নিজস্ব প্রতিবেদক :
জনগণকে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ৭ তারিখে ভোট দিতে কেউ নির্বাচন কেন্দ্রে যাবেন না। যদি দেশপ্রেম থাকে, জনগণের প্রতি দায় থাকে তাহলে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন না। ভোট নামে এই তামাশাকে রুখে দিতে হবে।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একতরফা ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের গণসংযোগ ও সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘নিজেরা আর মামুরা খেলায়ও ৪৮টা মারামারি হয়েছে গেছে। একজনকে কুপিয়ে মারা হয়েছে। আরও কত মারামারি হয় কে জানে। নিজেরা নিজেরা নির্বাচনেও এই অবস্থা। বিরোধী দল যদি মাঠে থাকত তাহলে কী হতো? বিরোধী দল নির্বাচনে গেলে দেশ সন্ত্রাসের তাণ্ডবলীলায় পরিণত হতো।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ফ্লাইওভার, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, টানেল দেখিয়ে এই সরকার দেশের মানুষের চোখ ধাঁধিয়ে দিতে চায়। এই উন্নয়ন বাজেট থেকে যে লাখ লাখ কোটি টাকা তারা চুরি করেছে সেটার কোনও হিসাব নাই।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আগামীতে আরও শোচনীয় হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের শ্রমিকেরা কাপড় বানায়, জিনিসপত্র বানিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে। কিন্তু সেসব রপ্তানির টাকা পুরোটা দেশে আসে না। ব্যবসায়ী, নেতারা বিদেশে টাকার পাহাড় গড়েছে। ১০০ টাকায় ৬০ টাকা চুরি। ব্যাংকে আপনার আমার টাকা থাকে, সেই ব্যাংক থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে ফেলা হয়েছে। এই টাকা আর ফেরত পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই লুটপাট টিকিয়ে রাখতেই তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়।
গণতন্ত্র মঞ্চের এই নেতা বলেন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, ব্যাংক থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। আর খেলাপি ঋণ অন্তত ৩-৪ লাখ কোটি টাকা। এই ৯২ হাজার কোটি টাকা কখনও দেশে আসবে না, আসার সম্ভাবনাও নাই। লুটপাটতন্ত্র টিকিয়ে রাখার জন্য তারা (আওয়ামী লীগ) আবার ক্ষমতায় থাকতে চায়। লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনৈতিক সংকটে প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে।
সংবিধান অনুযায়ীও বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানের উপায় আছে জানিয়ে সাকি বলেন, এই দেশে সংবিধানের অধীনেও সংকট সমাধানের ব্যবস্থা আছে। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সংসদ ভেঙে দিলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা আছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে সাকি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব, ৭০ ভাগ মানুষ নৌকায় ভোট দিতে রেডি? তাহলে ৭০ ভাগ জনগণের ওপর ভরসা রাখেন। জনগণ যদি আপনাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে, আমরা সালাম দিয়ে আপনাদের সরকার মেনে নেব। কিন্তু সাহস নাই, জনগণকে উনারা ভয় পান। কারণ, জনগণ ব্যালটে সিল দেওয়ার ক্ষমতা পেলে এই আওয়ামী লীগ ভেসে যাবে।’
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন– বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।