছিল না। ১৮০ রানের লক্ষ্য খুব সহজেই পূরণ করলো আফগানিস্তান। রহমত শাহ ও হাশমতউল্লাহর হাফ সেঞ্চুরিতে নেদারল্যান্ডসকে ৭ উইকেটে হারালো তারা। বিশ্বকাপে টানা তৃতীয় জয় পেলো আফগানরা।

মোহাম্মদ নবীর ঘূর্ণিজাদুর সঙ্গে উইকেটকিপার ইকরাম আলিখিলের দুর্দান্ত কিপিংয়ে নেদারল্যান্ডসকে ১৭৯ রানে আটকে দেয় আফগানিস্তান। লক্ষ্যে নেমে অল্প রহমানউল্লাহ গুরবাজ (১০) ও ইব্রাহিম জাদরান (২০) দ্রুত আউট হলেও রহতম ও হাশমতউল্লাহর জুটিতে জয়ের ভিত গড়ে তারা। তারা দুজনে তৃতীয় উইকেটে ৭৪ রান যোগ করেন।

ইব্রাহিম টানা তৃতীয় ফিফটি উদযাপন করেন ৪৭ বল খেলে ৮টি চারে। তাকে ৫২ রানে থামতে হয় সাকিব জুলফিকারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। আগের দুই ম্যাচের মতোই অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে আসেন হাশমতউল্লাহ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। এবার ৫৯ বলে ৫ চারে বিশ্বকাপের তৃতীয় ফিফটি করেন। ৩২তম ওভারের তৃতীয় বলে জয়সূচক বাউন্ডারি হাঁকান আফগান অধিনায়ক। ৬৪ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

হাশমতউল্লাহর সঙ্গে ৫২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে এই জয়ে তার সঙ্গী ছিলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ২৮ বলে ৩১ রানে খেলছিলেন তিনি।

এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে আজ শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বসে নেদারল্যান্ডস। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই মুজিব উর রহমানের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরেন ওয়েসলি বারেসি। এর মাধ্যমে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শততম উইকেট তুলে নেন মুজিব। এটি তার ৭২তম ওয়ানডে ম্যাচ। সাম্প্রতিক সময়ে মুজিব নতুন বলে নিজেকে বেশ কার্যকরী প্রমাণ করেছেন। আউটসুইং হওয়া বলে ২২ বছর বয়সী এই অফব্রেক স্পিনার বারেসিকে ফেলেছেন লেগ বিফোরের ফাঁদে। বিক্রমজিৎ সিংয়ের বদলে ওপেন করতে নেমেই ব্যর্থ হলেন বারেসি। তিনি ফেরেন মাত্র ১ রানে।

দলীয় ৩ রানেই প্রথম উইকেট হারানোর পরও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ইউরোপের দেশটি। ম্যাক্স ও’ডাউড ও কলিন অ্যাকারম্যান মিলে গড়েন ৭০ রানের জুটি। ফিফটির পথে ছিলেন ম্যাক্স। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ২ রান নিতে গিয়ে ডিরেক্ট হিটে তার স্টাম্প ভাঙেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। এর আগে ম্যাক্স ৪০ বলে ৯টি চারের বাউন্ডারিতে ৪২ রান করেন। ফলে ডাচদের সংগ্রহ নেওয়ার পথে ছেদ পড়ে। এরপর তারা আর বড় কোনো জুটি বাধতে পারেনি।

অভিজ্ঞ ব্যাটার কলিন অ্যাকারম্যানও ক্রিজে প্রায় থিতু হচ্ছিলেন। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেনি (২৯ রান)। মিড অফে ফিল্ডারের হাতে বল দিয়ে তিনি দৌড় দেন। এরপর রশিদ ও উইকেটকিপার ইকরাম আলিখিল মিলে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান অ্যাকারম্যানকে। ৭৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো দলটি এরপর একশ পূর্ণ করার আগে পাঁচ ব্যাটারকে হারিয়ে বসে। মাঝে ব্যাটিংয়ের মূলস্তম্ভ ডাচ অধিনায়ক এডওয়ার্ডসও রানের খাতা খোলার আগে রানআউট। অপরপ্রান্তে তখনও লড়ছিলেন এঙ্গেলব্রেখ্ট।

শেষ পর্যন্ত ৮৬ বলে ৬টি চারের বাউন্ডারিতে ৫৮ করে তিনি রানআউট। এছাড়া তাদের আর কোনো ব্যাটারই উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেনি। ফলে ৪৬.৩ ওভারেই ১৭৯ রানে থামে ডাচদের ইনিংস। আফগানদের হয়ে ২৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন নবি। এছাড়া নুর আহমদ ৩১ রানে দুটি এবং মুজিব এক উইকেট নেন। ৩১ রানে উইকেটশূন্য ছিলেন রশিদ খান।