Dhaka সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নীলফামারীতে গৃহবধূ হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি :

নীলফামারীতে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মামলাটির দীর্ঘ শুনানী শেষে সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে সাজাপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এ দণ্ড দেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক জিয়াউদ্দিন মাহমুদ।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর কাঙ্গালুপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল করিমের ছেলে আনোয়ারুল হক ও একই গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ছামিউল ইসলাম ওরফে শুভ।

মামলার আরজি সুত্রে জানা যায়, গত ২০১৪ সালে ভুক্তভোগী মৃত আকলিমা খাতুনের সঙ্গে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হাবরা রসুলপুর এলাকার মো. আনিসুর রহমানের ছেলে মো. শরিফুল ইসলামের সঙ্গে ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী বিয়ে হয়। বিয়ের পর আকলিমার শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় প্রায়েই আকলিমা তার বাবার বাড়িতে চলে আসতো। পরবর্তীতে আকলিমার মা মেয়েকে বুঝিয়ে আবারও তার শ্বশুরবাড়ীতে পাঠিয়ে দিতেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০২০ সালের ১৫ আগষ্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আকলিমা আবারও তার শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ করে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। পরের দিন, অর্থাৎ ২০২০ সালের ২১ আগস্ট ভোর সাড়ে ৫টা হতে আকলিমাকে কোথাও খুঁজে পাননি তার মা মমতাজ বেগমসহ বাড়ির লোকজন।

২০২০ সালের ২২ আগষ্ট সকাল ৮টার দিকে সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর মৎস্য খামারের পেছনে একটি জমিতে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশে থেকে আকলিমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে সৈয়দপুর থানায় বাদী হয়ে মামলা করে মৃত আকলিমার মা মমতাজ বেগম।

মামলাটি দায়েরের পর থেকেই নীবিড়ভাবে তদন্তে কার্যক্রম শুরু করে সৈয়দপুর থানা পুলিশ। পুলিশী তদন্তে উঠে আসে যে, গৃহবধু আকলিমাকে গণধর্ষণের পর হত্যা করেছে সাজাপ্রাপ্তরা।

নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান খান রিনো জানান, ‘গৃহবধূ আকলিমা হত্যা মামলায় দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে মোট ১৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলাটি দীর্ঘ শুনানি শেষে সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দুই আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।’ এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেও তিনি জানান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মতলব সেতুতে ফাটল, ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

নীলফামারীতে গৃহবধূ হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশের সময় : ০৬:০৯:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি :

নীলফামারীতে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মামলাটির দীর্ঘ শুনানী শেষে সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে সাজাপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এ দণ্ড দেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক জিয়াউদ্দিন মাহমুদ।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর কাঙ্গালুপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল করিমের ছেলে আনোয়ারুল হক ও একই গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ছামিউল ইসলাম ওরফে শুভ।

মামলার আরজি সুত্রে জানা যায়, গত ২০১৪ সালে ভুক্তভোগী মৃত আকলিমা খাতুনের সঙ্গে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হাবরা রসুলপুর এলাকার মো. আনিসুর রহমানের ছেলে মো. শরিফুল ইসলামের সঙ্গে ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী বিয়ে হয়। বিয়ের পর আকলিমার শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় প্রায়েই আকলিমা তার বাবার বাড়িতে চলে আসতো। পরবর্তীতে আকলিমার মা মেয়েকে বুঝিয়ে আবারও তার শ্বশুরবাড়ীতে পাঠিয়ে দিতেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০২০ সালের ১৫ আগষ্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আকলিমা আবারও তার শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ করে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। পরের দিন, অর্থাৎ ২০২০ সালের ২১ আগস্ট ভোর সাড়ে ৫টা হতে আকলিমাকে কোথাও খুঁজে পাননি তার মা মমতাজ বেগমসহ বাড়ির লোকজন।

২০২০ সালের ২২ আগষ্ট সকাল ৮টার দিকে সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর মৎস্য খামারের পেছনে একটি জমিতে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশে থেকে আকলিমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে সৈয়দপুর থানায় বাদী হয়ে মামলা করে মৃত আকলিমার মা মমতাজ বেগম।

মামলাটি দায়েরের পর থেকেই নীবিড়ভাবে তদন্তে কার্যক্রম শুরু করে সৈয়দপুর থানা পুলিশ। পুলিশী তদন্তে উঠে আসে যে, গৃহবধু আকলিমাকে গণধর্ষণের পর হত্যা করেছে সাজাপ্রাপ্তরা।

নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান খান রিনো জানান, ‘গৃহবধূ আকলিমা হত্যা মামলায় দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে মোট ১৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলাটি দীর্ঘ শুনানি শেষে সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দুই আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।’ এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেও তিনি জানান।