Dhaka শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই : প্রেস সচিব

মাগুরা জেলা প্রতিনিধি : 

গুম ও হত্যার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) মাগুরায় মাগুরা-ঢাকা রোড নবগঙ্গা পার্কে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচনের জন্য পুরো জাতি প্রস্তুত। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানও নির্বাচন নিয়ে এরমধ্যে কাজ করতে শুরু করেছে। বর্ষার মৌসুম শেষ হলে পাড়া-মহল্লায় নির্বাচনের হাওয়া লেগে যাবে।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে কি-না এমন প্রশ্নে প্রেসসচিব বলেন, গুম ও হত্যার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে ফিরিয়ে আনার জন্য দেশি-বিদেশি কোনো ধরনের চাপ নেই বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বার বার বলেছে- আওয়ামী লীগ আর নির্বাচন করতে পারবে না। দেশি বিদেশি কোনো ধরনের চাপ নেই আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে ফিরিয়ে আনার জন্য। বরং সবাই বলছেন, এত বড় খুন, এত হত্যাযজ্ঞ করেছে আওয়ামী লীগ। তারা জুলাই আগস্টে শত শত ছাত্র ও সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে। এত মানুষ হত্যার পরও আওয়ামী লীগ অনুতপ্ত হচ্ছে না।

শফিকুল আলম বলেন, আগে নির্বাচনে একটি আসনে একজন প্রার্থীকে দেখা যেত, আর কেউ নেই। এমন একজন প্রার্থী থাকা আসনের ক্ষেত্রে আরপিওতে সংশোধনী আনা হচ্ছে। আপনি না ভোটও দিতে পারবেন। এটা করার মূল কারণ, আপনারা জানেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে এমন হয়েছে। এই নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের এইচটি ইমামসহ যারা ছিলেন; তারা এমন একটা মেনুপুলেট করলেন। ১৫৪ আসনে ভোটে তারা এককভাবে প্রার্থী হয়ে জিতে গেলেন। নির্বাচন হওয়ার আগে ১৫৪ আসনে জিতে গেল। নির্বাচন হল না। আপনি ভোট দিতে পারলেন না। আওয়ামী লীগের সব প্রার্থী জিতে গেল। এটার জন্য মূল দায়িত্বে ছিলেন এইচটি ইমমাসহ আওয়ামী লীগের নেতারা। এ রকম নির্বাচন যেন বাংলাদেশে আর না হয়। বাংলাদেশের মানুষ যে তার ভোটটা প্রার্থীকে দিতে পারেন। যেন নির্বাচিত করতে পারে সেই জন্য বিধানটা করা হচ্ছে।

প্রেস সচিব বলেন, জুলাই সনদ সাইন হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে অনুষ্ঠানে সব দল একমত হয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। এ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ, পিসফুল ও ফ্রি ফেয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শফিকুল আলম বলেন, জুলাই শহীদদের যেন জাতি মনে রাখে, সে উদ্দেশেই এই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মাগুরার কিছু শহীদের কথা মানুষ ভুলে গেছে, কারণ তাদের স্মরণে এমন কোনো স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি হয়নি।

আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সব দল একমত এবং তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণে প্রস্তুত। এবার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।

আওয়ামী লীগ সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা টাকার বিনিময়ে সব নির্বাচন করেছে, ভোট কারচুপি করেছে। কিন্তু এবার এর কোনোটি ঘটবে না। জনগণ ভোটকেন্দ্রে যাবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে।

‘না ভোট’ প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, যদি কোথাও একজন প্রার্থী থাকে, তবে সেখানে না ভোট হবে। এটি আরপিওতে উল্লেখ আছে। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আর কারও নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই।

জুলাই সনদে কিছু রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষর না করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ, অধিকাংশ দলই একমত পোষণ করে স্বাক্ষর করেছে। যারা স্বাক্ষর করেনি, তাদের মধ্যে কেবল কিছু মতপার্থক্য আছে। এর বাইরে সব বিষয়ে তারা একমত।

জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শনকালে প্রেস সচিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদির, মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলীসহ স্থানীয়রা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই : প্রেস সচিব

প্রকাশের সময় : ০৪:৫৮:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

মাগুরা জেলা প্রতিনিধি : 

গুম ও হত্যার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) মাগুরায় মাগুরা-ঢাকা রোড নবগঙ্গা পার্কে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচনের জন্য পুরো জাতি প্রস্তুত। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানও নির্বাচন নিয়ে এরমধ্যে কাজ করতে শুরু করেছে। বর্ষার মৌসুম শেষ হলে পাড়া-মহল্লায় নির্বাচনের হাওয়া লেগে যাবে।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে কি-না এমন প্রশ্নে প্রেসসচিব বলেন, গুম ও হত্যার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে ফিরিয়ে আনার জন্য দেশি-বিদেশি কোনো ধরনের চাপ নেই বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বার বার বলেছে- আওয়ামী লীগ আর নির্বাচন করতে পারবে না। দেশি বিদেশি কোনো ধরনের চাপ নেই আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে ফিরিয়ে আনার জন্য। বরং সবাই বলছেন, এত বড় খুন, এত হত্যাযজ্ঞ করেছে আওয়ামী লীগ। তারা জুলাই আগস্টে শত শত ছাত্র ও সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে। এত মানুষ হত্যার পরও আওয়ামী লীগ অনুতপ্ত হচ্ছে না।

শফিকুল আলম বলেন, আগে নির্বাচনে একটি আসনে একজন প্রার্থীকে দেখা যেত, আর কেউ নেই। এমন একজন প্রার্থী থাকা আসনের ক্ষেত্রে আরপিওতে সংশোধনী আনা হচ্ছে। আপনি না ভোটও দিতে পারবেন। এটা করার মূল কারণ, আপনারা জানেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে এমন হয়েছে। এই নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের এইচটি ইমামসহ যারা ছিলেন; তারা এমন একটা মেনুপুলেট করলেন। ১৫৪ আসনে ভোটে তারা এককভাবে প্রার্থী হয়ে জিতে গেলেন। নির্বাচন হওয়ার আগে ১৫৪ আসনে জিতে গেল। নির্বাচন হল না। আপনি ভোট দিতে পারলেন না। আওয়ামী লীগের সব প্রার্থী জিতে গেল। এটার জন্য মূল দায়িত্বে ছিলেন এইচটি ইমমাসহ আওয়ামী লীগের নেতারা। এ রকম নির্বাচন যেন বাংলাদেশে আর না হয়। বাংলাদেশের মানুষ যে তার ভোটটা প্রার্থীকে দিতে পারেন। যেন নির্বাচিত করতে পারে সেই জন্য বিধানটা করা হচ্ছে।

প্রেস সচিব বলেন, জুলাই সনদ সাইন হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে অনুষ্ঠানে সব দল একমত হয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। এ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ, পিসফুল ও ফ্রি ফেয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শফিকুল আলম বলেন, জুলাই শহীদদের যেন জাতি মনে রাখে, সে উদ্দেশেই এই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মাগুরার কিছু শহীদের কথা মানুষ ভুলে গেছে, কারণ তাদের স্মরণে এমন কোনো স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি হয়নি।

আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সব দল একমত এবং তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণে প্রস্তুত। এবার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।

আওয়ামী লীগ সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা টাকার বিনিময়ে সব নির্বাচন করেছে, ভোট কারচুপি করেছে। কিন্তু এবার এর কোনোটি ঘটবে না। জনগণ ভোটকেন্দ্রে যাবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে।

‘না ভোট’ প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, যদি কোথাও একজন প্রার্থী থাকে, তবে সেখানে না ভোট হবে। এটি আরপিওতে উল্লেখ আছে। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আর কারও নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই।

জুলাই সনদে কিছু রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষর না করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ, অধিকাংশ দলই একমত পোষণ করে স্বাক্ষর করেছে। যারা স্বাক্ষর করেনি, তাদের মধ্যে কেবল কিছু মতপার্থক্য আছে। এর বাইরে সব বিষয়ে তারা একমত।

জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শনকালে প্রেস সচিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদির, মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলীসহ স্থানীয়রা।