Dhaka বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে : সেনাসদর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও স্বাভাবিক হবে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।

তিনি বলেন, দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সে রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে। আমরা আশা করি নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যেটুকু রূপরেখা প্রণয়ন করেছে সেটার ওপর ভিত্তি করে সেনাবাহিনী যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমাদের যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখন সীমিত আকারে চলছে তারমধ্য নির্বাচনের সময় আমাদের কী করণীয় সেটাকে ফোকাসে রেখেই প্রশিক্ষণ করছি।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের সঙ্গে একটি বিষয় সম্পর্কিত তা হলো শান্তিকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব হলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। আমরা বলে থাকি ‘উই ট্রেইন এজ উই ফাইট’।

গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বাইরে আছে উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত বা তার কিছুটা পরেও যদি বাইরে থাকতে হয় তাহলে আরও কিছুদিন বাইরে থাকতে হবে। এতে করে আমাদের প্রশিক্ষণ বিঘ্নিত হচ্ছে।

মাইনুর রহমান বলেন, এর পাশাপাশি যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গত ১৫ মাস চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে সেনাবাহিনী; এটা সহজ পরিস্থিতি ছিল না। এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশ প্রতিদিন ফেস করেনি। এজন্য আমরাও চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফেরত আসতে পারি।

গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহয়তায় নিয়জিত আছে এবং অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। এই ১৫ মাস সেনাবাহিনী অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে বলেও উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল সেনাবাহিনীর নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মিথ্যা, বানোয়াট ও অপপ্রচার চালাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, সেনাবাহিনী প্রধান এবং সেনাবাহিনীর সিনিয়র নেতৃত্বের প্রতি বাহিনীর প্রতিটি সদস্য অনুগত। সোশ্যাল মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে সেভাবে ব্যাবস্থা নেয়ার কিছু নেই। মিথ্যাকে সত্য দিয়েই প্রমাণ করতে হয়।

তিনি জানান, নির্বাচনের দায়িত্বে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার সৈন্য নিয়োগ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক অভিযানে সেনাবাহিনী ৮১ শতাংশ হারানো অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিমানবন্দর ও রেলস্টেশন থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিট শতাধিক ককটেল নিষ্ক্রিয় করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

গত ১৫ মাস ধরে সেনাবাহিনীর মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ করে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ৫ আগস্টের পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে একটু ফিরে তাকান। সেনাবাহিনী এই সময়ের মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালীর বন্যা, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সড়ক অবরোধসহ কত কিছু আমরা সামাল দিয়েছি। আমরা না থাকলে পরিস্থিতির অবনতি কতটা হতো, সেটি কেউ ধারণাও করতে পারবেন না।

ঢাকায় যেন কোনো অস্ত্রের চালান প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য অভিযান আরও জোরদার করা হবে বলেও তিনি জানান।

আবহাওয়া

মাইলস্টোন দুর্ঘটনার প্রতিবেদন জমা, ঢাকার বাইরে বিমান প্রশিক্ষণের সুপারিশ

নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে : সেনাসদর

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও স্বাভাবিক হবে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।

তিনি বলেন, দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সে রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে। আমরা আশা করি নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যেটুকু রূপরেখা প্রণয়ন করেছে সেটার ওপর ভিত্তি করে সেনাবাহিনী যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমাদের যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখন সীমিত আকারে চলছে তারমধ্য নির্বাচনের সময় আমাদের কী করণীয় সেটাকে ফোকাসে রেখেই প্রশিক্ষণ করছি।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের সঙ্গে একটি বিষয় সম্পর্কিত তা হলো শান্তিকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব হলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। আমরা বলে থাকি ‘উই ট্রেইন এজ উই ফাইট’।

গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বাইরে আছে উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত বা তার কিছুটা পরেও যদি বাইরে থাকতে হয় তাহলে আরও কিছুদিন বাইরে থাকতে হবে। এতে করে আমাদের প্রশিক্ষণ বিঘ্নিত হচ্ছে।

মাইনুর রহমান বলেন, এর পাশাপাশি যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গত ১৫ মাস চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে সেনাবাহিনী; এটা সহজ পরিস্থিতি ছিল না। এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশ প্রতিদিন ফেস করেনি। এজন্য আমরাও চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফেরত আসতে পারি।

গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহয়তায় নিয়জিত আছে এবং অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। এই ১৫ মাস সেনাবাহিনী অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে বলেও উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল সেনাবাহিনীর নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মিথ্যা, বানোয়াট ও অপপ্রচার চালাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, সেনাবাহিনী প্রধান এবং সেনাবাহিনীর সিনিয়র নেতৃত্বের প্রতি বাহিনীর প্রতিটি সদস্য অনুগত। সোশ্যাল মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে সেভাবে ব্যাবস্থা নেয়ার কিছু নেই। মিথ্যাকে সত্য দিয়েই প্রমাণ করতে হয়।

তিনি জানান, নির্বাচনের দায়িত্বে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার সৈন্য নিয়োগ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক অভিযানে সেনাবাহিনী ৮১ শতাংশ হারানো অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিমানবন্দর ও রেলস্টেশন থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিট শতাধিক ককটেল নিষ্ক্রিয় করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

গত ১৫ মাস ধরে সেনাবাহিনীর মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ করে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ৫ আগস্টের পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে একটু ফিরে তাকান। সেনাবাহিনী এই সময়ের মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালীর বন্যা, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সড়ক অবরোধসহ কত কিছু আমরা সামাল দিয়েছি। আমরা না থাকলে পরিস্থিতির অবনতি কতটা হতো, সেটি কেউ ধারণাও করতে পারবেন না।

ঢাকায় যেন কোনো অস্ত্রের চালান প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য অভিযান আরও জোরদার করা হবে বলেও তিনি জানান।