নাটোর জেলা প্রতিনিধি :
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আপনারা নেতা হয়েছেন শুধু ভোটের জন্য না। আপনাকে নেতা করা হয়েছে যেন আপনি তাদের সঠিক পথে চালাতে পারেন। আপনি যদি বেঠিক পথে চালান তাহলে আমাদের দেশের কমপ্লিট স্ট্রাকচার ভেঙে পড়বে।
রোববার (৩ আগস্ট) সকালে নাটোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় প্রশাসন ও ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সমস্ত ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, ডিস্ট্রিক্ট ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সবটা ভেঙে পড়বে। এটাকে ৮ মাসে ১০ মাসে বা এক বছরে ঠিক করা সম্ভব নয়।
উপদেষ্টা বলেন, আপনারা প্রায়ই শুনেন, পুলিশ-প্রশাসন ঠিকমতো কাজ করছে না। তারা কাজ করবে কী করে, কারণ স্ট্রাকচারটাই শেষ। আইনের স্ট্রাকচার শেষ, প্রশাসনের স্ট্রাকচার শেষ। আপনাদেন নায্য দাবি দাওয়ার জন্য আপনারা আবেদন করতে পারেন। জেলা প্রশাসক যদি না শুনে, তাহলে আমার মন্ত্রণালয়ের দরজা আপনাদের জন্য সবসময় খোলা রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের অনেক শিল্প মালিক আছেন যারা শ্রমিকদের দেখাশোনা না করে নিজেদের দেখাশোনা করেছেন। আমাদের শ্রমিকরা যদি তাদের যথাযথ প্রাপ্য বুঝে না পায় তাহলে আমরা যে শিল্পায়নের স্বপ্ন দেখছি তা বাস্তবায়ন সম্ভব না। গত আট মাসে আমরা দুইবার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সম্মেলনে অংশ নিয়েছি। বাংলাদেশের শ্রম আইনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অতীতে যারা শ্রম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন তাদের ব্যক্তি স্বার্থ ছিল। যারা মন্ত্রী হয়েছেন তাদের নিজেদের কারখানা থাকায় শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা সম্ভব হয়নি। অতীতের এসব কারণে আমাদের কিছুটা চাপের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, আমেরিকা নানা দিক থেকে চাপ দিচ্ছে।
আমাদের রপ্তানি শিল্প সীমিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এখনো রপ্তানিমুখী শিল্পে বৈচিত্র্য আনতে পারিনি। আমাদের রপ্তানিমুখী শিল্প এখনো খুব সীমিত। আমাদের রপ্তানিমুখী শিল্পই হচ্ছে গার্মেন্টস। গার্মেন্টস কারখানার জন্যই আমাদের রপ্তানি শিল্প টিকে আছে। জাহাজ নির্মাণ শিল্প আমাদের সম্ভাবনাময় রপ্তানি শিল্প। তবে আমরা সেখানে খুব বেশি অগ্রগতি করতে পারিনি।
শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের উদ্দেশ করে উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। বিনা কারণে কোনো কারখানার শ্রমিকদের উত্তেজিত করে কারখানার ক্ষতি করা যাবে না। কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে সেই কারখানার কর্মীরা কর্মহারা গিয়ে পড়েন। তাই নেতাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
এ সময় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ মুক্তাদির আরেফিনসহ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।