Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন পেছানোর হেলাফেলা চলবে না : আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গণতন্ত্রের পথ হলো নির্বাচন। এই নির্বাচন পেছানোর হেলাফেলা চলবে না। নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে টালবাহানা চলবে না। ঐকমত্যের ভিত্তিতে যদি সংস্কার না হয় তাহলে সেই সংস্কার দেশের জনগণ মানবে না কান খুলে শুনে রাখুন।

বুধবার (২৮ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আপনারা সংস্কার করার কে? সংস্কার করবে দেশের জনগণ। নির্বাচনের মাধ্যমে সেই সংস্কার করবে।

বিচার ও সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিচার ও সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানো যাবে না।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকে আমরা যে যায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, সেখান থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছি। আর সেই বার্তা হলো গণতন্ত্র, আর এই গণতন্ত্র হলো নির্বাচন। এখানে সংস্কার ও বিচারের কথা বলে নির্বাচন পেছানোর কোন কারণ নেই।

তিনি বলেন, বিএনপির আগে কেউ সংস্কারের কথা বলেনি। বেগম জিয়া অনেক আগেই ভিশন ২০৩০ দিয়েছিলেন। আর গত দুই বছর আগে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে তারেক রহমান প্রথমে ২৮ দফার সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, পরে যা ৩১ দফায় রূপ নেয়। তাই বলতে চাই এই সংস্কারের বাহানা করে নির্বাচন পেছানো যাবে না।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির চেয়ে বেশি ত্যাগ এ দেশে কেউ করেনি। তাই এদেশে যদি সংস্কার ও বিচার করতে হয় তাহলে সেটা বিএনপি করবে ক্ষমতায় এসে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজ তারুণ্যের এই সমাবেশে তরুণরা উপস্থিত হয়েছে তাদের ভোটের অধিকার চাইতে। তাই যত দ্রুত সম্ভব তাদের এই আশা পূরণের জন্য কার্যকারী ভূমিকা পালন করুন।

করিডোর, স্টারলিংক এসবের দরকার নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আজ সারা দেশের তরুণদের ঐক্যবদ্ধ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ যে তরুণেরা এই সমাবেশের মাধ্যমে যে বার্তা দিচ্ছেন, এতে আমি অনেক খুশি। কারণ এই বয়স যখন আমার ছিল তখন স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম। সে কথা আবার স্মরণ করিয়ে দিলেন আপনারা।

তিনি বলেন, বর্তমানে যে সরকার আছে, তাদের কাছ থেকে ৯ মাসে সবচেয়ে বেশি পেয়েছি অবজ্ঞা। বিএনপি গত ৯ মাসে শুধু অবজ্ঞা বাদে কিছু পায়নি।

মির্জা আব্বাস বলেন, আমি একটি কথা বলতে চাই, এই সরকারের বেশির ভাগ কিন্তু এদেশের নাগরিক নন। তারা আজ অনেক কিছু করার কথা বলছেন। আমি বলতে চাই, আপনাদের এসব করতে হবে না। করিডোরে কী সুবিধা বা অসুবিধা, তা আমাদের জানার দরকার নাই। আমি এর আগেও বলেছিলাম, সেন্টমার্টিন ও সাজেকে কী হচ্ছে তা যেন সরকার ক্লিয়ার করে।

তিনি বলেন, আজ যে করিডোর বা স্টারলিংক- এসবের কথা বলছে এই সরকার। এসব আমাদের দরকার নেই। আমরা কি স্টারলিংক ছাড়া এত দিন চলতে পারিনি। আজ এটা কেন লাগছে। কারণ মিয়ানমারের আর্মিদের জন্য যে এই করিডোরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, সে জন্যই এই স্টারলিংক, এ ছাড়া কিছু না।

তিনি আরও বলেন, গত ৯ মাসে এই সরকার কিছুই করতে পারেনি। আমরা যখনই নির্বাচনের কথা বলি তারা সংস্কার ও বিচারের কথা বলে। যে সংস্কার আপনারা ৯ মাসে করতে পারেননি তা আগামী ৯ বছর কেন, ৯০ বছরেও করতে পারবেন না। এই ৯ মাসে সরকারের মাথা থেকে পা পর্যন্ত পচন ধরে গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আজকে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ তারুণ্যের সমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আপনার (তারেক রহমান) নেতৃত্বে বাংলাদেশের তরুণরা জেগে উঠেছে। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার আমাদের দেশকে ধ্বংস করেছিল। দেশের তরুণ ছাত্রসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে। জুলাই আগস্টে আমাদের প্রথম বিজয় হয়েছে। আমাদের আন্দোলন কিন্তু থেমে যায়নি। আমরা বিজয়ের দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছি।

ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশকে গণতন্ত্রে রূপ দিতে হবে। অবিলম্বে দ্রুত নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে। জনগণ চায় গণতন্ত্র। আমরা সরকারকে সেজন্য সহযোগিতা করেছি। সহযোগিতা থাকবে। কিন্তু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। না হলে বিক্ষুব্ধ তরুণ সমাজের আন্দোলনে কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার পালাতে পারবে না।

তিনি বলেন, একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিএনপি ১৫ বছর ধরে জেল জুলুমের শিকার হয়েছে। এটা সরকারকে উপলদ্ধি করতে হবে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই, করেছি করবো। আওয়ামী লীগের সময় যেমন গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য যুদ্ধ করেছি, তেমনি রাজপথে থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করবো।

জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য দেন।

 

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নির্বাচন পেছানোর হেলাফেলা চলবে না : আমীর খসরু

প্রকাশের সময় : ০৫:৪৯:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গণতন্ত্রের পথ হলো নির্বাচন। এই নির্বাচন পেছানোর হেলাফেলা চলবে না। নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে টালবাহানা চলবে না। ঐকমত্যের ভিত্তিতে যদি সংস্কার না হয় তাহলে সেই সংস্কার দেশের জনগণ মানবে না কান খুলে শুনে রাখুন।

বুধবার (২৮ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আপনারা সংস্কার করার কে? সংস্কার করবে দেশের জনগণ। নির্বাচনের মাধ্যমে সেই সংস্কার করবে।

বিচার ও সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিচার ও সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানো যাবে না।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকে আমরা যে যায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, সেখান থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছি। আর সেই বার্তা হলো গণতন্ত্র, আর এই গণতন্ত্র হলো নির্বাচন। এখানে সংস্কার ও বিচারের কথা বলে নির্বাচন পেছানোর কোন কারণ নেই।

তিনি বলেন, বিএনপির আগে কেউ সংস্কারের কথা বলেনি। বেগম জিয়া অনেক আগেই ভিশন ২০৩০ দিয়েছিলেন। আর গত দুই বছর আগে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে তারেক রহমান প্রথমে ২৮ দফার সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, পরে যা ৩১ দফায় রূপ নেয়। তাই বলতে চাই এই সংস্কারের বাহানা করে নির্বাচন পেছানো যাবে না।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির চেয়ে বেশি ত্যাগ এ দেশে কেউ করেনি। তাই এদেশে যদি সংস্কার ও বিচার করতে হয় তাহলে সেটা বিএনপি করবে ক্ষমতায় এসে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজ তারুণ্যের এই সমাবেশে তরুণরা উপস্থিত হয়েছে তাদের ভোটের অধিকার চাইতে। তাই যত দ্রুত সম্ভব তাদের এই আশা পূরণের জন্য কার্যকারী ভূমিকা পালন করুন।

করিডোর, স্টারলিংক এসবের দরকার নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আজ সারা দেশের তরুণদের ঐক্যবদ্ধ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ যে তরুণেরা এই সমাবেশের মাধ্যমে যে বার্তা দিচ্ছেন, এতে আমি অনেক খুশি। কারণ এই বয়স যখন আমার ছিল তখন স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম। সে কথা আবার স্মরণ করিয়ে দিলেন আপনারা।

তিনি বলেন, বর্তমানে যে সরকার আছে, তাদের কাছ থেকে ৯ মাসে সবচেয়ে বেশি পেয়েছি অবজ্ঞা। বিএনপি গত ৯ মাসে শুধু অবজ্ঞা বাদে কিছু পায়নি।

মির্জা আব্বাস বলেন, আমি একটি কথা বলতে চাই, এই সরকারের বেশির ভাগ কিন্তু এদেশের নাগরিক নন। তারা আজ অনেক কিছু করার কথা বলছেন। আমি বলতে চাই, আপনাদের এসব করতে হবে না। করিডোরে কী সুবিধা বা অসুবিধা, তা আমাদের জানার দরকার নাই। আমি এর আগেও বলেছিলাম, সেন্টমার্টিন ও সাজেকে কী হচ্ছে তা যেন সরকার ক্লিয়ার করে।

তিনি বলেন, আজ যে করিডোর বা স্টারলিংক- এসবের কথা বলছে এই সরকার। এসব আমাদের দরকার নেই। আমরা কি স্টারলিংক ছাড়া এত দিন চলতে পারিনি। আজ এটা কেন লাগছে। কারণ মিয়ানমারের আর্মিদের জন্য যে এই করিডোরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, সে জন্যই এই স্টারলিংক, এ ছাড়া কিছু না।

তিনি আরও বলেন, গত ৯ মাসে এই সরকার কিছুই করতে পারেনি। আমরা যখনই নির্বাচনের কথা বলি তারা সংস্কার ও বিচারের কথা বলে। যে সংস্কার আপনারা ৯ মাসে করতে পারেননি তা আগামী ৯ বছর কেন, ৯০ বছরেও করতে পারবেন না। এই ৯ মাসে সরকারের মাথা থেকে পা পর্যন্ত পচন ধরে গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আজকে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ তারুণ্যের সমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আপনার (তারেক রহমান) নেতৃত্বে বাংলাদেশের তরুণরা জেগে উঠেছে। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার আমাদের দেশকে ধ্বংস করেছিল। দেশের তরুণ ছাত্রসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে। জুলাই আগস্টে আমাদের প্রথম বিজয় হয়েছে। আমাদের আন্দোলন কিন্তু থেমে যায়নি। আমরা বিজয়ের দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছি।

ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশকে গণতন্ত্রে রূপ দিতে হবে। অবিলম্বে দ্রুত নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে। জনগণ চায় গণতন্ত্র। আমরা সরকারকে সেজন্য সহযোগিতা করেছি। সহযোগিতা থাকবে। কিন্তু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। না হলে বিক্ষুব্ধ তরুণ সমাজের আন্দোলনে কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার পালাতে পারবে না।

তিনি বলেন, একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিএনপি ১৫ বছর ধরে জেল জুলুমের শিকার হয়েছে। এটা সরকারকে উপলদ্ধি করতে হবে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই, করেছি করবো। আওয়ামী লীগের সময় যেমন গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য যুদ্ধ করেছি, তেমনি রাজপথে থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করবো।

জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য দেন।