Dhaka শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে বিজিবি প্রস্তুত: মহাপরিচালক

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা পুরো প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আমরা প্রশিক্ষণ নিয়েছি, সাজ সরঞ্জাম প্রস্তুত করেছি। নির্বাচনকে ঘিরে আমরা দায়িত্ব পালনে পুরো প্রস্তুত।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার কোটবাড়িতে বিজিবি-১০ সেক্টরের মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধিকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

একেএম নাজমুল হাসান বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিজিবির ওপর অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা হবে। সীমান্ত দিয়ে দেশে কোনো অবৈধ অস্ত্র বা সন্ত্রাসী যেন প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে আমাদের কঠোর দৃষ্টি রয়েছে। আমরা সব সময় সতর্ক আছি। এরই মধ্যে আমরা অনেক অস্ত্র উদ্ধার করেছি। দেশের প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকে বিজিবি।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আমরা অস্ত্র ও গোলাবারুদ ঠেকাতে কাজ করছি। বিশেষ করে মাদক নিয়ন্ত্রণে বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে। মাদক আমাদের আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। কুমিল্লা একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এই এলাকা দিয়ে মাদকের বড় চালান আসে। এখন রুখে দেওয়া হচ্ছে। সারা কুমিল্লার একটি এলাকায় এত মাদক এলে সারা দেশে কত পরিমাণ প্রবেশ করছে তা ধারণা করুন। কুমিল্লা থেকে রুট বদলে এখন অন্য রুটে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। তবুও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি নিয়ন্ত্রণের। বিজিবির মাদক নিয়ন্ত্রণে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।

একেএম নাজমুল হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এ বাহিনী কালের পরিক্রমায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সানুগ্রহ এবং পৃষ্ঠপোষকতায় ধারাবাহিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে আজ ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। একজন প্রশিক্ষিত সৈনিকের বন্ধু হচ্ছে তার ব্যক্তিগত অস্ত্র। কাজেই এই অস্ত্রের ওপর তার পারদর্শিতা থাকতে হবে। দেশপ্রেম এবং মনোবল নিয়ে প্রতিটি বিজিবি সদস্য দেশের প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকে। আর এই প্রস্তুতির একটি বড় অংশ হচ্ছে পেশাগতভাবে নিজেকে গড়ে তোলা। পেশাগত উৎকর্ষতার একটি অন্যতম উপাদান হচ্ছে অস্ত্র প্রশিক্ষণ এবং ফায়ারিং এ দক্ষতা অর্জন।

তিনি বলেন, আমাদের সীমান্ত হচ্ছে ৪ হাজার ৪ শত ২৭ কিলোমিটার। পেট্রোলিং এর টাইমে টহলে একটু ফাঁকা পেলেই মাদক চোরাকারবারীরা এই সুযোগকে কাজে লাগায়। স্থানীয়রা জড়িত না হলে মাদকের সরবরাহ অনেকাংশে কমে যাবে।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয়রা তাদের সন্তানকে বর্ডারে না পাঠিয়ে স্কুলে পাঠালে তারা মাদকের সাথে নিজেকে জড়াবে না। এবছর আমরা ১১১ কেজি ক্রিস্টাল আইস জব্দ করেছি। এটা বিজিবির জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমরা বাইরে থেকে আসা মাদকই নয়, দেশে উৎপাদন কার্যক্রমকেও আমরা রোধ করছি। আমরা শতভাগ ধরতে না পারলেও যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বিজিবির মহাপরিচালকের উপস্থিতিতে কুমিল্লা সীমান্তে এক বছরে জব্দ করা ৩৬ হাজার ২৩৬ বোতল ফেনসিডিল, ছয় হাজার ৯৩৮ কেজি গাঁজা, ৬৬ হাজার ৭৭০ বোতল বিদেশি মদ, চার হাজার ৭০২ ক্যান বিয়ার, ৭৩ হাজার ১৩৫ পিস ট্যাবলেট, পাঁচ হাজার ১৩ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৩২ হাজার ৩৫৮ পিস বিভিন্ন প্রকার ট্যাবলেট এবং এক লাখ এক হাজার ৮৯২ পিস টার্গেট/সেনেগ্রা ট্যাবলেট ধ্বংস করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- কুমিল্লা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. শরিফুল ইসলাম মেরাজ, সরাইল রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, কুমিল্লা-১০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নানসহ অন্যরা।

এ সময় বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সরাইল রিজিয়ন, কুমিল্লা সেক্টর ও ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তা, ফায়ারিং প্রতিযোগীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ব্রিজ থাকলেও নেই রাস্তা, ভোগান্তি চরমে

নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে বিজিবি প্রস্তুত: মহাপরিচালক

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৪:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা পুরো প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আমরা প্রশিক্ষণ নিয়েছি, সাজ সরঞ্জাম প্রস্তুত করেছি। নির্বাচনকে ঘিরে আমরা দায়িত্ব পালনে পুরো প্রস্তুত।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার কোটবাড়িতে বিজিবি-১০ সেক্টরের মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধিকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

একেএম নাজমুল হাসান বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিজিবির ওপর অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা হবে। সীমান্ত দিয়ে দেশে কোনো অবৈধ অস্ত্র বা সন্ত্রাসী যেন প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে আমাদের কঠোর দৃষ্টি রয়েছে। আমরা সব সময় সতর্ক আছি। এরই মধ্যে আমরা অনেক অস্ত্র উদ্ধার করেছি। দেশের প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকে বিজিবি।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আমরা অস্ত্র ও গোলাবারুদ ঠেকাতে কাজ করছি। বিশেষ করে মাদক নিয়ন্ত্রণে বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে। মাদক আমাদের আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। কুমিল্লা একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এই এলাকা দিয়ে মাদকের বড় চালান আসে। এখন রুখে দেওয়া হচ্ছে। সারা কুমিল্লার একটি এলাকায় এত মাদক এলে সারা দেশে কত পরিমাণ প্রবেশ করছে তা ধারণা করুন। কুমিল্লা থেকে রুট বদলে এখন অন্য রুটে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। তবুও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি নিয়ন্ত্রণের। বিজিবির মাদক নিয়ন্ত্রণে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।

একেএম নাজমুল হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এ বাহিনী কালের পরিক্রমায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সানুগ্রহ এবং পৃষ্ঠপোষকতায় ধারাবাহিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে আজ ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। একজন প্রশিক্ষিত সৈনিকের বন্ধু হচ্ছে তার ব্যক্তিগত অস্ত্র। কাজেই এই অস্ত্রের ওপর তার পারদর্শিতা থাকতে হবে। দেশপ্রেম এবং মনোবল নিয়ে প্রতিটি বিজিবি সদস্য দেশের প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকে। আর এই প্রস্তুতির একটি বড় অংশ হচ্ছে পেশাগতভাবে নিজেকে গড়ে তোলা। পেশাগত উৎকর্ষতার একটি অন্যতম উপাদান হচ্ছে অস্ত্র প্রশিক্ষণ এবং ফায়ারিং এ দক্ষতা অর্জন।

তিনি বলেন, আমাদের সীমান্ত হচ্ছে ৪ হাজার ৪ শত ২৭ কিলোমিটার। পেট্রোলিং এর টাইমে টহলে একটু ফাঁকা পেলেই মাদক চোরাকারবারীরা এই সুযোগকে কাজে লাগায়। স্থানীয়রা জড়িত না হলে মাদকের সরবরাহ অনেকাংশে কমে যাবে।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয়রা তাদের সন্তানকে বর্ডারে না পাঠিয়ে স্কুলে পাঠালে তারা মাদকের সাথে নিজেকে জড়াবে না। এবছর আমরা ১১১ কেজি ক্রিস্টাল আইস জব্দ করেছি। এটা বিজিবির জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমরা বাইরে থেকে আসা মাদকই নয়, দেশে উৎপাদন কার্যক্রমকেও আমরা রোধ করছি। আমরা শতভাগ ধরতে না পারলেও যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বিজিবির মহাপরিচালকের উপস্থিতিতে কুমিল্লা সীমান্তে এক বছরে জব্দ করা ৩৬ হাজার ২৩৬ বোতল ফেনসিডিল, ছয় হাজার ৯৩৮ কেজি গাঁজা, ৬৬ হাজার ৭৭০ বোতল বিদেশি মদ, চার হাজার ৭০২ ক্যান বিয়ার, ৭৩ হাজার ১৩৫ পিস ট্যাবলেট, পাঁচ হাজার ১৩ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৩২ হাজার ৩৫৮ পিস বিভিন্ন প্রকার ট্যাবলেট এবং এক লাখ এক হাজার ৮৯২ পিস টার্গেট/সেনেগ্রা ট্যাবলেট ধ্বংস করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- কুমিল্লা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. শরিফুল ইসলাম মেরাজ, সরাইল রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, কুমিল্লা-১০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নানসহ অন্যরা।

এ সময় বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সরাইল রিজিয়ন, কুমিল্লা সেক্টর ও ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তা, ফায়ারিং প্রতিযোগীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।