নিজস্ব প্রতিবেদক :
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা ছাত্রদের প্রতিনিধি স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি জানান, তবে আমি নির্বাচন করবো। উপদেষ্টার পদে থেকে নির্বাচন করা উচিত না। কোন দল থেকে নির্বাচন করবো সেটা নিশ্চিত না।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার সময়কালে দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয় দুটির বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।
এ সময় তিনি বলেন, আমি নির্বাচন করব। তবে, কোথা থেকে করব ও কোন দল থেকে করব সেটা পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে। আমরা এখন একটা পর্যায়ে আছি, পরের পর্যায়ে সেটা সবার সামনে আসবে।
পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো কথা বলার এখতিয়ার আমার নেই। এটা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি নিজেও বলেছি, উপদেষ্টা পদে থেকে নির্বাচন করা উচিত না, যদিও আইনগত কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আমি যা বলেছি সেটার প্র্যাকটিস আমি নিজেও করব। এ বিষয়ে এর বেশি তথ্য আমার দেওয়ার সুযোগ নেই। সেসব বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হবে।
সংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন দল থেকে নির্বাচন করব এটি এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। গণঅভ্যুত্থানে আমার সহযোদ্ধারা যে দল গঠন করেছে, সেখানেই যাব- এটা ধরে নেওয়া ঠিক হবে না।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তার অধীনে থাকা মন্ত্রণালয় দুটির নানা উন্নয়ন ফিরিস্তি তুলে ধরেন। এ সময় ৩১টি প্রকল্প থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়ের কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আসিফ মাহমুদ জানান, গুলশানের একটি সড়কের নাম শহীদ ফেলানীর নামে করা হয়েছে। আবরার ফাহাদ স্মরণে পলাশীর মোড়ে স্মৃতি স্তম্ভ করা হয়েছে। শাপলা ও মোদিবিরোধী আন্দোলনে শহীদ পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাই শহীদদের কবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই ডিজাইনে প্রায় ৯৫ শতাংশ শহীদের কবর সংরক্ষণ শেষ হয়েছে। সুলতানী আমলের ঐতিহ্য ঈদ মিছিল ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এটা অব্যহত থাকবে।
যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অর্জন তুলে ধরে আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর ৫১টি ফেডারেশনের এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। দেশব্যাপী তারুণ্যের উৎসব আয়োজন করা হয়। যেখানে ২ কোটির বেশি মানুষ অংশ নেয়। দেশের সব উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫০টির কাজ শুরু হয়েছে। পূর্বাচলে ক্রিকেট ও ফুটবল স্টেডিয়াম বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের জায়গা বিসিবিকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা থেকে ভোট করবেন, সেটা আগেই জানিয়েছেন। তিনি গত ৯ নভেম্বর ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে ধানমন্ডিতে ভোটার হওয়ার আবেদন করেন। এরপর ঢাকা-১০ আসন (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা বা দলটি থেকে ভোট করতে চান বলেও খবর বের হয়। অবশ্য গত ৪ ডিসেম্বর বিএনপি দ্বিতীয় দফায় যে ৩৬টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে, তাতে ঢাকা-১০ আসনও রয়েছে।
এমতাবস্থায় আসিফ মাহমুদ স্বতন্ত্র নাকি কোনো দল থেকে ভোট করবেন; তার রাজনৈতিক ঠিকানা কী হবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনজন সরকারে জায়গা পান। এর মধ্যে নাহিদ ইসলাম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় পান। আসিফ মাহমুদ প্রথমে শ্রম উপদেষ্টা, পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
নিজস্ব প্রতিবেদক 



















