নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচনকে অস্থিতিশীল করার জন্য সব সময়ই একটি পক্ষ সচেষ্ট থাকে। সেসব যেন না হয়, এরজন্যই নির্বাচন কমিশন থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ‘বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতির ৫২ বছর’ পূর্তি উপলক্ষে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের সময় উৎসবমুখর পরিবেশে সৃষ্টি হয়। এর অন্তরালে অনেক সময় বিপত্তি ঘটানোর, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি কিংবা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য একটি পক্ষ অনেক পন্থা অবলম্বন করে। সে ধরনের কোনো ঘটনা যাতে কেউ না করতে পারে এ জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যারা আছেন তারা অত্যন্ত দক্ষ।
তিনি বলেন, প্রতিনিয়তই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা আটক করা হচ্ছে। আমরা সবসময়ই তাদের চিহ্নিত করে আসছি, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাদের বেশির ভাগই এখন জেলখানায়, না হয় দেশত্যাগ করেছে। বিদেশে যারা আত্মগোপন করেছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছি। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে আনাও হয়েছে।
বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া দেশ হলেও ৫২ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা থামছে না কেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সীমান্তে হত্যা অনেকাংশে কমে এসেছে। এটা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও দফায় দফায় বৈঠক চলছে।’
সীমান্তে অস্থিরতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্তে হত্যার সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। এ নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়েও মিটিং হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি, সীমান্তে নন লিথ্যাল অস্ত্র ব্যবহার করার।
নির্বাচন উপলক্ষে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধের বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তারা প্রশাসনিক পর্যায়ে কিছু পরিবর্তনের কথা বলেছেন। নিরাপত্তা বাহিনী সব সময়ই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কাজে রয়েছে। যাদের কাছে অস্ত্র রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যা কমেছে বলে স্বস্তি প্রকাশ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, সীমান্ত হত্যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। সীমান্ত হত্যা কমাতে বিএসএফ-বিজিবি নিয়মিত কাজ করছে। দ্রুতই তা শূন্যের কোঠায় নেমে যাবে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বহুমাত্রিক এবং এই সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কেবল দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্রই বদলে দেয়নি, সামগ্রিক সম্পর্কে পরিবর্তন এনেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদান প্রতিটি প্রজন্ম মনে রাখবে। এই সম্পর্ক অটুট থাকবে।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার শ্রী প্রণয় কুমার ভার্মা। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক।