নিজস্ব প্রতিবেদক :
সম্প্রতি রাজধানীর কাকরাইলে হামলায় আহত গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অথচ তাকে সুস্থ দেখানোর ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আহত নুরকে দেখতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ খান বলেন, নুরুল হক নুর এখনো পর্যন্ত পুরোপুরি সুস্থ হননি। তিনি যে অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, যে সমস্যা ও সংকট নিয়ে এসেছিলেন, এখনো সেই সমস্যা ও সংকট বিদ্যমান। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তিনি বলেন, আজ চিকিৎসকেরা নুরুল হক নুরের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। তখন আমি তাদের ডেকে দেখাই যে, নাক দিয়ে জমাট বাঁধা রক্ত পড়ছে। ডাক্তাররা সেটির ভিডিও করে নেন। যেটি বলা হচ্ছে, নুরুল হক নুর সুস্থ হওয়ার পথে। কিন্তু আসলেই না। নুরুল হকের এখনও মাড়িতে ব্যথা, চোখের নিচে রক্ত জমাট বেঁধে আছে। হাঁটতে গেলে মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছেন। নাকের হাড় পুরোপুরি ভেঙে গেছে, যে কারণে নাক বাঁকা হয়ে গেছে। তার মস্তিষ্ক পুরোপুরি কাজ করছে না। স্থির হয়ে বসতে ও শুতে পারছেন না। নুরুল হক নুর পুরোপুরি ট্রমাটাইজড। কেন বলা হলো নুরুল হক নুর সুস্থ। আমার মনে হয় নুরকে সুস্থ দেখানোর একটা পরিকল্পনা চলছে। এসব পরিকল্পনা করে কাজ হবে না।
রাশেদ খান বলেন, নুরুল হক নুর এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার নাক দিয়ে এখনো রক্ত পড়ছে। নাক আরো বাঁকা হয়ে গেছে। মাথায় আঘাত, হাঁটতে পারছেন না এবং তিনি মুখ হা-ও করতে পারছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হবে। পরিবেশ উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এরইমধ্যে নুরকে বিদেশ নেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আগে যেমন ছিল তেমনই রয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি (নুরল হক) এখন প্লেনে ওঠার মতো অবস্থাতে নেই। আমরা সিঙ্গাপুর নিয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য দাবি জানিয়েছি। আরেকটু সুস্থ হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাকে বিদেশ নেওয়া হতে পারে।
রাশেদ বলেন, আমরা সরকারকে জানিয়েছি এই হামলার বিচার হতে হবে। আমরা গতকালও বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে সরকারকে বলেছি, জাতীয় পার্টি ফ্যাসিবাদের দোসর। তাদের রাজনীতিকে আবারও পুনর্বাসিত করার পরিকল্পনা ছিল। সেই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে নুরুল হক নুরসহ আমরা কথা বলেছি, মুখোশ উন্মোচন করেছি। তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় নুরুল হক নুরসহ আমাদের শতাধিক নেতাকর্মীর ওপর আক্রমণ করে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাই, রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাই, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানাই। উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা নুরুল হক নুরকে হাসপাতালে দেখতে এসেছেন ও সরাসরি খোঁজ খবর নিয়েছেন, তাদের আমাদের দলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, আওয়ামি লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম যেমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনি জাতীয় পার্টিসহ ১৪দল সহ যারা ফ্যাসিবাদের দোষর তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
রাশেদ বলেন, হাসপাতালে নুরের ছয়দিন অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত হামলায় যারা জড়িত, ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও চিহ্নিত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটি এই সরকারের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।
গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, আমরা মনে করি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশনা ছাড়া এ ধরনের হামলার সুযোগ নেই। এ কারণে গণ অধিকার পরিষদ মনে করে এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রত্যাহার করতে হবে।