আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাড়িতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। তেল আবিবের সিজারিয়ায় অবস্থিত তার বাসভবনে এই হামলা চালানো হয়। নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে যে, তেল আবিবের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত তার বাসভবনে হিজবুল্লাহর একটি ড্রোন আঘাত হেনেছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) এই হামলা হয়।
তবে ওই হামলার সময় নেতানিয়াহু বা তার পরিবারের কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে। এই হামলার ঘটনায় কেউ হতাহতও হয়নি।
ইসরায়েলের সামরিক সূত্র রয়টার্সকে জানায়, শনিবার (১৯ অক্টোবর) উত্তর ইসরায়েলের শহর সিজারিয়াতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন লক্ষ্য করে একটি ড্রোন হামলা হয়।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, ড্রোনটি লেবানন থেকে এসেছে। একইসঙ্গে আরও দুটি ড্রোন ইসরায়েলের সীমান্ত অতিক্রম করেছিল। সেগুলো ধ্বংস করতে সমর্থ হয়েছে তারা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও নেতানিয়াহুর দপ্তর উভয়ই ড্রোন হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ড্রোনটি লেবানন থেকে ছোড়া হয়েছিল এবং এটি সরাসরি নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত বাড়িতে আঘাত হেনেছে। এটি লেবানন থেকে ৭০ কিলোমিটার উড়ে গিয়ে নেতানিয়াহুর বাড়িতে আছড়ে পড়ে।
হামলার পর পর ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এছাড়া একই সময় তেলআবিবে সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে।
যে ড্রোনটি নেতানিয়াহুর বাড়িতে গিয়ে পড়েছে সেটির সঙ্গে আরও দুটি ড্রোন তেলআবিবে পাঠিয়েছিল হিজবুল্লাহ। তবে সেগুলো ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
হামলার সময় গিলিলত সামরিক ঘাঁটিতেও সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে। তবে সেনাবাহিনীর পরবর্তীতে জানায় ড্রোনগুলো এই এলাকায় আসেনি।
উপকূলীয় শহর সিজারিয়াতে নেতানিয়াহুর একটি অবকাশ যাপনের বাসভবন রয়েছে। আল জাজিরা জানায়, আজকের ড্রোন হামলায় এই বাসভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে নেতানিয়াহু বা তার পরিবারের কেউ ছিলেন না সেখানে।
হিজবুল্লাহ বা অন্য কোনো ইসরায়েল-বিরোধী গোষ্ঠী এখনো এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
গত বুধবার ইসরায়েলি হামলা হামাসের প্রধান নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহতের পর মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিশোধের হুমকি দেয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে তারই অংশ হিসেবে নেতানিয়াহুর বাড়িতে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে স্থল হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। এরপর থেকে ইসরায়েলের গভীরে ড্রোন ও রকেট হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহও।
এখন পর্যন্ত তারা যত হামলা চালিয়েছে সেগুলোর মধ্যে নেতানিয়াহুর বাড়িতে ড্রোন আছড়ে পড়ার বিষয়টিই সবচেয়ে বড়। যদিও নেতানিয়াহু ওই সময় বাড়িতে ছিলেন না বলে দাবি করা হচ্ছে, তবে তার বাড়িতে হামলার বিষয়টি হিজবুল্লাহর জন্য একটি ‘প্রতীকি’ জয় হিসেবে বলা যায়। কারণ নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত নেতানিয়াহুর বাড়িতেও নিজেদের ড্রোন নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে সশস্ত্র এ গোষ্ঠী।