Dhaka শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়ল পৌনে ৬ কোটি টাকার সেতু

‎পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি  : 

পিরোজপুরের নেছারাবাদে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা ও সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করায় একটি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না করেই ভেঙে ফেলতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় প্রায় ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির ত্রুটিপূর্ণ অংশের অপসারণ শুরু করা হয়েছে।

‎জানা যায়, পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার পূর্ব জলাবাড়ি খৃষ্টান পাড়া হতে মাদ্রা বাজার সড়কের ওপর একটি প্যাকেজে ২২ ও ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুইটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর মেসার্স ইফতি ইটিসিএল প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় পিরোজপুর এলজিইডি। যার চূক্তি মূল্য ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। এক বছর তথা ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ব্রিজ দুইটি নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিকাদার হিসেবে কাজ পান পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দীন মহারাজের ভাই মিরাজুল ইসলাম। কিন্তু ঠিকাদার মিরাজুল ইসলাম নিজে কাজ না করে একজন সাব কন্ট্রাক্টরকে দিয়ে কাজ করাচ্ছিলেন। তবে কাজের নিম্নমান এবং সিডিউল মেনে না করার কারণে স্থানীয়রা কাজে বাধা দেন। পরবর্তীতে অন্য আরও এক সাব কন্ট্রাক্টর গত বছরের শেষ দিকে গার্ডার ছাড়াই সেতুটির ছাদ ঢালাই দেয়। তবে এর কিছুদিন পরে ঢালাই দেওয়া অংশে ত্রুটি দেখা দেয়। তখন স্থানীয়দের আপত্তির মুখে এলজিইডি তদন্ত করে সেতুটির ঢালাই দেওয়া অংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই অনুযায়ী গত মঙ্গলবার সেতুটির ত্রুটিপূর্ণ অংশটির অপসারণ শুরু করে।

‎স্থানীয় বাসিন্দা দিপু মিস্ত্রী বলেন, এই ব্রিজটি চার বছর ধরে দফায় দফায় ঠিকাদার কাজের লোক বদলানো হচ্ছে। কাজ শুরুর দিকে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ব্রিজ হচ্ছিল। সিডিউল অনুযায়ী উপকরণ না দেওয়ায় ব্রিজের স্লাব ফেটে যায়। পরে কাজ ফেলে রেখে সরে যান ঠিকাদার। পুনরায় এটা সংস্কারের জন্য আসে। সংস্কার শুরুর পূর্বেই পুরো ব্রিজে ভেঙে খালের মধ্য পড়ে। যে কারণে এখানকার মানুষ এখন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং এলজিইডির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সেতু নির্মাণে অকল্পনীয় দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে।

নেছারাবাদ উপজেলা প্রকৌশলী মো. রায়সুল ইসলাম বলেন, কাজ নিয়ম অনুযায়ী না করার কারণে পুরো স্লাব (ছাদ) ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণকাজ করতে হবে। এছাড়া মূল ঠিকাদারকে পাওয়া না যাওয়ায় কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

‎উল্লেখ্য, পিরোজপুর এলজিইডি থেকে কাজ না করেই কয়েক হাজার কোটি আত্মসাৎ করে মিরাজুল ইসলাম এবং তার সহযোগীরা। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছে মিরাজুল ইসলাম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়ল পৌনে ৬ কোটি টাকার সেতু

প্রকাশের সময় : ১১:৫৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

‎পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি  : 

পিরোজপুরের নেছারাবাদে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা ও সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করায় একটি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না করেই ভেঙে ফেলতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় প্রায় ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির ত্রুটিপূর্ণ অংশের অপসারণ শুরু করা হয়েছে।

‎জানা যায়, পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার পূর্ব জলাবাড়ি খৃষ্টান পাড়া হতে মাদ্রা বাজার সড়কের ওপর একটি প্যাকেজে ২২ ও ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুইটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর মেসার্স ইফতি ইটিসিএল প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় পিরোজপুর এলজিইডি। যার চূক্তি মূল্য ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। এক বছর তথা ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ব্রিজ দুইটি নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিকাদার হিসেবে কাজ পান পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দীন মহারাজের ভাই মিরাজুল ইসলাম। কিন্তু ঠিকাদার মিরাজুল ইসলাম নিজে কাজ না করে একজন সাব কন্ট্রাক্টরকে দিয়ে কাজ করাচ্ছিলেন। তবে কাজের নিম্নমান এবং সিডিউল মেনে না করার কারণে স্থানীয়রা কাজে বাধা দেন। পরবর্তীতে অন্য আরও এক সাব কন্ট্রাক্টর গত বছরের শেষ দিকে গার্ডার ছাড়াই সেতুটির ছাদ ঢালাই দেয়। তবে এর কিছুদিন পরে ঢালাই দেওয়া অংশে ত্রুটি দেখা দেয়। তখন স্থানীয়দের আপত্তির মুখে এলজিইডি তদন্ত করে সেতুটির ঢালাই দেওয়া অংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই অনুযায়ী গত মঙ্গলবার সেতুটির ত্রুটিপূর্ণ অংশটির অপসারণ শুরু করে।

‎স্থানীয় বাসিন্দা দিপু মিস্ত্রী বলেন, এই ব্রিজটি চার বছর ধরে দফায় দফায় ঠিকাদার কাজের লোক বদলানো হচ্ছে। কাজ শুরুর দিকে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ব্রিজ হচ্ছিল। সিডিউল অনুযায়ী উপকরণ না দেওয়ায় ব্রিজের স্লাব ফেটে যায়। পরে কাজ ফেলে রেখে সরে যান ঠিকাদার। পুনরায় এটা সংস্কারের জন্য আসে। সংস্কার শুরুর পূর্বেই পুরো ব্রিজে ভেঙে খালের মধ্য পড়ে। যে কারণে এখানকার মানুষ এখন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং এলজিইডির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সেতু নির্মাণে অকল্পনীয় দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে।

নেছারাবাদ উপজেলা প্রকৌশলী মো. রায়সুল ইসলাম বলেন, কাজ নিয়ম অনুযায়ী না করার কারণে পুরো স্লাব (ছাদ) ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণকাজ করতে হবে। এছাড়া মূল ঠিকাদারকে পাওয়া না যাওয়ায় কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

‎উল্লেখ্য, পিরোজপুর এলজিইডি থেকে কাজ না করেই কয়েক হাজার কোটি আত্মসাৎ করে মিরাজুল ইসলাম এবং তার সহযোগীরা। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছে মিরাজুল ইসলাম।